তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফেরাতে দ্বিতীয় দিনের আপিল শুনানি চলছে
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:০৫ এম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে করা আপিলের শুনানির দ্বিতীয় দিন চলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে, যা ঘিরে নতুন করে আলোচনায় এসেছে ১৩তম সংশোধনী বাতিলের প্রশ্ন।
বুধবার, ২২ অক্টোবর সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে শুরু হয় শুনানি। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে সাত বিচারপতির আপিল বিভাগীয় পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই শুনানি পরিচালনা করছেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরছেন সিনিয়র আইনজীবী ড. শরীফ ভূঁইয়া। রাষ্ট্রের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেবেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক।
এর আগের দিন, মঙ্গলবার ২১ অক্টোবর, এই আপিলের প্রথম দফার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন গ্রহণ করে আপিলের অনুমতি দেয় আদালত গত ২৭ আগস্ট। এরপর এই বিষয়ে পৃথকভাবে আপিল করেন সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, এবং জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ মোট পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধানটি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ত্রয়োদশ সংশোধনীর মাধ্যমে। কিন্তু ১৯৯৮ সালে এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এম সলিম উল্লাহসহ আরও দুইজন হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর দীর্ঘ শুনানি শেষে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্ট সংশোধনীটিকে বৈধ ঘোষণা করে রিট খারিজ করে দেয়।
তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি পেয়ে ২০০৫ সালে আপিল করা হয়। সেই আপিলের ফলাফল আসে ২০১১ সালের ১০ মে, যখন আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে ত্রয়োদশ সংশোধনী অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়।
এই রায়ের ভিত্তিতে একই বছর ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় পঞ্চদশ সংশোধনী আইন, যার মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দেওয়া হয়। সরকার এ-সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করে ৩ জুলাই ২০১১।
তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বর্তমান সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দেন বদিউল আলম মজুমদার, তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া ও জাহরা রহমান।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ১৬ অক্টোবর এ বিষয়ে একটি পৃথক আবেদন জমা দেন। এছাড়া, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন।
এর পাশাপাশি, নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও এই রায়ের পুনর্বিবেচনার আবেদন জানান।