সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা


সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভুয়া প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ব্যাংক থেকে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা বিদেশে পাচারের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রীসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. মশিউর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন চট্টগ্রামের দুদক জেলা কার্যালয়-১ এ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়-১-এর উপপরিচালক সুবেল আহমেদ।

মামলার নথি অনুযায়ী, সাবেক মন্ত্রী সাইফুজ্জামান, তার পরিবার ও ঘনিষ্ঠরা পরিকল্পিতভাবে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের নামে একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান তৈরি করে। এরপর গম ও ছোলা আমদানির অজুহাতে ইউসিবিএল ব্যাংক থেকে ‘টাইম লোন’ হিসেবে ২৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা পাচার করেন।

এ মামলায় জাবেদের স্ত্রী এবং ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, ভাই আসিজ্জামান চৌধুরী, বোন রোকসানা জামান চৌধুরীকেও আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া আসামিদের তালিকায় রয়েছেন ইউসিবিএল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ, আফরোজা জামান, সৈয়দ কামরুজ্জামানসহ একাধিক সাবেক কর্মকর্তা ও পরিচালনা পর্যায়ের ব্যক্তিরা।

ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ কাদরী, সাবেক চেয়ারম্যান এমএ সবুর এবং বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যাংক কর্মকর্তাদের নামও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।

এছাড়া জাবেদের পারিবারিক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের একাধিক কর্মকর্তা, যেমন মোহাম্মদ ফরমান উল্লাহ চৌধুরী, কাজী মোহাম্মদ দিলদার আলম, আব্দুল আজিজ, ইউছুফ চৌধুরী প্রমুখকেও আসামি করা হয়েছে।

মামলার এজাহারে আরও বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১৩ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দর শাখায় ‘ভিশন ট্রেডিং’ নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলা হয়। এরপর ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি ২৫ কোটি টাকার ঋণের জন্য আবেদন করে, যেটি ১৮০ দিনের মধ্যে ফেরতযোগ্য টাইম লোন হিসেবে প্রস্তাবিত ছিল। যদিও ইউসিবিএল ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটি ঋণের বিপরীতে ১৭টি নেতিবাচক মতামত দেয়, তবুও ২০২০ সালের ৮ মার্চ যাচাই-বাছাই ছাড়াই ঋণটি অনুমোদন করে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ।

উল্লেখ্য, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ২০১৪-২০১৮ মেয়াদে ভূমি প্রতিমন্ত্রী এবং ২০১৯-২০২৩ মেয়াদে পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। ২০২৪ সালের নির্বাচন পূর্ব সময়ে তার বিরুদ্ধে বিদেশে সম্পদ পাচারের অভিযোগ উঠে, এবং পরবর্তীতে তাকে নতুন সরকারে আর মন্ত্রী হিসেবে দেখা যায়নি। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক আগেই তিনি ও তার পরিবার যুক্তরাজ্যে চলে যান।

দুদকের উপপরিচালক সুবেল আহমেদ জানান, এ ঘটনার মাধ্যমে একটি নামমাত্র প্রতিষ্ঠানের নামে জাল কাগজপত্র তৈরি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তদন্তের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলাটি দায়ের করেছে।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×