শেখ হাসিনা-কামালের নির্দেশেই জুলাই-আগস্ট গণহত্যা: মামুন
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:৪৮ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়ে জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্ট গণহত্যা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশেই সংঘটিত হয়েছিল।
তিনি বলেন, “গত বছরের ১৮ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের ফোনকলের মাধ্যমে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশে পুলিশ প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার শুরু করে।”
সাবেক আইজিপি জানান, তিনি তখন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ছিলেন। অতিরিক্ত ডিআইজি প্রলয় কুমার জোয়ার্দারের সঙ্গে উপস্থিত থেকে নির্দেশনার বিষয়টি সারাদেশের পুলিশ কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। এরপর থেকেই আন্দোলন দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করা শুরু হয়।
মামুন আরও বলেন, আসাদুজ্জামান খান কামাল, আনিসুল হক, ফজলে নূর তাপস, সালমান এফ রহমান, ওবায়দুল কাদের, জাহাঙ্গীর কবির নানক, মোহাম্মদ আলী আরাফাত, মির্জা আযম, হাসানুল হক ইনু ও রাশেদ খান মেননসহ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা প্রধানমন্ত্রীকে প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারে প্ররোচিত করেছিলেন।
জবানবন্দিতে তিনি নিহত ও আহতদের পরিবার এবং দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। বলেন, “এত বড় গণহত্যা আমার দায়িত্ব পালনের সময় সংঘটিত হয়েছে, যার জন্য আমি দোষ ও দায় স্বীকার করছি।”
সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে সকালেই কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। দুপুরের বিরতির পর বিকেলে পুনরায় জবানবন্দি দেন তিনি। এটি তার ১১তম দিন রাজসাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্যগ্রহণ।
প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ ক্যামেরা ট্রায়ালে এই জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ চলমান। এ পর্যন্ত ৩৫ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
গত ১০ জুলাই চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন স্বপ্রণোদিতভাবে রাজসাক্ষী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে সব দায় স্বীকার করেন। সাক্ষীদের জবানবন্দিতে গত বছরের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। শহীদ পরিবারের সদস্য এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।