আ.লীগের মিছিলে গেলেই দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা!

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় হঠাৎ করে আয়োজিত আওয়ামী লীগের মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি জনকে ৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে; এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তাঁর দাবি, নিষিদ্ধ সংগঠনের ব্যানারে এসব মিছিল হচ্ছে এবং এর পেছনে বিপুল অর্থ ব্যয় করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বানচাল করার চেষ্টা চলছে।

সোমবার, ১৩ অক্টোবর, বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত ডিএমপির মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন ডিএমপি কমিশনার। সভায় তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের অনেক টাকা আছে। ওই টাকা খরচ করে তারা আগামী নির্বাচন ভণ্ডুল করতে চায়। ঝটিকা মিছিলে অংশ নিলেই কার্যক্রম নিষিদ্ধ দলের পক্ষ থেকে প্রত্যেককে দেওয়া হচ্ছে ৫ হাজার টাকা।”

কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী আরও জানান, এসব ঝটিকা মিছিলে অংশ নিয়ে আটক হওয়া কিছু নেতাকর্মী জিজ্ঞাসাবাদে আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। মিছিলগুলো আকস্মিক এবং পরিকল্পিত হলেও এর পেছনে সুস্পষ্ট উদ্দেশ্য রয়েছে বলে মত দেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে কমিশনার বলেন, এখন একটি "ক্রিটিক্যাল সময়" চলছে এবং এ ধরনের তৎপরতা রুখতে ২৪ ঘণ্টা সতর্ক পাহারা দিতে হবে। তার ভাষায়, “ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তারা নানা নির্দেশনা দিচ্ছে। তারা যাতে কোনোভাবেই সফল না হতে পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকতে হবে।”

তিনি আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে "ইতিহাসের সেরা নির্বাচন" হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেন, পুলিশ সদস্যদের শতভাগ নিরপেক্ষতা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন করতে হবে। কমিশনার সাফ জানিয়ে দেন, “মনে যাই থাকুক না কেন, যে দলকেই সমর্থন করি না কেন সেটা প্রকাশ করা যাবে না। নির্বাচনে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করলে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডিএমপি কমিশনারের ভাষ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি রাজধানীতে ঝটিকা মিছিলের সময় ২৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করার পর থেকে এ ধরনের কার্যক্রম কিছুটা থেমে গেলেও, বিদেশে পলাতক কিছু আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা এখনও সক্রিয়। তাদের লক্ষ্য হচ্ছে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করা।

সভাটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন ডিএমপির যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) ফারুক হোসেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (অ্যাডমিন) সরওয়ার (বর্তমানে অতিরিক্ত আইজি) এবং অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন নজরুল ইসলামসহ ডিএমপির শীর্ষ কর্মকর্তারা।