পাকিস্তানের লাহোরে হামলা চালিয়েছে আফগান বিমান বাহিনী
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:১৬ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২৫

আঞ্চলিক উত্তেজনার নতুন মাত্রা যোগ করে আফগানিস্তানের বিমান বাহিনী পাকিস্তানের লাহোরে হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছে আফগান সংবাদমাধ্যম টোলো নিউজ। রবিবার, ১২ অক্টোবর তারিখে টেলিভিশন চ্যানেলটি একাধিক সূত্রের বরাতে এই খবর প্রকাশ করে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, আফগান-পাকিস্তান সীমান্ত এলাকায় তালেবান অবস্থানে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক হামলার জবাবে এ বিমান আক্রমণ চালায় আফগান বাহিনী। তবে তালেবান প্রশাসন এখনো পর্যন্ত হামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত কিছু জানায়নি।
টোলো নিউজ আরও জানিয়েছে, সীমান্তবর্তী এলাকায় চলমান সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ৫০ জনের বেশি পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে উঠেছে গত বৃহস্পতিবার থেকে, যখন পাকিস্তান আফগান সীমান্তের অভ্যন্তরে একটি বাজারে বিমান হামলা চালায় এবং পরে দাবি করে যে তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ টার্গেট করেছে। এরপর থেকে উভয় দেশই পাল্টাপাল্টি অভিযানের মাধ্যমে একে অপরের সেনাদের হত্যার অভিযোগ করছে।
রবিবার তালেবান সরকার এক বিবৃতিতে দাবি করেছে, তাদের বাহিনী পাকিস্তানের ৫৮ জন সেনাকে হত্যা করেছে। একই সঙ্গে তারা পাকিস্তানের ২৫টি সামরিক ঘাঁটি দখলের কথাও জানায়। তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেন, "আফগান বাহিনী সফলভাবে পাকিস্তানের ২৫টি সামরিক ঘাঁটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে।"
অন্যদিকে ইসলামাবাদ থেকেও এসেছে পাল্টা দাবি। পাকিস্তান সরকার জানিয়েছে, তারা কমপক্ষে ৫০ জন তালেবান যোদ্ধাকে হত্যা করেছে এবং তালেবান বাহিনী কয়েকটি অবস্থান ছেড়ে পিছু হটেছে। পাকিস্তানি বাহিনীর ভাষ্যমতে, খারচার ফোর্ট, কিলা আবদুল্লাহর লেওবুন্দ অঞ্চল, মানোজাবা ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তর এবং দুররানি ক্যাম্পসহ একাধিক ঘাঁটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
পাক-আফগান সীমান্ত অঞ্চল ঘিরে সহিংসতা নতুন কিছু নয়। ২০২৪ সালে পাকিস্তানে যত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে, তার ৯০ শতাংশই সংঘটিত হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া এবং বেলুচিস্তানে। এই দুটি প্রদেশই আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী। বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী, যারা নিজেদের পশতুন ও বালুচ জাতিগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার লড়াইয়ে নিয়োজিত দাবি করে, তারাই পাকিস্তানি সেনা এবং বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করে হামলা চালিয়ে আসছে। ইসলামাবাদ সরকারের দাবি, এসব হামলার পেছনে তালেবান সংশ্লিষ্টতা স্পষ্ট।
এদিকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকায় দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও উদ্বেগ বাড়ছে।