গাজার ‘তাওহীদ মসজিদে’ দীর্ঘ সময় পর পুনরায় আজান ও জামাতে নামাজ অনুষ্ঠিত


গাজার ‘তাওহীদ মসজিদে’ দীর্ঘ সময় পর পুনরায় আজান ও জামাতে নামাজ অনুষ্ঠিত

দীর্ঘ যুদ্ধের বিভীষিকার পর গাজা সিটির শাতি শরণার্থী শিবিরে ফিরে এসেছে ধর্মীয় জীবনের ছায়া। পশ্চিমাঞ্চলের তাওহীদ মসজিদে শুক্রবার আবারও ধ্বনিত হয়েছে আজান, আর এতে নতুন করে প্রাণ ফিরে পেয়েছে এলাকার মানুষ।

মসজিদটি কয়েক মাস ধরে বন্ধ ছিল। ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজা জুড়ে ধ্বংসস্তূপ ছড়িয়ে পড়লেও এই মসজিদ ছিল বিরল ব্যতিক্রম; হামলার মধ্যে লক্ষ্যবস্তু না হওয়া একমাত্র উপাসনালয়। শরণার্থী শিবিরে এই মসজিদ শুধু নামাজের স্থান নয়, বরং প্রতিরোধ আর স্থিরতার প্রতীক হিসেবেও বিবেচিত।

শুক্রবার দুপুর ১২টায় যুদ্ধবিরতির পর প্রথমবারের মতো মসজিদের মিনারে বেজে ওঠে আজান। সেই মুহূর্তে অনেকে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এক স্থানীয় বাসিন্দা সেজদা করে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, "এই মসজিদ আমার ঘরের মতো ছিল, যুদ্ধ শুরুর পর আমি অনেক দূরে চলে গিয়েছিলাম। আমি কল্পনাও করতে পারিনি যে এত কঠিন যুদ্ধের পরেও মসজিদটি অক্ষত থাকবে।"

অন্য এক মুসল্লির চোখে, মসজিদটির পুনরায় খোলা হওয়া যেন আশার নতুন সূচনা। তিনি বলেন, "আল্লাহর ইচ্ছায় কঠিন পরিস্থিতিতেও এই মসজিদ খোলা হলো, যা গাজার মানুষের উপর দু’বছরের কষ্ট কিছুটা হালকা করবে।"

মুয়াজ্জিন জানান, যুদ্ধবিরতির পর মসজিদটি পরিষ্কার করে আবার চালু করা হয়েছে, যেন মানুষ শান্তিতে ইবাদত করতে পারেন। তাঁর ভাষায়, "আল্লাহর রহমত যে এই মসজিদ এখনো সুরক্ষিত। মানুষ যেন নির্বিঘ্নে নামাজ আদায় ও ইবাদত করতে পারে তাই যুদ্ধবিরতির পর আমরা মসজিদটি পুনরায় পরিষ্কার করেছি।"

গাজার এক কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী ইসরায়েলি বাহিনী মসজিদের চারপাশে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রেখেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, এই মসজিদের দরজা আবার খুলে যাওয়াটা কেবল নামাজের সুযোগ নয়, বরং দুই বছরের সহিংসতায় হারিয়ে যাওয়া বিশ্বাস ও জীবনীশক্তির প্রতীক হয়ে উঠেছে।

সূত্র: আল জাজিরা

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×