জুলাই সনদ বানচাল হলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে: অ্যাটর্নি জেনারেল
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৩:২২ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২৫

জুলাই সনদকে একটি ঐতিহাসিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেছেন, এটি অতীতের যেকোনো রাজনৈতিক চুক্তির চেয়ে অনেক বেশি স্বচ্ছ, সুসংগঠিত ও সুনির্দিষ্ট। এই সনদ আইনের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় দলিল হয়ে থাকবে। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়নে যদি ব্যর্থ হই, তাহলে আমরা আগামী প্রজন্মের কাছে ভীরু কাপুরুষ হিসেবে বিবেচিত হব।”
শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাজধানীর এফডিসিতে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন হলে গণতন্ত্র সুরক্ষিত হবে’ শীর্ষক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও তা মোকাবিলা করা সম্ভব। “এই সনদ নিয়ে অকারণ বিতর্ক অনর্থক। এটা কোনো ধর্মগ্রন্থ নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না,”— মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ৩৬ জুলাইয়ের পরাজিত শক্তির বয়ান গ্রহণ করে কেউ যদি এই সনদ বানচাল করতে চায়, তবে দেশ আবারও পিছিয়ে পড়বে। ’৭২-এর সংবিধানকে বারবার সংশোধন করে স্বৈরাচারী সরকারগুলো যেভাবে আইনের শাসন নষ্ট করেছে ও ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল, সেই ভুলের পুনরাবৃত্তি করা যাবে না।
আসাদুজ্জামান বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের স্বপ্ন পূরণ হলে জনগণ তাদের ভোটাধিকার ফিরে পাবে। জুলাই হত্যার বিচারও স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবে।”
তিনি জানান, অতীতের ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় সংঘটিত গুম-খুনের ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে মামলা চলছে, যুক্তি-তর্কও শেষ পর্যায়ে—এখন রায়ের অপেক্ষা। “জুলাই চেতনার অঙ্গীকারই এই বিচারের মূল ভিত্তি,” যোগ করেন তিনি।
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, জুলাই সনদ জাতির জন্য এক ঐতিহাসিক দলিল, যার বাস্তবায়নের ওপরই বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, “এই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনরায় মাথাচাড়া দিতে পারে, দেশে অস্থিতিশীলতা ও আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটবে।”
তার মতে, জুলাই সনদ জনগণের ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতিফলন। এর মাধ্যমে স্বৈরাচারী কাঠামোর অবসান ঘটবে এবং ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনের পথ আরও পরিষ্কার হবে। তবে তিনি মনে করেন, শুধু নির্বাচন নয়—সুশাসন ও জবাবদিহিতার মাধ্যমেই প্রকৃত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। “যে দল এই সনদ বাস্তবায়নে ব্যর্থ হবে, জনগণ ভবিষ্যতে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে,” বলেন কিরণ।
ছায়া সংসদ প্রতিযোগিতায় প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন, পরাজিত হয় বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি। প্রতিযোগিতার বিচারক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, ড. তাজুল ইসলাম চৌধুরী তুহিন, সাংবাদিক হাসান জাবেদ, মনিরুজ্জামান মিশন ও মাইদুর রহমান রুবেল। শেষে বিজয়ী ও অংশগ্রহণকারী দলগুলোকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।