‘লাশগুলো থানার সামনে নিয়ে গাড়িতে তুলে আগুন লাগিয়ে দেয় পুলিশ’
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৯:৪৩ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ভাঙারির ব্যবসায়ী ৬০ বছর বয়সী মতিবর রহমান, যাকে সবাই ‘বুইদ্দা’ নামে চেনে, মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের ভয়াবহ দৃশ্য বর্ণনা করেছেন।
মতিবরের সাক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তার চোখের সামনে পুলিশ ছয় আন্দোলনকারী তরুণকে গুলি করে হত্যা এবং তাদের লাশ গাড়িতে তুলে আগুন দেয়। সে দিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত গুলি চলতে থাকে, পরে পুলিশ গাড়ি নিয়ে চলে যায়।
ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্যানেলে মতিবরের সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়। প্যানেলের অন্য দুই সদস্য হলেন অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
মতিবর বলেন, “সেদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। রাতের বেলা বাসায় ফিরে যাই। লাশগুলো থানার সামনেই পোড়ানো হয়। পরের দিন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা আসে, সেনাবাহিনী আসে দুপুর ২টার দিকে। তারপর আমি লাশগুলো পলিথিনে প্যাকেট করি এবং জানাজা পড়ানো হয়।”
তিনি আরও জানান, চারটি লাশের অভিভাবক শনাক্ত হওয়ার পর তাদের লাশ নিতে আসেন, কিন্তু দুটি লাশের অভিভাবক পাওয়া যায়নি। সেগুলো আমতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়। একদিন পর আবুলের স্ত্রী তাকে দাফনকৃত লাশ সম্পর্কিত তথ্য জানতে চায়, এবং মতিবর সঠিকভাবে তথ্য জানান।
সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তিনি পলাতক আট আসামির পক্ষে নিয়োগপ্রাপ্ত দুই আইনজীর জিজ্ঞাসাবাদের মুখোমুখি হন। এ দিন ট্রাইব্যুনালে কারাগার থেকে আরও আট আসামি হাজির করা হয়। তারা হলেন: সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, সাবেক অতিরিক্ত সুপার মো. শাহিদুল ইসলাম, পরিদর্শক আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক, এসআই আরাফাত উদ্দিন, এএসআই কামরুল হাসান, আবজাল ও কনস্টেবল মুকুল।
এছাড়া সাবেক এমপি সাইফুল ইসলামসহ আটজন এখনও পলাতক রয়েছেন। মামলাটি মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা হিসেবে চলমান।