আসাদ পতনের পর সিরিয়ায় প্রথম সংসদ নির্বাচন সেপ্টেম্বরে
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৭:৫৭ পিএম, ২৮ জুলাই ২০২৫

বাশার আল-আসাদের পতনের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় প্রথমবারের মতো জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে দেশটির নতুন কর্তৃপক্ষ। আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা জাতীয় কমিটি।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে সোমবার (২৮ জুলাই) জানানো হয়েছে, নতুন গঠিত প্রশাসনের অধীনে এটি হবে প্রথম পার্লামেন্টারি ভোট।
তবে নির্বাচন হবে আংশিক। ২১০ আসনের সংসদের এক-তৃতীয়াংশে সরাসরি প্রতিনিধিদের মনোনয়ন দেবেন অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারাআ। বাকি আসনগুলোতে ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করা হবে।
সিরিয়ার জনগণের পরিষদ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে থাকা উচ্চ পর্যায়ের কমিটির প্রধান মোহাম্মদ তাহা আল-আহমাদ রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা সানাকে রোববার বলেন, “১৫ থেকে ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।”
গত বছরের ডিসেম্বরে বিদ্রোহীদের আকস্মিক হামলায় প্রেসিডেন্ট আসাদের দীর্ঘ শাসনের অবসান ঘটে। এরপরই গঠিত হয় নতুন প্রশাসন।
নির্বাচন কমিটির আরেক সদস্য হাসান আল-দাঘিম সম্প্রতি এরেম নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, “প্রতিটি প্রদেশে একটি করে ইলেকটোরাল কলেজ থাকবে, যারা নির্বাচনের জন্য ভোট প্রদান করবে।”
চলতি বছরের মার্চে অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট শারাআ স্বাক্ষরিত একটি অস্থায়ী সংবিধানে একটি ‘জনগণের কমিটি’ গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়। এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ সংবিধান তৈরি ও সাধারণ নির্বাচন আয়োজনের আগ পর্যন্ত একটি অস্থায়ী সংসদের মতো কাজ করবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলছে, পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে আরও কয়েক বছর সময় লাগতে পারে।
আল জাজিরা আরও জানিয়েছে, নির্বাচনের এই ঘোষণা এমন সময় এলো যখন দেশটিতে নতুন সরকার গঠনের প্রক্রিয়া ঘিরে ব্যাপক মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। চলতি জুলাই মাসের শুরুতেই দক্ষিণাঞ্চলীয় সুইদা প্রদেশে ধর্মীয় সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন শত শত মানুষ, যা যুদ্ধপরবর্তী পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে।
এই সহিংসতা শুরু হয় বেদুইন সশস্ত্র গোষ্ঠী ও ড্রুজ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অপহরণের মাধ্যমে। পরে সরকারি বাহিনী সংঘর্ষ থামানোর দাবি করে হস্তক্ষেপ করে, তবে প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তারা একতরফাভাবে বেদুইনদের পক্ষ নিয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, সরকারি বাহিনী ড্রুজ সম্প্রদায়ের কিছু বেসামরিক নাগরিককে হত্যা করে, তাদের বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় এবং লুটপাট চালায়।
এর জেরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইসরায়েল হস্তক্ষেপ করে এবং সিরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সরকারি বাহিনীর কয়েকটি স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল জানায়, “ড্রুজ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্যই এই সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।”