২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা
তারেক রহমান-বাবরের খালাসের বিরুদ্ধে আপিলের রায় আজ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৯:৪৬ এম, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আওয়ামী লীগের সমাবেশে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট চালানো ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের রায় ঘোষণা করা হবে আজ বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর)।
প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এই রায় দেবেন। আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় মামলাটি এক নম্বর ক্রমিকে রয়েছে।
এর আগে ২১ আগস্ট মামলায় খালাস পাওয়া সব আসামির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি শেষ হয়। শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায় ঘোষণার জন্য ৪ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করেন।
শুনানিতে আসামিপক্ষের হয়ে যুক্তি উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।
সেদিন আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন এবং অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।
হাইকোর্টের রায়:
২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ যাবজ্জীবন ও মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সব আসামিকে খালাস দেন।
ওই রায়ে আদালত বলেন, “একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ। আইনে এ বিচার টেকে না।”
এছাড়া বলা হয়, “যে চার্জশিটের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত বিচার করেছিলেন তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।”
পরে হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। ২০২৪ সালের ১ জুন আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষকে আপিলের অনুমতি দেন।
নিম্ন আদালতের রায়:
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গ্রেনেড হামলা মামলার রায় দেয়। এতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন কায়কোবাদসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন:
লুৎফুজ্জামান বাবর, আব্দুস সালাম পিন্টু, রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, আবদুর রহিম, হানিফ, মাওলানা তাজউদ্দীন, মাওলানা শেখ আবদুস সালাম, মাওলানা শেখ ফরিদ, মাওলানা আবু সাইদ, আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম সবুজ ও মো. উজ্জ্বল রতন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ১৯ আসামি হলেন:
শাহাদাৎ উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ আবু ওমর, আবু হোমাইরা পীরসাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ আবদুল হান্নান, আরিফ হাসান সুজন, হাফেজ ইয়াহিয়া, আবু বকর সেলিম হাওলাদার, আরিফুল ইসলাম আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন (পলাতক), তারেক রহমান (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক) ও মুফতি আবদুল হাই (পলাতক), এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু (পলাতক)।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। ওই হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলা-বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং দলের কয়েকশ নেতা-কর্মী আহত হন, যাদের মধ্যে শেখ হাসিনাও ছিলেন।