থাইরয়েডে ভুগছেন? যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন
- লাইফস্টাইল ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৪:৩৫ পিএম, ২৭ আগস্ট ২০২৫

বর্তমানে অনেকেই থাইরয়েড সমস্যায় ভুগছেন, যা সময়মতো চিকিৎসা না করালে গুরুতর শারীরিক জটিলতা তৈরি করতে পারে। এমনকি ক্যানসারের ঝুঁকিও বাড়তে পারে। থাইরয়েডের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি হলেও খাদ্যাভ্যাসে সচেতন না হলে তা আরও বিপজ্জনক হতে পারে।
ডায়াবেটিসের মতোই থাইরয়েড সমস্যা এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারে দেখা যাচ্ছে। শরীরের গুরুত্বপূর্ণ থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরক্সিন হরমোন মাত্রার ভারসাম্য বিঘ্নিত হলেই শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। হরমোনের পরিমাণ বেশি বা কম হলে ওজন হ্রাস-বৃদ্ধি, অতিরিক্ত ক্লান্তি, এমনকি মানসিক অবসাদসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
এ কারণে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করা অত্যন্ত জরুরি। নিচে এমন কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলো, যেগুলো থাইরয়েড সমস্যা বাড়াতে পারে:
১. সয়াবিন
সয়াবিন ও এর তৈরি খাবারে থাকে ফাইটোইস্ট্রোজেন ও গোয়াইট্রোজেন, যা থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। এ ছাড়া থাইরয়েড নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতাও কমিয়ে দিতে পারে। ২০১৫ সালের জার্নাল অব ক্লিনিক্যাল এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, সয়াবিন থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা হ্রাস করতে এবং শরীরে আয়োডিনের ঘাটতি তৈরি করতে পারে।
সতর্কতা: সয়া দুধ ও সয়াবিন কম পরিমাণে খাওয়াই ভালো।
২. উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার
চর্বি বা ফ্যাট হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে। থাইরয়েড আক্রান্তদের ক্ষেত্রে উচ্চ ফ্যাটযুক্ত খাবার অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য হরমোনজনিত জটিলতা তৈরি করতে পারে।
সতর্কতা: স্বাস্থ্যকর ফ্যাটও পরিমিতভাবে গ্রহণ করা উচিত।
৩. প্রক্রিয়াজাত খাবার
এই ধরনের খাবারে সাধারণত অতিরিক্ত লবণ থাকে। বিশেষ করে হাইপো-থাইরয়েডিজম রোগীদের জন্য এটি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
সতর্কতা: প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এবং লবণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
৪. চিনি ও কৃত্রিম শর্করা
ডায়াবেটিস রোগীদের মতোই থাইরয়েড রোগীদের জন্যও অতিরিক্ত চিনি খাওয়া ক্ষতিকর।
২০১৮ সালের এন্ডোক্রিনোলজি অ্যান্ড মেটাবলিজম ক্লিনিকস অব নর্থ আমেরিকা-এর গবেষণায় বলা হয়, চিনি খাওয়ার প্রবণতা বিপাকক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটায়, যা হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে আরও খারাপ হতে পারে।
সতর্কতা: মিষ্টিজাতীয় খাবার কমাতে হবে।
৫. গ্লুটেন
গ্লুটেন অন্ত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং থাইরয়েড হরমোনের নিঃসরণে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। নিউট্রিয়েন্টস জার্নালের গবেষণা অনুযায়ী, এটি হ্যাশিমোটোর মতো কিছু অটোইমিউন থাইরয়েড রোগকে আরও তীব্র করে তুলতে পারে।
সতর্কতা: গ্লুটেনযুক্ত খাবার (যেমন - ময়দা, পাউরুটি ইত্যাদি) পরিহার করাই ভালো।
অতিরিক্ত সতর্কতার জন্য: স্ট্রবেরি, চিনাবাদাম, মিলেটজাতীয় খাবার ইত্যাদি খাওয়ার আগে রোগের মাত্রা অনুযায়ী পরামর্শ নেওয়া উচিত।
সঠিক ও পরিমিত খাবার গ্রহণ এবং নিয়মিত চিকিৎসার মাধ্যমে থাইরয়েড সমস্যাকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো যায়।