পাকিস্তানে সশস্ত্র সংগঠনে কীভাবে জড়াচ্ছে বাংলাদেশি তরুণরা?
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:১৭ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-র সঙ্গে লড়াইয়ে গত ছয় মাসে দুই বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় বাংলাদেশের গোয়েন্দা ও পুলিশি কর্মকর্তাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়েছে, কেন বাংলাদেশের তরুণরা বিদেশি জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে জড়াচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
পাকিস্তানে সামরিক বাহিনীর অভিযানের খবর অনুযায়ী, গত শুক্রবার টিটিপির ১৭ সদস্য নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে একজন বাংলাদেশি তরুণ ফয়সাল (মাদারীপুর)-কে শনাক্ত করা হয়েছে। এর আগে এপ্রিলে দেশটির উত্তর ওয়াজিরিস্তানে আহমেদ জুবায়ের নামে আরও একজন বাংলাদেশি নিহত হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত জুলাইয়ে টিটিপির সঙ্গে সম্পৃক্ত সন্দেহে দু’জন বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিল। ঢাকায় জঙ্গি বিষয়ক কাজ করা পুলিশ কর্মকর্তা জানান, বাংলাদেশ থেকে টিটিপির জন্য জনবল সংগ্রহের একটি প্রক্রিয়া দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় রয়েছে, যার নেতৃত্বে আছেন ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার।
বিশ্লেষকরা বলছেন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানভিত্তিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশি জঙ্গিদের সম্পৃক্ততা নতুন নয়। বাংলাদেশে প্রকাশ্যেও মুজাহিদ রিক্রুটমেন্ট বা সদস্য সংগ্রহের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্কীয়া নামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে আল-কায়েদা ও টিটিপির সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।
পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জুলাইয়ে দু’জনকে আটক করার পর ভিতরে টিটিপি নেটওয়ার্কের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। আটকরা সাধারণত বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরব বা দুবাই হয়ে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পৌঁছায়।
টিটিপি পাকিস্তানের পাঠান মাদ্রাসা ছাত্রদের বিভিন্ন সংগঠনের জোট হিসেবে ২০০৭ সালে গঠিত হয়। তারা পাকিস্তানে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে এবং বিভিন্ন সময় সেনা ও স্থাপনায় হামলার জন্য দায়ী হয়ে থাকে।
পাকিস্তানের সামরিক সূত্রে জানা গেছে, এপ্রিলে নিহত জুবায়ের উত্তর ওয়াজিরিস্তানের রাজমাক এলাকায় অভিযান চলাকালীন নিহত হন। এছাড়া বালোচিস্তান থেকে আরও অন্তত ৩৫ জন বাংলাদেশি আটক হওয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল।
বাংলাদেশে আটকরা মূলত টিটিপির জন্য প্রশিক্ষণ ও সদস্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত থাকত। মামলার এজাহারে উল্লেখ রয়েছে, ইঞ্জিনিয়ার ইমরান হায়দার বাংলাদেশে টিটিপির কার্যক্রম পরিচালনা, সদস্য সংগ্রহ, ইসলামি খিলাফত ও সন্ত্রাসবাদে উদ্বুদ্ধ করার কাজ করে আসছিল।
পুলিশ ও কূটনৈতিক সূত্রে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে তথ্য বিনিময় এবং নতুন গোয়েন্দা কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশে টিটিপি নেটওয়ার্ক শনাক্ত ও প্রতিরোধের প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। ফলে জুলাইয়ে দু’জনকে আটক করা সম্ভব হয়েছে, আর তাদের সহযোগীদেরও ধরা বা শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।