ঘুম পাড়ানো ফল


ffr6r677i676fiyti.jpg

রাতে ঘুম না হলে শরীর ও মন দুটোই প্রভাবিত হয়। অনেকেই ঘুমানোর আগে ধ্যান, ডায়েরি লেখা বা নানান কৌশল অবলম্বন করেন।

তবে অনেকেই জানেন না, ঘুমের সঙ্গে খাবারের সম্পর্কটাও বেশ ঘনিষ্ঠ। বিশেষজ্ঞদের মতে, কিছু নির্দিষ্ট ফল আছে যেগুলো নিয়মিত খেলে ঘুমের গুণগত মান ভালো হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক পুষ্টিবিদ জেনিফার প্যালিয়ান এবং রবিন ব্যারি কাইডেন রিয়েলসিম্পল ডটকম-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মত দেন, “কিছু ফল ঘুম বাড়াতে সাহায্য করে। কারণ এগুলোতে রয়েছে মেলাটোনিন, সেরোটোনিন, ট্রিপটোফ্যান, এবং ম্যাগনেসিয়াম। যেগুলো ঘুম নিয়ন্ত্রণ করে।”

আনারস: আনারসে মেলাটোনিন, সেরোটোনিন এবং ট্রিপটোফ্যান রয়েছে। একটি গবেষণায় দেখা যায়, এক কেজি আনারসের রস শরীরে মেলাটোনিনের মাত্রা বাড়াতে পারে।

জেনিফার বলেন, “তাজা আনারসও, রসের মতোই কার্যকর, কারণ এতে একই রকম উপাদান থাকে।”

এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো অক্সিডেটিভ স্ট্রেস বা চাপ কমিয়ে ঘুমে সহায়তা করে।

কলা: কলা ঘুমের জন্য খুব উপকারী। কারণ এতে মেলাটোনিন এবং ট্রিপটোফ্যান দুটাই রয়েছে। দুটি কলা খেলে ঘুম ভালো হতে পারে বলে গবেষণায় দেখা গেছে।

কলায় থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো প্রদাহ কমায় এবং মস্তিষ্ককে শান্ত করে। যার ফলে সহজে ঘুম আসে।

আঙ্গুর: আঙ্গুর প্রাকৃতিকভাবে মেলাটোনিন সমৃদ্ধ। আর এতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা চাপ এবং প্রদাহ কমায়।

 

রবিন কাইডেন বলেন, “আঙ্গুরে আছে প্রচুর পানি এবং আঁশ, যা হজমে সাহায্য করে এবং শরীরকে আরাম দেয়।”

লাল বা বেগুনি আঙ্গুরে মেলাটোনিনের পরিমাণ বেশি থাকে, তাই এগুলো বেছে নেওয়াই ভালো। এক কাপ আঙ্গুর রাতে খাওয়া যেতে পারে।

স্ট্রবেরি: স্ট্রবেরিতে অল্প পরিমাণে মেলাটোনিন এবং অনেক ভিটামিন সি থাকে। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হজমে সহায়তা করে।

রবিন বলেন, “যখন শরীর ভালো থাকে, তখন ঘুমও ভালো হয়।”

এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো দেহকে স্বস্তি দেয়।

কমলা: কমলা সাধারণত সকালের ফল হলেও রাতেও খাওয়া যেতে পারে। এতে থাকা ভিটামিন সি মানসিক চাপের হরমোন কর্টিসল কমিয়ে শরীরকে শান্ত করে।

এছাড়াও এতে ভিটামিন বি-সিক্স রয়েছে, যা ট্রিপটোফ্যানকে সেরোটোনিনে এবং পরে মেলাটোনিনে রূপান্তর করতে সাহায্য করে।

চেরি: বিন কাইডেন বিশেষভাবে লাল টকধর্মী চেরি খাওয়ার পরামর্শ দেন, কারণ এতে মেলাটোনিন, ট্রিপটোফ্যান এবং অ্যান্থোসায়ানিনস থাকে, যা পেশি শিথিল করে এবং রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।

তিনি বলেন, “এই উপাদানগুলো দেহকে শান্ত করে ও ঘুমের জন্য প্রস্তুত করে।”

রাতে আট থেকে ১২ আউন্স টার্ট চেরির রস বা দুয়েক আউন্স কনসেন্ট্রেট জুস পান করা যেতে পারে।

কিউই: কিউইতে প্রচুর মেলাটোনিন এবং সেরোটোনিন রয়েছে, যা ঘুমাতে সাহায্য করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে, রাতে ঘুমানোর এক ঘণ্টা আগে যদি দুটি মাঝারি আকারের কিউই খাওয়া হয়, তাহলে ঘুম ভালো হয়।

সেরোটোনিন মন শান্ত করে, শরীরের তাপমাত্রা এবং ঘুম-জাগরণের চক্র নিয়ন্ত্রণ করে।

জেনিফার প্যালিয়ান জানান, “কিউইতে ভিটামিন সি, ফলেইট এবং বি ভিটামিন রয়েছে, যা স্নায়ুর ভারসাম্য রক্ষা করে ও ঘুমে সহায়তা করে।”

অ্যাভোকাডো: অ্যাভোকাডোতে ম্যাগনেসিয়াম থাকে, যা শরীরে মেলাটোনিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং (জিএবিএ) নামক ‘নিউরোকেমিকেল’কে নিয়ন্ত্রণ করে, যা ঘুমের জন্য অত্যন্ত জরুরি।

জেনিফার জানান, “ঘুমের সহায়তায় একটা পুরো অ্যাভোকাডো খাওয়া যেতে পারে।”

এতে থাকা আঁশ হজমে সহায়তা করে, যা ঘুমের মান বাড়াতে পারে।

ঘুমের জন্য যেভাবে ফল খাওয়া উচিত

রবিন কাইডেন পরামর্শ দেন, ফলের সঙ্গে কিছু চর্বি বা প্রোটিন যুক্ত করলে রক্তে চিনির মাত্রা স্থির থাকে এবং ঘুমের সহায়তা করে।

যেমন: বাদাম বা কাঠবাদাম, দুধ বা দইয়ের সঙ্গে ফল খাওয়া যেতে পারে। তবে ঘুমানোর ঠিক আগে না খেয়ে অন্তত তিন ঘণ্টা আগে খাওয়াই ভালো, যাতে হজম ভালো হয় এবং শরীর আরাম পায়।

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×