হঠাৎ জ্বর হলে করণীয় কী? এখনই জেনে নিন


হঠাৎ জ্বর হলে করণীয় কী? এখনই জেনে নিন

বর্তমানে আবহাওয়ার হঠাৎ পরিবর্তন, ধুলাবালি ও ভাইরাসের প্রভাবে অনেকেই হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। বিশেষ করে বর্ষা শেষে গরম-ঠান্ডা মিলিয়ে একধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে, যার ফলে শরীর সহজেই দুর্বল হয়ে পড়ছে। এই সময়ে হঠাৎ জ্বর দেখা দেওয়া খুব সাধারণ ঘটনা হলেও, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তা জটিল আকারও নিতে পারে। তাই সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়াই হচ্ছে সুস্থতার মূল চাবিকাঠি।

১. পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন:
জ্বর শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থার একটি স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। যখন শরীরে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হয়, তখন শরীর নিজে থেকে লড়াই শুরু করে—এরই ফলাফল হলো জ্বর। তাই জ্বর হলে প্রথম এবং প্রধান করণীয় হলো পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা দৌড়ঝাঁপ শরীরকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে। দিনভর বিশ্রাম এবং পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে এবং দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে।

২. শরীর হাইড্রেট রাখুন:
জ্বর হলে শরীর থেকে ঘামের মাধ্যমে অনেক পানি বেরিয়ে যায়, যার ফলে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই দিনে বারবার পানি পান করা জরুরি—even যদি পিপাসা না-ও লাগে। পাশাপাশি ডাবের পানি, লেবু-নুন-চিনি মিশিয়ে তৈরি শরবত, গরম স্যুপ, ওরস্যালাইন বা ইলেক্ট্রোলাইট জাতীয় পানীয় শরীরে স্যালাইন ব্যালেন্স ঠিক রাখে এবং দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে।

৩. হালকা ও সহজপাচ্য খাবার খান:
জ্বরের সময় হজমের ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায়। এই সময় ভারী, তেল-ঝালযুক্ত খাবার খেলে শরীর আরও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। বরং এমন খাবার বেছে নেওয়া উচিত, যা পুষ্টিকর এবং সহজে হজম হয়। যেমন—সেদ্ধ ভাত, ডাল, খিচুড়ি, সেদ্ধ সবজি, মৌসুমি ফল, ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার ইত্যাদি। খাওয়ার ইচ্ছা না থাকলেও ছোট ছোট অংশে দিনে কয়েকবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে শরীর প্রয়োজনীয় শক্তি পাবে।

৪. শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
জ্বর বেড়ে গেলে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে ভেজা কাপড় বা স্পঞ্জ দিয়ে শরীর মুছে দেওয়া যেতে পারে—বিশেষ করে কপাল, ঘাড়, হাত ও পায়ে। এতে শরীরের উষ্ণতা কিছুটা কমে আসে। তাপমাত্রা বেশি হলে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাওয়া যেতে পারে, তবে ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই ভালো।

৫. উপসর্গগুলোর প্রতি নজর দিন:
সাধারণ ভাইরাস জ্বর দুই-তিন দিনের মধ্যেই কমে যায়। তবে যদি জ্বরের সঙ্গে তীব্র মাথাব্যথা, র‍্যাশ, চোখে ব্যথা, বমি, ডায়রিয়া বা ঘনঘন ঠান্ডা-গরম লাগা দেখা যায়—তবে তা উপেক্ষা করা উচিত নয়। দীর্ঘস্থায়ী জ্বর অনেক সময় ডেঙ্গু, টাইফয়েড, ভাইরাল হেপাটাইটিস বা অন্য সংক্রমণের লক্ষণও হতে পারে। তাই উপসর্গ যদি তীব্র হয় বা তিন দিনের বেশি থাকে, দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

৬. বাড়িতে প্রাথমিক প্রস্তুতি রাখুন:
জ্বর যেকোনো সময় আসতে পারে, তাই ঘরে কয়েকটি প্রাথমিক সরঞ্জাম রাখা দরকার। যেমন—থার্মোমিটার, প্যারাসিটামল, ওরস্যালাইন, টিস্যু, হালকা স্যুপ বা ইন্সট্যান্ট খাবার। এতে হঠাৎ অসুস্থ হলেও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। তবে মনে রাখতে হবে, অ্যান্টিবায়োটিক বা অন্যান্য শক্তিশালী ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কখনোই খাওয়া উচিত নয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×