তিন দফা দাবিতে ৯ম দিনেও শহীদ মিনারে শিক্ষকদের অবস্থান, অনশনে অসুস্থ অনেকে


তিন দফা দাবিতে ৯ম দিনেও শহীদ মিনারে শিক্ষকদের অবস্থান, অনশনে অসুস্থ অনেকে

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে নয়দিন ধরে চলা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ও আমরণ অনশনে শারীরিকভাবে ভেঙে পড়ছেন বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সোমবার ২০ অক্টোবর সকাল থেকে তারা অনশন ও প্রতিবাদ সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিন দফা দাবির প্রতি সরকারের উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা আন্দোলনের তীব্রতা বাড়িয়েছেন। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাড়িভাড়া ভাতা ২০ শতাংশে উন্নীতকরণ, পূর্ণ উৎসব ভাতা প্রদান এবং শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ।

তীব্র গরম ও দীর্ঘ সময় না খেয়ে অবস্থানের ফলে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন আন্দোলনরত অনেক শিক্ষক। গাইবান্ধার আকবর আলি আব্দুল হাই স্কুলের শিক্ষক মোহাম্মদ আলী মন্ডল অচেতন হয়ে পড়লে দুপুর ১২টার দিকে তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। একইভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েন আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজিও।

আন্দোলন সমন্বয়কারীদের একজন ফয়েজ আহমেদ জানান, “এখন পর্যন্ত তীব্র গরমে অন্তত চারজন শিক্ষকের অসুস্থ হওয়ার খবর আমরা পেয়েছি।”

সরকারের সাম্প্রতিক ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির ঘোষণাকে শিক্ষকরা পুরোপুরি প্রত্যাখ্যান করেছেন। এই প্রস্তাবকে তারা “অবিচার” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের তিন দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

এই প্রসঙ্গে অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজীজি বলেন, "সরকারের ৫ শতাংশ বাড়িভাড়া বৃদ্ধির প্রজ্ঞাপন শিক্ষকদের সঙ্গে অবিচার। আমরা তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত মাঠ ছাড়ব না।"

সকালে শিক্ষক সমাবেশে অংশগ্রহণের জন্য সকাল ১০টার দিকে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়। দুপুরের পর শহীদ মিনারে শিক্ষকদের উপস্থিতি বেড়ে যায়। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে শত শত শিক্ষক কর্মসূচিতে যোগ দিতে ঢাকায় এসে হাজির হন।

চলমান আন্দোলনের অন্যতম ইস্যু শিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ। তার ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহ্বানে জোটের পক্ষ থেকে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। অধ্যক্ষ আজীজি বলেন, "শিক্ষা উপদেষ্টাকে বলে দিতে চাই, শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরবে না। হয়তো দাবি মেনে নেবেন, না হয় আপনাকে মন্ত্রণালয় ছাড়তে হবে।"

এই আন্দোলনের কারণে গত আটদিন ধরে সারাদেশে ৩০ হাজারের বেশি বেসরকারি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি ও অনশন চলবে বলেই জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×