গাজার কিছু এলাকা থেকে সরতে শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৭:২৬ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৫

গাজা উপত্যকায় দীর্ঘ সহিংসতার পর ইসরায়েলি বাহিনী ধীরে ধীরে কিছু এলাকা থেকে পিছু হটতে শুরু করেছে, তবে শান্তি ফিরছে কি না, সে প্রশ্নে এখনও স্পষ্ট কোনো উত্তর নেই। হামাসের সঙ্গে এক প্রাথমিক যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে এই সেনা প্রত্যাহার শুরু হলেও স্থানীয় বাসিন্দাদের মনে উদ্বেগ রয়ে গেছে।
শুক্রবার সকালে ইসরায়েল সরকার হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব চূড়ান্তভাবে অনুমোদন করে। চুক্তি অনুযায়ী, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লড়াই থামানো হবে এবং ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বিনিময়ে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তির শর্তে রাজি হয়েছে হামাস। এই প্রক্রিয়াকে দুই বছর ধরে চলা সংঘাতের অবসানের প্রথম ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা যুক্তরাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে তৈরি একটি বৃহত্তর শান্তি পরিকল্পনার অংশ।
ইতিমধ্যে গাজার বিভিন্ন এলাকায় সেনা প্রত্যাহারের চিত্র দেখা গেছে। গাজার দক্ষিণে খান ইউনিস শহরের পূর্বাঞ্চল থেকে ইসরায়েলি সেনারা সরে গেলেও, স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে এখনও ট্যাংকের গোলার শব্দ শোনা গেছে। গাজা সিটির নুসেইরাত শিবিরে ইসরায়েলি বাহিনীর একটি অংশ পূর্বে সরে গেলেও, সকালে আবার গুলির শব্দ শোনা গেছে এবং সেনারা ফের সেখানে অবস্থান নেয়।
উপকূলীয় সড়ক থেকেও সেনারা সরে গেছে বলে জানা গেছে। এই খবর ছড়িয়ে পড়ার পর শত শত মানুষ শহরের কেন্দ্রভাগে ফিরতে শুরু করেন। তবে কাছাকাছি গুলির শব্দ শোনার পর অনেকেই আতঙ্কে পেছনে ফিরে যান। মাত্র হাতে গোনা কয়েকজন পায়ে হেঁটে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পার হওয়ার চেষ্টা করেছেন।
গাজা সিটির শেখ রাদওয়ান এলাকার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সি ইসমাইল জায়দা বলেন, “আমার বাড়িটি যে এখনো দাঁড়িয়ে আছে, তা নিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাচ্ছি। তবে জায়গাটা ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার প্রতিবেশীদের ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে, পুরো এলাকা গুঁড়িয়ে গেছে।” যুদ্ধবিরতির সত্যতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, “তারা যেভাবে বলছে, আদৌ কি তা শেষ হয়েছে? কেন কেউ এসে আমাদের বলছে না যে সত্যিই যুদ্ধবিরতি হয়েছে এবং আমরা নির্ভয়ে থাকতে পারি কি না।”
ইসরায়েলি বাহিনীর সরে যাওয়ার সুযোগে উদ্ধারকর্মীরা নতুন করে অভিযান শুরু করেছেন। যে এলাকাগুলোতে আগে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি, এখন সেখানে পৌঁছে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মানুষদের খোঁজ করা হচ্ছে। চিকিৎসকদের ভাষ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ১০টি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বসবাসের উপযোগিতা ফিরে পাওয়ার আশায় স্থানীয়রা ধ্বংসস্তূপে ফিরতে শুরু করলেও, পরিস্থিতির অস্থিরতায় তারা এখনও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। যুদ্ধবিরতির ঘোষণা বাস্তবে কতটা কার্যকর হচ্ছে, সেটিই এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা