আমি আ. লীগ করি না, কাজেই তাদের পুনর্বাসনের প্রশ্নই ওঠে না: এ কে আজাদ


আমি আ. লীগ করি না, কাজেই তাদের পুনর্বাসনের প্রশ্নই ওঠে না: এ কে আজাদ

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ কে আজাদ দাবি করেছেন, তার জনপ্রিয়তায় আতঙ্কিত হয়ে প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা চালিয়েছে। রোববার বিকেলে পরমানন্দপুরে গণসংযোগকালে তার গাড়িবহরে হামলার ঘটনার পরদিন তিনি এ অভিযোগ তোলেন।

সোমবার (২০ অক্টোবর) ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলি এলাকায় নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কে আজাদ বলেন, “তারা আমাকে টার্গেট করেছে, কারণ আমি সমাজসেবামূলক কাজ করি, এলাকায় কাজ করি, এলাকার মানুষের জন্য কাজ করি। এ কারণেই আমার জনপ্রিয়তা দিন দিন বাড়ছে। আমার জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে তারা এই হামলা চালিয়েছে।”

বিএনপি নেত্রী চৌধুরী নায়াব ইউসুফের মন্তব্য, “এ কে আজাদ আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করছেন এবং দলটিকে পুনর্বাসনের চেষ্টা করছেন”-এর কড়া জবাব দিয়েছেন তিনি। আজাদ বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ করি, আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসিত করার চেষ্টা করছি, উনি এটা প্রমাণ করুক। আমি আওয়ামী লীগের লোকদের পুনর্বাসনের চেষ্টা করছি, কিংবা আমি সন্ত্রাসীদের নিয়ে ঘুরি, এটা প্রমাণ করতে বলুন।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমি আওয়ামী লীগ করিনি। গত সংসদ নির্বাচনেও আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছি। আসলে তাঁরা পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করার জন্য আমার সম্পর্কে এ কথা বলছেন।”

বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এ কে আজাদ বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে আরও সজাগ ও তৎপর হওয়া উচিত। বর্তমানে কেউ মাঠে নেই। দুটি জোট নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমি স্বতন্ত্রভাবে কাজ করছি। কিন্তু আমার ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আরও তৎপর হবে, আমি সে প্রত্যাশা করি।”

তিনি আরও বলেন, “সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করেই ২০২৪ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আমি ফরিদপুর-৩ আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলাম। এবারও জনগণকে সঙ্গে নিয়েই সন্ত্রাসীদের মোকাবিলার প্রত্যয় ব্যক্ত করছি।”

গতকাল রোববার পরমানন্দপুরে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী চৌধুরী নায়াব ইউসুফের ছবি সম্বলিত লিফলেট বিতরণের সময় যুবদলের কিছু কর্মী এ কে আজাদের গাড়িবহরের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেন তিনি। এই ঘটনায় ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান আজাদ।

সোমবার সকালেও তিনি ফরিদপুর সদরের কৈজুরী ইউনিয়নের বিলনালিয়া বাজার এলাকায় গণসংযোগ করেন। এরপর বিলনালিয়া পূর্বপাড়ার আলী মোল্লার বাড়িতে এক উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে তিনি বলেন, “আমার নির্বাচন করার খুব ইচ্ছা নেই। হা-মীম গ্রুপ অনেক বড় প্রতিষ্ঠান। অনেক লোক সেখানে কাজ করেন, তাদের পেছনে সময় দিতে হয়। তবে যখন আমি গ্রামে আসি, মানুষের ইচ্ছা ও উৎসাহ দেখে আমার মন পাল্টে যায়।”

এ সময় তিনি জলাবদ্ধতার সমস্যার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “জলাবদ্ধতা দূর করা কোনো ব্যক্তির পক্ষে সম্ভব নয়। এর জন্য সরকারি উদ্যোগ প্রয়োজন। আমি যদি নির্বাচন করি ও নির্বাচিত হই, তাহলে আপনাদের সব সমস্যার সমাধানে কাজ করতে পারব।”

এই ঘটনার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় এক ভিডিও বার্তায় বিএনপি নেত্রী ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, “ফরিদপুরের মানুষ সব সময়ই শান্তিপ্রিয়। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু মহল ফরিদপুরকে অশান্ত করার চেষ্টা করছে।” তিনি দাবি করেন, “দেশের বিভিন্ন স্থানে উদ্বেগজনক ঘটনার পেছনে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্টতা আছে এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ফরিদপুরে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা চলছে।”

তিনি বলেন, “গতকাল রোববার ফরিদপুর সদরের একটি ইউনিয়নে আমাদের নেতা-কর্মীরা রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত ছিলেন। ঠিক সে সময় আওয়ামী লীগের কিছু চিহ্নিত কর্মী সেখানে যান। এতে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখেছি। সেখানে কোনো হামলা বা হতাহতের দৃশ্য নেই। সুতরাং একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।”

মিডিয়ার ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে নায়াব ইউসুফ বলেন, “একটি মিডিয়া চ্যানেল ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচার করছে। এমন প্রচার চালানো ফ্যাসিস্ট সরকারের একটি চর্চা। আমার রাজনৈতিক সুনাম নষ্টের এই প্রচেষ্টা জনগণ মেনে নেবে না। আমি জাতীয়তাবাদী রাজনীতি করি, জনগণের জন্য রাজনীতি করি এবং জনগণের ভালোবাসা ও সমর্থন নিয়েই রাজনীতি করি। আমি শান্তির রাজনীতি করি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা জানাই।”

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×