ঐকমত্য কমিশন জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে: ফখরুল

দীর্ঘ এক বছরের আলোচনার পরও জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব একতরফা ও জবরদস্তিমূলক বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, কমিশন ও সরকার জাতির সঙ্গে প্রতারণা করেছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ তোলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “সংস্কার কমিশন ও ঐকমত্য কমিশনের আলোচনাগুলোকে অর্থহীন ও প্রহসনমূলক করে তোলা হয়েছে।” তার দাবি, সরকারের প্রস্তাবিত ‘বাস্তবায়ন আদেশ’ গণতন্ত্র, সংসদের সার্বভৌমত্ব ও আইনের শাসনের পরিপন্থী।

বিএনপি মহাসচিব জানান, বিএনপি ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রণীত ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এর চূড়ান্ত সংস্করণে অগোচরে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে। তিনি বলেন, শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরকারি ও বেসরকারি অফিসে টানানোর বিধান বাতিলের বিষয়ে প্রায় সব দল একমত হলেও সেটি চূড়ান্ত সনদে রাখা হয়নি। একইভাবে সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদের পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম তফসিল বাতিলের প্রস্তাবও বাদ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, “জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় আমরা ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে সনদের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করেছিলাম। কিন্তু চূড়ান্ত কপি আমাদের সামনে আনা হয়নি।”

ফখরুল অভিযোগ করেন, সরকার এখন ‘জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার) বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫’ নামে একটি আদেশ জারি করতে চায়, যা তাদের সাংবিধানিক এখতিয়ারের বাইরে। তার ভাষায়, সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘আদেশ’ আইনের সমান মর্যাদাসম্পন্ন এবং সেটি জারি করার ক্ষমতা একমাত্র রাষ্ট্রপতির। ফলে সরকার যদি নিজ উদ্যোগে এমন আদেশ জারি করে, তা অসাংবিধানিক হবে।

তিনি বলেন, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে ৪৮টি দফা গণভোটে তোলার পরিকল্পনা থাকলেও সেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর ভিন্নমত বা নোট অব ডিসেন্ট সংযুক্ত করা হয়নি। “এতে প্রমাণ হয়, এক বছরের আলোচনার সব প্রচেষ্টা অর্থহীন ছিল; এটা জাতির সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া কিছুই নয়,” মন্তব্য করেন ফখরুল।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সালাহউদ্দিন আহমদ ও নজরুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।