বিড়াল ও কুকুরের দ্বন্দ্বের জন্য নবদম্পতির বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৫৯ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

ভারতের ভোপালের এক নবদম্পতি তাদের কুকুর ও বিড়ালের পারস্পরিক বিরোধ সামলাতে না পেরে বিচ্ছেদের আবেদন করেছেন। সমস্যাটি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে নয়, বরং তাদের প্রিয় পোষা প্রাণীদের ঘিরে।
ভোপাল ফ্যামিলি কোর্টের একজন কর্মকর্তা জানান, প্রাণীর প্রতি ভালোবাসা থেকেই তাদের পরিচয়, বন্ধুত্ব এবং পরে বিবাহ হয়। তবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে বিয়ের পর একসঙ্গে বসবাস শুরু করলে, স্বামীর কুকুর স্ত্রীর বিড়ালকে বারবার আক্রমণ করে। স্ত্রী অভিযোগ করেন, বিড়ালটি তাড়িয়ে বেড়ানো হয়। অন্যদিকে স্বামী বলেন, তিনি বিয়ের আগেই স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিলেন বিড়াল না আনতে। তার অভিযোগ, বিড়ালটি মাছের অ্যাকুয়ারিয়ামের কাছে ঘোরাঘুরি করত, যা অশান্তি সৃষ্টি করত।
দুজনেই তাদের পোষা প্রাণী ত্যাগে অস্বীকৃতি জানালে মতবিরোধ বাড়ে। স্ত্রী বলেন, “আমার বিড়াল আমার পরিবারের অংশ।” স্বামীও কুকুরকে ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে রাজি হননি।
ফ্যামিলি কোর্ট একাধিকবার তাদের কাউন্সেলিংয়ে পাঠায়। উভয় পরিবারের সদস্যরাও মধ্যস্থতার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা ‘মতবিরোধ মেটানো অসম্ভব’ বলে বিচ্ছেদের আবেদন করেন।
পারিবারিক পরামর্শদাতা শৈল আওয়াস্থি বলেন, “মানুষ এখন পোষা প্রাণীর মধ্যে সঙ্গ খুঁজে নিচ্ছে, অনেক সময় তা মানবসম্পর্কের চেয়েও অগ্রাধিকার পাচ্ছে। কিন্তু যখন দুই সঙ্গীই একে অপরের পছন্দে আপস করতে রাজি হন না, তখন এমন সম্পর্ক টেকে না।” তিনি আরও বলেন, “এটি এক নতুন সামাজিক বাস্তবতা; যেখানে মানুষ একাকিত্বের কারণে প্রাণীদের সঙ্গে গভীরভাবে আবদ্ধ হচ্ছে, কিন্তু সম্পর্কের ক্ষেত্রে সহনশীলতা হারাচ্ছে।”
ভোপাল পারিবারিক আদালতের কর্মকর্তারা ঘটনাটিকে “সমসাময়িক সমাজে মানুষের বেড়ে চলা আবেগীয় একাকিত্বের প্রতিচ্ছবি” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এই অদ্ভুত মামলা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেছে। অনেকে মন্তব্য করছেন, “যেখানে মানুষ আর মানুষকে সহ্য করতে পারছে না, সেখানে কুকুর-বিড়ালের বন্ধুত্বই বা কীভাবে সম্ভব!”
মামলাটি এখনও বিচারাধীন। অনেকেই একে ‘প্রাণীপ্রেমের যুগের মানবিক ট্র্যাজেডি’ হিসেবে বর্ণনা করছেন।
সূত্র: ওডিটি সেন্ট্রাল