মৃত্যুর তিন বছর পর দুর্নীতি মামলায় খালাস পেলেন সাবেক মেয়র কামাল
- বরিশাল প্রতিনিধি
- প্রকাশঃ ০৮:৫৭ পিএম, ২৩ জুলাই ২০২৫

মৃত্যুর তিন বছর পর দুর্নীতির মামলায় আদালতের রায়ে নির্দোষ প্রমাণিত হলেন বরিশালের সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামাল। হাইকোর্ট বুধবার তার বিরুদ্ধে ১৫ বছর আগে দায়ের করা দুর্নীতি মামলায় দেওয়া সাজা ও অর্থদণ্ড বাতিল করেছে। একইসঙ্গে মামলার অপর চার অভিযুক্তকেও খালাস দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।
মামলার নথি অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৯ নভেম্বর বরিশালের বিশেষ জজ আদালত জেলা বিএনপির তৎকালীন সভাপতি ও সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আহসান হাবিব কামালসহ পাঁচজনকে সাত বছরের কারাদণ্ড এবং এক কোটি টাকা করে জরিমানা করেন। অভিযোগ ছিল, ২৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা।
কামাল সাত মাস আট দিন কারাগারে থাকার পর ২০২১ সালের ১৬ জুলাই ৫০ লাখ টাকা জরিমানা দিয়ে জামিনে মুক্তি পান। পরের বছর, ২০২২ সালের ৩১ জুলাই ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রায়ের পর কামালের আইনজীবী ব্যারিস্টার সানজিদ সিদ্দিকী বলেন, ‘রায় ঘোষণার পরই সাজার বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করা হয়েছিল। এ মামলার সব আসামিকে নির্দোষ ঘোষণা দিয়ে বুধবার হাইকোর্ট রায় দিয়েছেন।’
আদালত তার রায়ে উল্লেখ করে, রাষ্ট্রপক্ষ মামলার অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ব্যারিস্টার সানজিদ আরও বলেন, ‘আমরা আদালতে দেখিয়েছি, আহসান হাবিব কামাল বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মামলার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল।’
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ১৯৯৫-৯৬ অর্থবছরে বরিশাল শহরে টেলিফোন ও টেলিগ্রাফ বিভাগের ভূ-গর্ভস্থ ক্যাবল বসানো হয়। এ কারণে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামতের জন্য তৎকালীন পৌরসভাকে ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। অভিযোগে বলা হয়, হাই ইয়ং নামের একটি ভুয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নামে চারটি চেকের মাধ্যমে ৩৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়, যার জন্য কোনো দরপত্র আহ্বান করা হয়নি এবং প্রতিষ্ঠানটির বাস্তবে কোনো অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
এই ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশনের বরিশাল কার্যালয়ের কর্মকর্তা আব্দুল বাসেত ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২০১১ সালের ১৯ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয় এবং বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
উল্লেখ্য, আহসান হাবিব কামাল বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন। তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পৌর চেয়ারম্যান এবং সিটি করপোরেশনে উন্নীত হওয়ার পর ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৩ সালে তিনি বিএনপির সমর্থনে বরিশালের মেয়র নির্বাচিত হন।