গ্রামীণ ব্যাংক প্রমাণ করেছে, দরিদ্র নারীরাও হতে পারে সফল উদ্যোক্তা: ড. ইউনূস
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১২:৫২ এম, ১৪ অক্টোবর ২০২৫

গ্রামীণ ব্যাংক দরিদ্র নারীদের সফল উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) ইতালির রোমে বিশ্ব খাদ্য ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, গ্রামীণ দানোন শিশুখাদ্য অপুষ্টির বিরুদ্ধে লড়াই করছে এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা সামাজিক ব্যবসা সমাজ ও মানুষকে ক্ষমতায়ন করছে।
ড. ইউনূস বলেন, এখন সময় এসেছে তরুণ, নারী, কৃষক, কৃষিভিত্তিক উদ্যোক্তা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবকদের জন্য একটি সামাজিক ব্যবসা তহবিল গড়ে তোলার। এজন্য প্রয়োজন উপযুক্ত আইনি ও আর্থিক কাঠামো, যাতে তারা বাধাবিহীনভাবে এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, “তরুণদের নেতৃত্বে জনগণের অংশগ্রহণে একটি সফল আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল বাংলাদেশে। বর্তমানে সেই তরুণরাই দেশের প্রতিষ্ঠানগুলোর পুনর্গঠনে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করা হবে, যা হবে ন্যায় ও জনগণের ক্ষমতার প্রতি অঙ্গীকারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ।”
খাদ্য নিরাপত্তা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের আয়তন ইতালির অর্ধেক হলেও সরকার ১৭ কোটি মানুষের খাদ্য নিশ্চিত করছে এবং একইসাথে মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকেও আশ্রয় ও খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রধান খাদ্য চালে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। এখন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধান, শাকসবজি ও মিঠাপানির মাছ উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। কৃষকরা জমির ফসল ফলানোর হার ২১৪ শতাংশে উন্নীত করেছেন। ১৩৩টি জলবায়ু-সহনশীল ধানজাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। কৃষিতে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দিয়ে যান্ত্রিকীকরণের পাশাপাশি শক্তিশালী খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে।”
ক্ষুধার মূল কারণ হিসেবে তিনি বলেন, “ক্ষুধা কোনো স্বল্পতার ফল নয়; এটি মানুষের তৈরি অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও নৈতিক ব্যর্থতার ফল।”
তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালে ৬৭৩ মিলিয়ন মানুষ ক্ষুধার্ত ছিল। অথচ পৃথিবী পর্যাপ্ত খাদ্য উৎপাদন করছে। এটি উৎপাদনের ব্যর্থতা নয়; এটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ব্যর্থতা। এটি এক নৈতিক ব্যর্থতা। যখন ক্ষুধা দূর করতে কয়েক বিলিয়ন ডলার জোগাড় করতে পারিনি, তখন পৃথিবী ২ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার অস্ত্র কেনায় ব্যয় করেছে। এটাই কি আমাদের অগ্রগতির সংজ্ঞা?”