হাতকড়াসহ আ.লীগ নেতা ছিনতাইয়ের ঘটনায় এসআই প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন
- বগুড়া প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ১১:৪৯ পিএম, ০৬ অক্টোবর ২০২৫

বগুড়ার শিবগঞ্জে গ্রেফতারের পর আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ঘোষিত নেতা এবং উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রিজ্জাকুল ইসলাম রাজুকে (৪৫) ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় শিবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আল মামুনকে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসার স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আতোয়ার রহমান। তিনি জানান, ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামানকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে এসআই আল মামুনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের পর রিজ্জাকুল ইসলামের বিরুদ্ধে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে ১২টি মামলা হয় এবং তিনি আত্মগোপনে চলে যান। ৪ অক্টোবর রাতে তিনি নিজ এলাকায় একটি আত্মীয়ের বিয়েতে আসলে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এসআই আল মামুন ও একজন কনস্টেবল সাদা পোশাকে তাকে গ্রেফতার করেন এবং এক হাতে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু গ্রামবাসী ও স্বজনরা পুলিশকে ঘিরে ধরে ধাক্কা দিয়ে রাজুকে ছিনিয়ে নিয়ে পালাতে সহায়তা করেন।
স্বজনদের অভিযোগ, গ্রেফতার না করার শর্তে এসআই আল মামুন এক লাখ টাকা ঘুষ নেন। ঘুষ নিয়েও গ্রেফতার করায় রাজুকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় এসআই আল মামুন বাদী হয়ে রাজুকে প্রধান আসামি করে ২০ জনের নাম উল্লেখসহ ২২০ জনের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা করেন। পুলিশ পরে অভিযান চালিয়ে ২১ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়।
এ ঘটনায় গ্রামটি পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয়রা জানান। নারী ও শিশুরাও গ্রেফতার আতঙ্কে রয়েছেন। তবে ওসি শাহীনুজ্জামান শাহীন জানান, “আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় ১১ নারীসহ ২১ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারেও অভিযান চলছে। কিন্তু কোনো নিরীহ মানুষকে হয়রানি করা হয়নি।”
তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন শেরপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম ও এসপি অফিসের ইন্সপেক্টর তরিকুল ইসলাম।