টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ০৬:১৫ পিএম, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪

ধর্ষণের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে টিকটকার প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পুলিশ। ফলে, মামলায় প্রিন্স মামুনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটনের (ডিএমপি) ক্যান্টনমেন্ট থানা পুলিশ।
মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ক্যান্টনমেন্ট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মুহাম্মদ শাহজাহান তদন্ত শেষে গেল ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ সংক্রান্ত অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। পরে সেটি বিচারের জন্য ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এ পাঠানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে গত ৯ জুন ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট থানায় প্রিন্স মামুনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন লায়লা। মামলার পর দিন তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে শুনানি শেষে জামিন ও রিমান্ড উভয় নামঞ্জুর করে এ টিকটকারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর গত ১ জুলাই জামিনে মুক্তি পান তিনি। বর্তমানে জামিনেই আছেন।
তদন্তে যা পাওয়া গেছে: আসামি প্রিন্স মামুন একজন টিকটকার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য মাধ্যমে একজন টিকটকার হিসেবে পরিচিত তিনি। অপর দিকে, বাদি লায়লা ফেসবুকে বেশ পরিচিত মুখ। তিনি বিবাহিতা। স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না থাকার জন্য ফ্ল্যাটে সন্তানদের নিয়ে একাই থাকেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মামুনের সঙ্গে পরিচয় হয় লায়লার। পরে এক পর্যায়ে লায়লার সঙ্গে মিডিয়াতে কাজ করার আগ্রহ পোষণ করেন টিকটকার মামুন।
এরপর ২০২২ সালের শুরুর দিকে একসঙ্গে পথচলা শুরু করেন মামুন ও লায়লা। পরবর্বী দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। যা পাকাপোক্ত করার জন্য দুইজনই একসঙ্গে লায়লার বাসায় থাকা শুরু করেন। মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের সত্যতা মিলেছে। সম্পর্ক ঘনিভূত হওয়ার কারণে আইডি, এনআইডি, পাসপোর্টসহ অন্যান্য কাগজপত্রে লায়লার ঠিকানা ব্যবহার করতে থাকেন মামুন। এরপর বিয়ে করবে- এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করতে থাকেন। আর একাধিক বার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধর্ষণ করেন। যা কিনা প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা মিলেছে।
এর আগে মামলার অভিযোগে লায়লা উল্লেখ করেন, মামলার বিবাদী আব্দুল্লাহ আল মামুন ওরফে প্রিন্স মামুনের সঙ্গে আমার গত তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে মামুন আমাকে বিয়ে করবে মর্মে প্রলোভন দেখিয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপন করে। সে আমাকে জানায়, তার ঢাকায় থাকার মত নিজস্ব কোন বাসা নেই। যেহেতু প্রেমের সম্পর্ক সৃষ্টি হয় এবং মামুন আমাকে বিয়ে করবে বলে জানায়, তাই তার কথা সরল মনে বিশ্বাস করে তাকে আমার বাসায় থাকার অনুমতি দেই।
২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি মামুন তার মাকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাসায় এসে বসবাস করতে থাকে। ওই দিন থেকে সে আমার বাসায় আমার সঙ্গে একই রুমে থাকতে শুরু করে। আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে একাধিক বার আমার সঙ্গে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে। মামুন আমার বাসায় থাকাকালে তার বাবা-মা মাঝেমধ্যেই সেখানে এসে অবস্থান করত। আমি মামুনকে একাধিক বার বিয়ের বিষয় বললে সে বিভিন্ন অজুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে।
সর্বশেষ চলতি বছরের ১৪ মার্চ মামুন আমার শয়ন কক্ষে আগের মত আমাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমাকে ধর্ষণ করে। পরবর্তী আমি তাকে বিয়ের বিষয়ে বললে সে আমার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। আমাকে বিভিন্ন অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করে।