ঐকমত্য কমিশনের শেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত, সুপারিশ পেশ মঙ্গলবার

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন আগামী মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় সরকারকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করবে। এই সময় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে কমিশনের সমাপনী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ, সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া, এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে জোর দিয়েছেন, কমিশনের সব ডকুমেন্ট, আলোচনার ভিডিও, অডিও ও ছবি সংরক্ষণের ওপর। তিনি বলেন, “এগুলো মহামূল্যবান সম্পদ। জাতি হিসাবে আমরা কোন প্রেক্ষাপটে কী প্রক্রিয়ায় কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছালাম, তা ভবিষ্যতের জন্য সংরক্ষণ ও উন্মুক্ত রাখতে হবে। টেলিভিশনে লাইভ সম্প্রচারিত আলোচনাসহ সব ডকুমেন্ট, ছবি ও ভিডিও সংরক্ষণ করতে হবে। এগুলো হবে ইতিহাসের চিরজীবন্ত দলিল, যা গবেষক এবং প্রজন্মের পর প্রজন্মের জন্য কাজে লাগবে।”

তিনি বৈঠকে রাজনৈতিক দল, কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী, গবেষক এবং গণমাধ্যম কর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সমাপনী বৈঠকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

কমিশনের সহসভাপতি প্রফেসর আলী রীয়াজ বলেন, “জাতীয় ঐকমত্য কমিশন একটি স্থায়ী জবাবদিহিমূলক রাষ্ট্রের ভিত্তি স্থাপনের জন্য কাজ করেছে। রাজনৈতিক দল, আইন বিশেষজ্ঞ, বিচারপতি ও নাগরিক সমাজের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের সুপারিশ চূড়ান্ত করা হয়েছে।”

তিনি আরও বলেন, “২৪-এর জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের তিনটি মূল দায়িত্ব—বিচার, সংস্কার, নির্বাচন—এর একটি কাঠামোগত সংস্কার সুনিশ্চিত করা হলো। রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের ধৈর্য ও বিচক্ষণতার সঙ্গে সংলাপে সহযোগিতা করেছে।”

কমিশনের প্রধান ও সদস্যরা বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারের নিবিষ্টতা ও সাহসিকতা প্রয়োজন, যাতে গণঅভ্যুত্থানে জীবন উৎসর্গ করা মানুষের ত্যাগ বৃথা না যায়। কমিশনের মেয়াদ ৩১ অক্টোবর শেষ হচ্ছে, তবে প্রয়োজন হলে ব্যক্তিগতভাবে সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

কমিশন সদস্যরা আরও বলেছেন, কমিশনের বৈঠকগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য ও আন্তরিকতা দেখা গেছে, তা ভবিষ্যতেও প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য উদাহরণ হবে।

সুপারিশ হস্তান্তরের আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হবে।