জাতীয় প্রেসক্লাবে পুলিশের মারধরে সাংবাদিক ও ইউটিউবার আহত
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৮:১৩ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৫

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে পুলিশের হাতে তিন সাংবাদিক ও একজন ইউটিউবার আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছেন নিউ ন্যাশনের শিমুল পারভেজ ও নোমান মোশাররফ, বাংলাভিশনের কেফায়েত শাকিল এবং ইউটিউবার আলম শরীফ। শিমুল ও নোমানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুর আড়াইটার দিকে প্রেসক্লাবের গেটের পাশে থাকা পুলিশ বক্সের সামনে এই ঘটনা ঘটেছে।
আহত কেফায়েত শাকিল বলেন, শিমুল পারভেজ ও নোমান মোটরসাইকেলে বের হচ্ছিলেন, তখন একটি প্রাইভেটকার হালকা ধাক্কা দেয়। এরপর তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে শিমুল পারভেজকে এক ব্যক্তি ছুরি দিয়ে আঘাত করার চেষ্টা করেন। দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। শাকিল জানান, “আমি রাস্তার অন্য পাশে যাচ্ছিলাম। ঝামেলা শুনে গাড়ির জানালা দিয়ে দেখছিলাম, শিমুলকে পুলিশ বক্সের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমি দৌড়ে এগিয়ে যাই, কিন্তু তখন শিমুলকে খুঁজে পাইনি। পরে বক্সের ভেতরে আরও একজনকে মারধর হতে দেখেছি। মোবাইল দিয়ে ভিডিও ধারনের চেষ্টা করি, কিন্তু পুলিশ আমার ওপর চড়াও হয়।”
তিনি বলেন, পাঁচ থেকে ছয়জন পুলিশ তাকে ধরে বক্সের ভিতরে টেনে নিয়ে যান, মোবাইল নিতে চাইলে ভিডিও মুছে ফেলতে বলেছিল। শাকিল বারবার বলেছিলেন, তিনি টিভি সাংবাদিক এবং ভিডিও ধারণ তার কাজ। তারপরও পুলিশ মারধর চালায়। এ সময় আলম নামে এক মাল্টিমিডিয়া সাংবাদিককেও পুলিশ মারধরের চেষ্টা করে। পরে উপস্থিত অন্যান্য সাংবাদিকদের প্রতিবাদে পুলিশ কিছুটা পিছু হটে।
সহকর্মী সাংবাদিক ইয়াসির তন্ময় জানান, প্রেসক্লাবের সামনের সড়ক ধরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিকে যাওয়ার সময় একটি মাইক্রোবাস সাংবাদিকদের মোটরসাইকেলের সামনে দাঁড়ায়। শিমুল পারভেজ গাড়ি পিছিয়ে নিতে বললেও চালক ও যাত্রীরা গালাগালি শুরু করে। একপর্যায়ে মাইক্রোবাসের চালক ধারালো অস্ত্র নিয়ে শিমুলকে আঘাত করার চেষ্টা করেন। তিনি হাত দিয়ে ঠেকান, কিন্তু রক্ত বের হয়। এরপর গাড়ি থেকে নেমে তারা শিমুল ও নোমানকে বেধড়ক মারধর করে।
রমনা ডিসি মাসুদ আলম বলেন, জয়নাল নামের এক পুলিশ সদস্যের নেতৃত্বে অন্যরা গিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন, কিন্তু এরপরও তিন সাংবাদিককে মারধর করা হয়। শিমুল পারভেজ জানান, “পুলিশ আমাদের মারধর করেছে, যদিও তারা আমার ওপর আঘাত করতে চাইছে এমন দৃশ্য দেখেছে।”
ঘটনার পর পুলিশের কয়েকজন দায়িত্বরত সদস্যকে প্রেসক্লাবের ভিতরে ডেকে আনা হয়। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আশ্বাস দেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সাংবাদিক শিমুল পারভেজকে কয়েকজন ধরে মারধর করছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আহত নোমানকেও বেধড়ক মারধর করে।