পলাতক অভিযুক্ত ৮৭ পুলিশ কর্মকর্তা, ইন্টারপোল দিচ্ছে না রেড নোটিশে সাড়া
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০২:২৯ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫

সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই ওয়ার্ল্ড আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ অনেক পুলিশ কর্মকর্তা আড়ালে চলে গেছেন। ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত ৮৭ জন পুলিশ সদস্য পলাতক রয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। এদের মধ্যে আছেন ডিআইজি, এসপি ও বিভিন্ন পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের একটি শহরে সাবেক ডিআইজি হারুন অর রশিদের অবস্থান নিয়ে দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়, যা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সাবেক অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলামও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। সাবেক ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান রয়েছেন যুক্তরাজ্যে। প্রলয় কুমার জোয়ারদার ও সৈয়দ নুরুল ইসলাম আছেন ভারতে।
যদিও তাদের অবস্থান জানা গেছে, কিন্তু দেশে ফেরানো এখনো অনিশ্চিত। পুলিশ সদর দপ্তর জানিয়েছে, রেড নোটিশের জন্য আবেদন করা হলেও ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
পুলিশের এআইজি শাহাদাত হোসাইন বলেন, “আমাদের দেশে যে অপরাধ করেছে, তা তাদের দেশে হয়তো অপরাধ হিসেবে গণ্য নয়। কেউ কেউ রাজনৈতিক আশ্রয় (Political Asylum) পেয়ে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে তাদের মানবাধিকার বিষয়টি বিবেচনায় নেয়া হয়। এজন্য আমরা আবেদন করলেও রেড নোটিশ অনেক সময় জারি হয় না। ইন্টারপোল তখন সংশ্লিষ্ট দেশকে জানায়, কিন্তু পরে অন্যান্য আইনি ও রাজনৈতিক বিষয় কাজ করে। এজন্য রেড নোটিশের মাধ্যমে আসামি আনা অনেক ক্ষেত্রেই রাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।”
আইন অনুযায়ী, সরকারি কর্মকর্তা আত্মগোপনে গেলে বা কর্মস্থল ত্যাগ করলে তা শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়। আইনজীবীরা মনে করেন, এসব কর্মকর্তাকে দেশে ফেরাতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও কূটনৈতিক উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. সোহেল রানা বলেন, “তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। তারা অপরাধে জড়িত থাকলে অনুপস্থিতির সুযোগে পালিয়ে থাকতে পারে না। বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাক্ট ১৮৬১-এর ২৯ ধারায় তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান রয়েছে।”
এদিকে, ৭ আগস্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ডিআইজি থেকে পরিদর্শক পর্যায়ের ৪০ কর্মকর্তার পদক বাতিলের পাশাপাশি বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এছাড়া বিতর্কিত ভূমিকার কারণে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হয়েছে আরও ৫৫ জনকে।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র ও সাধারণ মানুষের ওপর গুলি চালানো এবং গুলির নির্দেশদাতাদের বিচার দাবি করে বিভিন্ন মহল। একই সঙ্গে প্রশাসনে চলমান সংস্কার প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণ করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।