দিনের বেলায় কাজের মাঝে ঘুম আসে? দূর করবেন যেভাবে


দিনের বেলায় কাজের মাঝে ঘুম আসে? দূর করবেন যেভাবে

কাজের সময় হঠাৎ হাই ওঠা, চোখ ভারী হয়ে যাওয়া বা মনোযোগে ঘাটতি পড়া, এই অভিজ্ঞতা অনেকেরই হয়। অফিসে কাজের ফাঁকে চোখ খোলা রাখা কঠিন হয়ে যায়, ফলে ভুলও বাড়ে। সাধারণ ধারণা হচ্ছে, এটি রাতের ঘুম ঠিকমতো না হওয়ার ফল। তবে গবেষণায় দেখা গেছে, শুধু ঘুমই নয়, খাবার ও জীবনধারাও দিনের বেলায় এই ঝিমুনির বড় কারণ।

দিনের বেলায় ঘুম আসার প্রধান কারণ
১. খাবারের ধরন: অতিরিক্ত ভাজা, মিষ্টি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার রক্তে শর্করার ওঠানামা ঘটায়, যা শরীরে ক্লান্তি ডেকে আনে।
২. জীবনযাপন: অনিয়মিত ঘুম, শারীরিক পরিশ্রমের অভাব ও দীর্ঘ সময় বসে কাজ করার ফলে দিনের বেলায় ঝিমুনি বাড়ে।
৩. ডিহাইড্রেশন: শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে ক্লান্তি ও ঘুম ঘুম ভাব দেখা দেয়।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট খাবার দিনের সময় অলসতা বাড়িয়ে তোলে। যেমন—পাস্তা, পিৎজা, রুটি বা অন্যান্য পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার। এগুলো হঠাৎ করে শক্তি দিলেও রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত কমিয়ে ক্লান্তি তৈরি করে। মিষ্টি এবং সফট ড্রিংকসও একই ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। ভাজাপোড়া খাবার হজমে বেশি সময় নেয়, পেট ভারী করে তোলে এবং ঘুম বাড়ায়। অতিরিক্ত নোনতা খাবার বা আচার শরীরকে পানিশূন্য করে আরও ক্লান্ত করে তোলে।

ট্রিপটোফ্যানযুক্ত খাবার, যেমন: ওটস, বাদাম, টোফু, কলা ও অ্যাভোকাডো রাতে ঘুম ভালো করতে সহায়ক হলেও দিনে খেলে এগুলো ঘুম বাড়িয়ে দিতে পারে।

এই ঘুম ভাব শুধু কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয় না, গবেষণায় দেখা গেছে এটি দীর্ঘমেয়াদে হৃদরোগ, স্থূলতা এবং অকাল মৃত্যুর ঝুঁকির সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।

এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় হচ্ছে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনা। সুষম খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, বিশেষ করে ভাজা, মিষ্টি ও পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট কমাতে হবে। শরীরে পানির ঘাটতি এড়াতে দিনে অন্তত ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করা উচিত। হালকা হাঁটা বা ব্যায়াম রক্তসঞ্চালন বাড়াতে সাহায্য করে এবং দিনের ক্লান্তি কমায়। খাবারের মাঝে স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস, যেমন: ফল, দই বা বাদাম রাখা যেতে পারে, যা সজাগ থাকতে সহায়তা করে। পাশাপাশি রাতের ঘুম নিয়মিত করতে হবে এবং প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম নিশ্চিত করা জরুরি।

সবশেষে বলা যায়, দিনের বেলা ঘুম ঘুম ভাব অনেক সময়েই অবহেলা করা হয়, কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা গেলে শরীর ও মন দুটোই চাঙা থাকে। সঠিক খাদ্য, পর্যাপ্ত পানি, নিয়মিত ঘুম ও শারীরিক সচেতনতাই এ থেকে মুক্তির মূল চাবিকাঠি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×