ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্মত যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি


ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্মত যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি

যুক্তরাজ্যের লেবার পার্টি তাদের বার্ষিক সম্মেলনে গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে জাতিগত হত্যাকাণ্ড হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং ইসরায়েলের ওপর কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে। প্রস্তাবে সর্বাত্মক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং দেশটিতে অস্ত্র বিক্রি বন্ধের আহ্বান জানানো হয়েছে।

লিভারপুলে আয়োজিত সম্মেলনে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকা ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন। ভোটে প্রস্তাব পাস হওয়াকে দলটির ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে লেবার পার্টি আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সাম্প্রতিক অনুসন্ধান কমিশনের প্রতিবেদনের সংস্থান মেনে নিল, যেখানে বলা হয়েছিল, ইসরায়েল গাজায় জাতিগত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে এবং তা এখনো অব্যাহত।

লেবার নেতাদের বার্তা

বেন জামাল, প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইনের পরিচালক বলেন, “এই সিদ্ধান্ত সরকারের জন্য বড় ধরনের পরাজয়। লেবার অবশেষে স্বীকার করল যে ইসরায়েল গাজায় জাতিগত হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে। এখন এই অবস্থানকে সরকারের নীতিতে রূপ দেওয়া জরুরি।”

মারিয়াম এসলামদুস্ত, ট্রান্সপোর্ট স্যালারিড ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মন্তব্য করেন, “আজ লেবার আন্দোলন ইতিহাসের সঠিক পাশে দাঁড়িয়েছে। ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছে এবং স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— আমরা আর চুপ থাকব না।”

স্টারমার সরকারের ওপর চাপ

প্রস্তাব পাস হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের ওপর চাপ আরও বেড়েছে। যদিও সম্প্রতি ব্রিটেন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দিয়েছে, তবে গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘জাতিহত্যা’ হিসেবে ঘোষণা করতে রাজি হয়নি। এ কারণে লেবার সমর্থক ও সাধারণ সদস্যদের মধ্যে সরকারের প্রতি অসন্তুষ্টি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

গত বছর ব্রিটিশ সরকার ইসরায়েলে ৩৫০টি অস্ত্র রপ্তানি লাইসেন্সের মধ্যে ৩০টি স্থগিত করেছিল। তবে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যন্ত্রাংশের লাইসেন্স এখনও নিষিদ্ধ হয়নি, যা সরাসরি গাজায় ব্যবহৃত হচ্ছে। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, লেবার ভোটারদের ৭২ শতাংশ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পূর্ণাঙ্গ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার পক্ষে।

যুক্তরাজ্য-ইসরায়েল সম্পর্ক

সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাজ্য ও ইসরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক উত্তেজনা বেড়েছে। এ মাসের শুরুতে লন্ডনে অনুষ্ঠিত বৃহত্তম অস্ত্র মেলায় ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করা হয়।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ব্রিটেনের ফিলিস্তিন স্বীকৃতি সিদ্ধান্তকে ‘হামাসকে পুরস্কৃত করা’ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ লন্ডনে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের সঙ্গে বৈঠক করে স্বীকার করেন, “বহু বিষয়ে মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও স্টারমার এখনো ইসরায়েলের একজন মিত্র।”

এই প্রস্তাবের মাধ্যমে লেবার পার্টি স্পষ্ট করে দিয়েছে, তারা ফিলিস্তিনিদের পাশে এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি আরও জোরালো হচ্ছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×