কাবায় ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করায় গ্রেপ্তার হজযাত্রী
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৫৮ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২৫

কাবা চত্বরে ফিলিস্তিনের পতাকা ওড়ানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে সৌদি আরবে এক মিশরীয় হজযাত্রীর গ্রেপ্তারের পর, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে আবারও প্রশ্ন উঠেছে। গাজায় চলমান মানবিক সংকটের প্রতিবাদে এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলেন ওই হজযাত্রী। পরে তাকে আটক করে সরিয়ে নেয় সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী।
রোববার, ২৭ জুলাই, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এক প্রতিবেদনে এই খবর প্রকাশ করে।
প্রতিবেদনে প্রকাশিত ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আবেগে ভেঙে পড়া অবস্থায় হজযাত্রীটি কাবার কাছে দাঁড়িয়ে উচ্চারণ করেন—“ওয়া ইসলামাহ!”। এই আরবি বাক্যটি ঐতিহাসিকভাবে মুসলিম সমাজে বিপদ ও বেদনার প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এরপর তিনি চিৎকার করে বলেন, “গাজার শিশুরা মরছে, হে মুসলমানরা!”। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই সৌদি নিরাপত্তা বাহিনী হস্তক্ষেপ করে এবং তাকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নেয়।
সৌদি আরবের হজ ও ওমরার নীতিমালা অনুযায়ী, মক্কার পবিত্র স্থানগুলোতে যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক প্রতীক, স্লোগান বা বার্তা বহন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। দেশটির কর্তৃপক্ষ বলছে, এ ধরনের বিধিনিষেধ ধর্মীয় পরিবেশের পবিত্রতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখার জন্য অপরিহার্য।
তবে, নিঃশব্দ সহানুভূতির এমন প্রকাশেও গ্রেপ্তার—এই ঘটনা বিশ্বজুড়ে মানবাধিকার সংস্থা ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। সমালোচকদের মতে, “সৌদি আরবে এখন এমনকি শান্তিপূর্ণ সহানুভূতিও শাস্তির আওতায় পড়ছে।”
এটি নতুন কিছু নয়। এর আগেও, ২০২৩ সালে, হজ পালনের সময় ফিলিস্তিন পতাকার রঙে তৈরি তসবিহ ও সাদা কেফিয়েহ পরায় এক ব্রিটিশ হজযাত্রীকে গ্রেপ্তার করে সৌদি পুলিশ। একইসঙ্গে, গাজা পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে মতপ্রকাশ করায় বেশ কয়েকজন সৌদি নাগরিকের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, যখন মুসলিম বিশ্বজুড়ে ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানোর জোয়ার দেখা যাচ্ছে, তখন এমন দমনমূলক পদক্ষেপ সৌদি সরকারের মতপ্রকাশ নিয়ন্ত্রণের কৌশলকে নতুন করে সামনে নিয়ে এসেছে।