সিরিয়ার সুওয়াইদায় রক্তক্ষয়ী সংঘাতে নিহত বেড়ে ৯৪০
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৬:১৪ পিএম, ২০ জুলাই ২০২৫

দক্ষিণ সিরিয়ার সুওয়াইদা প্রদেশে চলমান সহিংসতায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৯৪০ জনে, যা এই অঞ্চলে সাম্প্রতিক ইতিহাসে অন্যতম ভয়াবহ সংঘাত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। অ্যারাবিয়া মেডিকেল সূত্রের বরাতে স্কাই নিউজের প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
এর আগে প্রকাশিত তথ্যে নিহতের সংখ্যা ৭১৮ জন বলা হলেও, নতুন হিসাব অনুযায়ী আরও ২২২ জনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ায় মোট প্রাণহানির সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৪০-এ।
১৩ জুলাই থেকে শুরু হওয়া এই সহিংসতার শিকারদের মধ্যে ২৬২ জন স্থানীয় আরব বেদুইন, যার মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে। দ্রুজ গোষ্ঠীগুলো তাদের ৩২৬ জন সদস্যকে হারিয়েছে, আর সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সেনাবাহিনীর ৩১২ জন সদস্যও প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া সরকার-সমর্থিত আরব উপজাতিদের আধাসামরিক বাহিনীর ২১ জন সদস্যও নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। ইসরায়েলি বিমান হামলায় অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর আরও ১৯ জন কর্মকর্তা মারা গেছেন।
বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে উত্তেজনা প্রশমনের লক্ষ্যে গতকাল শনিবার সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা এক তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন। এই যুদ্ধবিরতি ঘোষিত হয়েছে আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারীদের সহায়তায় প্রণীত একটি 'পুনর্মিলন পরিকল্পনা'র অংশ হিসেবে। যুদ্ধবিরতির আওতায় মিলিশিয়া ও ড্রুজ প্রতিরক্ষা বাহিনী উভয় পক্ষকেই অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
১৩ জুলাই থেকে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে যখন আরব উপজাতি-ভিত্তিক মিলিশিয়াদের সঙ্গে ড্রুজ যোদ্ধাদের মুখোমুখি সংঘর্ষ শুরু হয়। দুই দিন পর, ১৫ জুলাই, সিরিয়ার সরকারি বাহিনী সুওয়াইদা শহরে অভিযান শুরু করে।
পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে ওঠে যখন ইসরায়েল সিরিয়ার সামরিক স্থাপনাগুলোর ওপর বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল জানায়, তারা দ্রুজ জনগোষ্ঠীকে রক্ষার লক্ষ্যেই এই হামলা চালিয়েছে। ১৬ জুলাই, ইসরায়েলি বিমান বাহিনী সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কিছু কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে।
দ্রুজরা একটি আরবি ভাষাভাষী ধর্মীয় ও জাতিগত গোষ্ঠী, যাদের বসবাস সিরিয়া, লেবানন, ইসরায়েল এবং জর্ডানজুড়ে। সিরিয়ায় বর্তমানে এই গোষ্ঠীর জনসংখ্যা প্রায় ৭ লাখ, যা তাদের দেশটির কুর্দি ও আলাউই সম্প্রদায়ের পর তৃতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সংখ্যালঘু হিসেবে স্থান দিয়েছে।
এই সংঘাত মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমাগত বাড়তে থাকা সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আরেকটি নজির হয়ে উঠেছে, যার দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব এড়াতে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক প্রচেষ্টা জোরদার করার আহ্বান জানাচ্ছেন বিশ্লেষকরা।