আফগানিস্তানের ২০০ জনের বেশি সৈন্য ও যোদ্ধা নিহত
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:৪৫ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যকার সীমান্তে একরাতের ভয়াবহ সংঘর্ষের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন দুই শতাধিক আফগান যোদ্ধা ও ২৩ পাকিস্তানি সেনা। উভয় দেশের সেনাবাহিনীর পাল্টাপাল্টি দাবি এবং আন্তর্জাতিক উদ্বেগে চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে সীমান্ত অঞ্চলজুড়ে।
গত শনিবার গভীর রাতে সীমান্তজুড়ে শুরু হওয়া এই তীব্র সংঘর্ষের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী। আজ রোববার (১২ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে পাক সেনাবাহিনীর মিডিয়া শাখা জানায়, “আফগানিস্তান সীমান্তে রাতভর সংঘর্ষে আমাদের ২৩ সেনা নিহত, ২৯ জন আহত হয়েছেন।”
অন্যদিকে তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ দাবি করেন, এই সংঘর্ষে তাদের ৯ সেনা নিহত হয়েছেন, তবে পাল্টা হামলায় তারা পাকিস্তানের ৫৮ জন সেনাকে হত্যা করেছেন।
পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষে তালেবান ও সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর ২০০ জনেরও বেশি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। তারা বলেন, “বিশ্বাসযোগ্য গোয়েন্দা তথ্য এবং সংঘর্ষ-পরবর্তী ক্ষয়ক্ষতির হিসাব অনুযায়ী, তালেবান ও অন্যান্য যোদ্ধাদের মধ্যে ২০০ জনের বেশি নিহত হয়েছে।”
পাক সেনাবাহিনী আরও দাবি করেছে, তালেবানদের সামরিক কাঠামোতে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, “তালেবানদের অবকাঠামো, সেনা পোস্ট, ক্যাম্প, সদর দপ্তর এবং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে সহযোগী নেটওয়ার্কগুলো সীমান্ত ও কৌশলগত এলাকাগুলোতে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।”
ঘটনার প্রেক্ষিতে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী দুই দেশ সৌদি আরব ও কাতার দু’দেশকে উত্তেজনা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “পাকিস্তান এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে সৌদি আরব। আমরা উভয় পক্ষকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের পথ খুঁজে বের করার অনুরোধ জানাই। সৌদি মনে করে, এতে এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে এবং উত্তেজনা প্রশমিত হবে।”
তারা আরও জানায়, “শান্তি ও স্থিতিশীলতার আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সব প্রচেষ্টাকে সমর্থন জানায় সৌদি আরব। ভাতৃপ্রতীম দেশ আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের নিরাপত্তা এমন পথে হোক যেটি শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করবে, সেটিতে সৌদির অব্যাহত সমর্থন থাকবে।”
এদিকে কাতারও এক বিবৃতিতে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দিয়েছে। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, “উভয়পক্ষকে আমরা আলোচনা, কূটনীতি এবং সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়া এমন পথে দ্বন্দ্ব নিরসন করুন যেটি উত্তেজনা প্রশমন এবং আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।”
সৌদির মতো কাতারও আফগানিস্তান ও পাকিস্তানকে ভাতৃপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে বর্ণনা করে বলেছে, অঞ্চলটিতে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠায় কাতার প্রয়োজনীয় ভূমিকা রাখতে প্রস্তুত।
সূত্র: আল জাজিরা