২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিল বিভাগের রায় বৃহস্পতিবার


২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা: আপিল বিভাগের রায় বৃহস্পতিবার

বহুল আলোচিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামির খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিলের রায় বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) ঘোষণা করবে আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির একটি আপিল বেঞ্চ এ রায় দেবেন।

গত ২১ আগস্ট আপিল বিভাগে মামলাটির শুনানি শেষ হয়। এরপর বেঞ্চ ৪ সেপ্টেম্বর রায়ের দিন ধার্য করে। সেদিন আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন অ্যাডভোকেট এস এম শাহজাহান ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

আদালতে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন ও অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান রায়হান বিশ্বাস।

হাইকোর্টের রায়
২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের বেঞ্চ তারেক রহমান, লুৎফুজ্জামান বাবরসহ সব আসামিকে খালাস দেন এবং বিচারিক আদালতের রায় বাতিল করেন। রায়ে বলা হয়, “একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার বিচার ছিল অবৈধ। আইনে এ বিচার টেকে না।” আরও বলা হয়, নিম্ন আদালতে যে চার্জশিটের ভিত্তিতে বিচার হয়েছিল, তা আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য ছিল না।

এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে, এবং ২০২৪ সালের ১ জুন আপিল বিভাগের অনুমতি পায়।

নিম্ন আদালতের রায়
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর বিচারিক আদালত এ মামলায় দুই ধাপে রায় দেয়। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টুসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী ও বিএনপি নেতা কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদসহ আরও ১৯ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১৯ আসামি
লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টু, মেজর জেনারেল (অব.) রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবদুর রহিম, হানিফ পরিবহনের মালিক মো. হানিফ, জঙ্গি নেতা মাওলানা তাজউদ্দীন, শেখ আবদুস সালাম, শেখ ফরিদ, আবু সাইদ, মুফতি মঈনউদ্দিন শেখ ওরফে আবু জান্দাল, হাফেজ আবু তাহের, মো. ইউসুফ ভাট ওরফে মাজেদ ভাট, আবদুল মালেক, মফিজুর রহমান ওরফে মহিবুল্লাহ, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বুলবুল, মো. জাহাঙ্গীর আলম, হোসাইন আহমেদ তামিম, রফিকুল ইসলাম ওরফে সবুজ এবং মো. উজ্জ্বল ওরফে রতন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা
শাহাদাৎ উল্লাহ ওরফে জুয়েল, মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর, আবু হোমাইরা ওরফে পীর সাহেব, মাওলানা সাব্বির আহমদ ওরফে আবদুল হান্নান সাব্বির, আরিফ হাসান ওরফে সুজন ওরফে আবদুর রাজ্জাক, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, আবু বকর ওরফে সেলিম হাওলাদার, মো. আরিফুল ইসলাম ওরফে আরিফ, মহিবুল মোত্তাকিন ওরফে মুত্তাকিন (পলাতক), আনিসুল মুরছালিন ওরফে মুরছালিন (পলাতক), মো. খলিল (পলাতক), জাহাঙ্গীর আলম বদর ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর (পলাতক), মো. ইকবাল (পলাতক), লিটন ওরফে মাওলানা লিটন (পলাতক), তারেক রহমান ওরফে তারেক জিয়া (পলাতক), হারিছ চৌধুরী (পলাতক), কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ (পলাতক), মুফতি শফিকুর রহমান (পলাতক), মুফতি আবদুল হাই (পলাতক) এবং রাতুল আহম্মেদ বাবু ওরফে বাবু ওরফে রাতুল বাবু (পলাতক)।

ঘটনার পটভূমি
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলটির সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে দলের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত হন এবং শেখ হাসিনাসহ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×