মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়াতে ৮ সহজ অভ্যাস
- লাইফস্টাইল ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:০২ এম, ২৬ আগস্ট ২০২৫

প্রায়ই কি মনে হয় কারও নাম বা কোনো জায়গার নাম মুখের কাছে এসেও মনে করতে পারছেন না? বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এমন পরিস্থিতি স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। অনেকেই মনে করেন বয়সের কারণে কেবল শারীরিক সক্ষমতাই নয়, চিন্তাশক্তি ও স্মৃতিশক্তিও কমতে থাকে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু নিয়মিত অভ্যাস ও মানসিক অনুশীলনের মাধ্যমে মস্তিষ্ককে আগের মতো সক্রিয় রাখা সম্ভব। নিচে রয়েছে এমনই কয়েকটি কৌশল—
১. নিয়মিত ব্যায়াম করুন
শরীরচর্চা শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্কের জন্যও উপকারী। ব্যায়ামের ফলে মস্তিষ্কে নতুন কোষ তৈরি হয় এবং নিউরনের মধ্যে যোগাযোগ বাড়ে। এতে মস্তিষ্ক আরও সক্রিয় হয়। বাইরে খোলা জায়গায় ব্যায়াম করলে শরীর ভিটামিন ডি শোষণ করতে পারে, যা অতিরিক্ত উপকার এনে দেয়। আর গ্রুপে ব্যায়াম বা শখের কাজে অংশ নিলে নতুন বন্ধু তৈরি হয় এবং সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার কারণে মানসিক স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।
২. হাঁটতে হাঁটতে মুখস্থ করুন
গবেষণায় দেখা গেছে, হাঁটার সময় কোনো বিষয় শেখা বা মুখস্থ করলে তা মস্তিষ্কে দীর্ঘদিন ধরে থাকে। অভিনেতারাও প্রায়ই এ কৌশল ব্যবহার করেন। ভবিষ্যতের বক্তৃতা বা প্রেজেন্টেশনের প্রস্তুতির জন্য হাঁটতে হাঁটতে অনুশীলন কার্যকর হতে পারে।
৩. সঠিক খাবার খান
মস্তিষ্কে শরীরের প্রায় ২০ শতাংশ গ্লুকোজ ব্যবহার হয়। তাই গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস শুধু শরীর নয়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতাও বাড়ায়। বাদাম, মাছ, বীজ, অ্যাভোকাডোসহ স্বাস্থ্যকর চর্বি মস্তিষ্কের কোষের জন্য অপরিহার্য। পাশাপাশি একা না খেয়ে অন্যদের সঙ্গে খেলে সামাজিক সংযোগও বাড়ে, যা মানসিকভাবে উপকারী।
৪. নিয়মিত বিরতি নিন
স্বল্পমাত্রার চাপ মস্তিষ্ককে সচল রাখলেও দীর্ঘমেয়াদে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ক্ষতিকর। তাই কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া জরুরি। বিরতি নেওয়ার মাধ্যমে মস্তিষ্কের সেই অংশ সক্রিয় হয়, যা কল্পনা শক্তি ও স্মৃতি ধরে রাখতে সাহায্য করে। ধ্যান বা মেডিটেশনও এ ক্ষেত্রে কার্যকর।
৫. নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন
মস্তিষ্ককে সক্রিয় রাখতে নতুন কিছু শেখা জরুরি। নতুন ভাষা শেখা, আর্ট ক্লাস করা বা অনলাইন গেমে অংশগ্রহণ—সবই মস্তিষ্কের নমনীয়তা বাড়ায়। এছাড়া প্রতিযোগিতামূলক সামাজিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকলে মস্তিষ্ক আরও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সক্ষম হয়।
৬. গান শুনুন
সঙ্গীত মস্তিষ্ককে অন্য যেকোনো কিছুর চেয়ে দ্রুত উদ্দীপিত করে। গান শোনা বা বাজানোর সময় মস্তিষ্কের প্রায় সব অংশ সক্রিয় হয়ে ওঠে। স্মৃতিশক্তি জোরদারে গান কার্যকর ভূমিকা রাখে। এমনকি ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত রোগীরাও অনেক সময় গান ভুলে যান না।
৭. পড়া এবং পর্যাপ্ত ঘুম
দিনে শেখা বিষয়গুলো ঘুমের সময় মস্তিষ্কে দৃঢ়ভাবে সংরক্ষিত হয়। তাই পড়াশোনার পর পর্যাপ্ত ঘুম অত্যন্ত জরুরি। ঘুমের আগে পুনরায় পড়া বিষয়গুলো মনে করলে তা দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপ নেয়। বিপরীতে, ঘুমের আগে নেতিবাচক স্মৃতি মনে করলে তা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। তাই শোবার আগে আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা মনে করা ভালো।
৮. ভালোভাবে জাগ্রত হন
যেভাবে ঘুম থেকে উঠছেন, সেটিও দিনের কার্যক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলে। অন্ধকার ঘরে ঘুমানো এবং ভোরের আলোয় ধীরে ধীরে জেগে ওঠা সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর। সূর্যের আলো মস্তিষ্ককে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণে সাহায্য করে, যা দিনের কর্মক্ষমতা নির্ধারণ করে। প্রয়োজনে আলোর মতো করে কাজ করে এমন অ্যালার্ম ব্যবহার করা যেতে পারে।