অর্থপাচার মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম


অর্থপাচার মামলায় ১০ বছরের সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম

বহুল আলোচিত অর্থপাচার মামলায় ১০ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ঠিকাদার ও সাবেক যুবলীগ নেতা এস এম গোলাম কিবরিয়া শামীম, যিনি জি কে শামীম নামে পরিচিত, হাইকোর্ট থেকে খালাস পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার, ৭ আগস্ট, তার আপিলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মবিন এবং বিচারপতি জাবিদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করেন।

এর আগে, ২০২৩ সালের ১৭ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অর্থপাচার মামলায় জি কে শামীমকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। একই মামলায় তার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সাত দেহরক্ষীকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত তাদের মোট ৩ কোটি ৮৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪ টাকা জরিমানার নির্দেশ দেন। রায়ে বলা হয়, নির্ধারিত ৬০ দিনের মধ্যে জরিমানা পরিশোধ না করলে অতিরিক্ত এক বছর করে কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

ওই রায়ে বিচারক মন্তব্য করেছিলেন, “অস্ত্রবাজ, টেন্ডারবাজ ও অর্থ পাচারকারীদের কোনো আদর্শ নেই। তারা কোনো আদর্শ লালন করে না। তবে আদর্শকে ব্যবহার করে রাতারাতি অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করে এবং দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়। তারা দেশ ও জাতির শত্রু। দেশের চলমান উন্নয়ন ও জাতীয় স্বার্থে তাদের সম্মিলিতভাবে প্রতিহত করতে হবে।”

এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করলে হাইকোর্টে শুনানি হয় এবং চূড়ান্তভাবে জি কে শামীমকে খালাস দেওয়া হয়।

এর আগেও, ২০২২ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে দায়ের করা আরেক মামলায় জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

অর্থপাচারের মামলাটি শুরু হয় ২০১৯ সালের ২১ সেপ্টেম্বর, যখন র‍্যাব-১ এর নায়েব সুবেদার মিজানুর রহমান গুলশান থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে ২০২০ সালের ৪ আগস্ট সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের কর্মকর্তা আবু সাঈদ আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেন। ওই বছরের ১০ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।

২০২৫ সালের ১৫ জুন যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর, আদালত রায় ঘোষণার জন্য ২৫ জুন দিন ধার্য করেন। পরে রায়ের তারিখ পিছিয়ে ১৭ জুলাই নির্ধারণ করা হয়, যেদিন সাজা ঘোষণা করা হয়।

মামলার মূল ঘটনা ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর। ওইদিন রাজধানীর নিকেতন এলাকায় জি কে শামীমের বাড়ি ও অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব। অভিযানে আটটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল গুলি, ১৬৫ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট রসিদ (এফডিআর), নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ টাকা, বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং মদ উদ্ধার করা হয়।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×