এনসিপি শুধুমাত্র কয়েকটি আসনের জন্য জোট করবে না: সারজিস আলম

টাঙ্গাইলে জেলা সমন্বয় সভায় অংশ নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, পার্টিটি শুধুমাত্র কিছু নির্দিষ্ট আসনের বিনিময়ে জোট চালাবে না—জোট নির্ভর করবে নির্দিষ্ট শর্তপূরণে।

সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলায় তিনি এসব মন্তব্য করেন।

জোটগতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রসঙ্গ তুলে সারজিস আলম বলেন, “এটি নির্ভর করবে বেশ কিছু বিষয়ের ওপর। যে রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে থাকা মৌলিক সংস্কারগুলো বাস্তবায়নে নিশ্চয়তা দেবে, শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধাদের নিরাপত্তা ও পুনর্বাসনের প্রতিশ্রুতি দেবে এবং কাজে ও কথায় মিল থাকবে, তাদের সঙ্গে আমাদের জোট হতে পারে। এখন পর্যন্ত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে। এনসিপি যদি এই প্রতিশ্রুতিগুলো পায়, তাহলে কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট হতে পারে। যদি না পায়, তাহলে শুধুমাত্র কয়েকটি আসনের জন্য এনসিপি জোট করবে না। এনসিপি একেকভাবে নির্বাচন করবে।”

শাপলা চিহ্ন ধরে নির্বাচনে অংশ নেওয়া সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি বলেন, “আমরা মনে করি শাপলা না দেওয়ার কোনো প্রশ্নই নেই। যেহেতু আইনগত বাধা নেই। আমাদের জায়গা থেকে শাপলা আদায় করে নেব। যখন একটা জিনিস আমার প্রাপ্য, এনসিপির প্রাপ্য, যখন সেটা দেওয়া হবে না, অবশ্যই স্বেচ্ছাচারী আচরণের বিরুদ্ধে আমার লড়াই করতে হবে। এনসিপির যদি প্রয়োজন হয়, এনসিপি এই লড়াইটা রাজনৈতিকভাবে রাজপথে করবে। যদি প্রয়োজন হয় বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ৪৯৫টি উপজেলার এনসিপির অভ্যুত্থানের নেতৃবৃন্দ রাজপথে নেমে এই অধিকারের জন্য লড়াই করবে। আমরা আমাদের জায়গা থেকে মনে করি আমরা শাপলা প্রতীক নিয়েই আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করব।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা মনে করি অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর চাওয়া-পাওয়া শুধুমাত্র নির্বাচনকেন্দ্রিক হতে পারে না। আমরাও চাই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উত্তরণের জন্য নির্বাচন হোক। ফেব্রুয়ারিতেও হলে সমস্যা নেই।”

জুলাই সনদকে নিয়েও সরকার ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার প্রতি কটাক্ষ করে সারজিস আলম বলেন, “যে জুলাই সনদে বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে একটি রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর নেই, সেই জুলাই সনদে অভ্যুত্থানে সামনের সারিতে থেকে অভ্যুত্থানকে সংগঠিত করেছে এবং নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের প্রতিনিধিত্ব করা রাজনৈতিক দলের স্বাক্ষর নেই, আমরা মনে করি ওই অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সামগ্রিক মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। এই জুলাই অভ্যুত্থানের পরে এই জুলাই সনদ এখন পর্যন্ত অসম্পূর্ণ জুলাই সনদ। এই জুলাই সনদ দিয়ে দায়সারা ভাব নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে পারে না। তাদেরকে এই দায়বদ্ধতা পূরণ করে নির্বাচনের কথা চিন্তা করতে হবে।”