১ নভেম্বর থেকে খুলছে সেন্টমার্টিন, প্রথম মাসে রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:৩৮ এম, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারও খুলছে সাগরকন্যা সেন্টমার্টিন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হচ্ছে, তবে শুরুতেই থাকছে কিছু সীমাবদ্ধতা। প্রথম এক মাস কোনো পর্যটক দ্বীপে রাত্রিযাপন করতে পারবেন না, সকালে গিয়ে বিকেলের মধ্যেই ফিরে আসতে হবে।
গত বছরের মতো এবারও শুধুমাত্র কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে করে পর্যটকদের সেন্টমার্টিনে যাওয়া যাবে। উখিয়ার ইনানী ঘাট থেকে জাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ থাকায় যাত্রীদের সাগরপথে অতিরিক্ত কয়েক ঘণ্টা সময় ব্যয় করতে হবে।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্প্রতি সেন্টমার্টিনে যাতায়াত সংক্রান্ত বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএ ও নৌপরিবহন অধিদপ্তরকে নীতিগত সম্মতি দিয়ে চিঠি পাঠিয়েছে। এর আগে ২২ অক্টোবর দ্বীপের জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় ১২ দফা নির্দেশনা জারি করে মন্ত্রণালয়।
কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের জেলা পরিচালক মোহাম্মদ জমির উদ্দিন বলেন, “মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগের নিয়মেই কক্সবাজারের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে করে সেন্টমার্টিনে যেতে পারবেন। বিষয়টি অংশীজনদের জানানো হয়েছে।”
সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, “কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিন পৌঁছাতে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। আবার প্রথম এক মাস দ্বীপে রাত্রি যাপনের সুযোগ নেই। ফিরতেও লাগে ছয় ঘণ্টা। কাজেই সেন্টমার্টিন দেখার খুব কম সময় পাবেন পর্যটকরা।”
মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের অনুমোদিত ওয়েব পোর্টাল থেকেই পর্যটকদের অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে থাকবে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে। এছাড়া অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান দ্বীপে চলাচল করতে পারবে না এবং প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ করতে পারবেন। প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে, তবে ফেব্রুয়ারি মাসে পর্যটন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে।
দ্বীপের পরিবেশ রক্ষায় রাতে আলো জ্বালানো, উচ্চশব্দ সৃষ্টি ও বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়াবনে প্রবেশ, কেওড়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের কোনো ক্ষতি করা যাবে না। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ যেকোনো মোটরচালিত যান চলাচলও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
পর্যটকদের ব্যক্তিগত পানির ফ্লাস্ক বহনের পরামর্শ দিয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, সেন্টমার্টিনে পলিথিন নেওয়া যাবে না। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিকের চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর ছোট প্যাকেট, ৫০০ মিলিলিটার ও এক লিটারের প্লাস্টিক বোতল বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের অপসারিত চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, “গত বছর থেকে পর্যটক যাতায়াতে বাধ্যবাধকতা থাকায় দ্বীপবাসী আর্থিক সংকটে পড়েছেন। পর্যটকদের রাত্রিযাপনের সুযোগ না থাকায় আবাসন প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মনে প্রশান্তি নেই। যে পরিমাণ পর্যটক যাবেন, তা গড় হিসেবে সব প্রতিষ্ঠান সেবার সুযোগ পাবেন না। এতে, ধীরে ধীরে পর্যটন সেবার উপলক্ষ্যগুলো বিক্রি কিংবা অপসারণের উদ্যোগ চলছে।”