মায়ের দাফন নিয়ে দুই গ্রুপে বিভক্ত ভাইদের সংঘর্ষ, একজন নিহত


মায়ের দাফন নিয়ে দুই গ্রুপে বিভক্ত ভাইদের সংঘর্ষ, একজন নিহত

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের বিরামপুর গ্রামে পারিবারিক বিবাদের জেরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত এবং উভয়পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। শনিবার (২৫ অক্টোবর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এই সংঘর্ষ দফায় দফায় চলেছে। এতে দশটির বেশি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুরের শিকার হয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গ্রামের আধিপত্য নিয়েই দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। এই বিবাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে হাসিম মিয়ার পরিবার, যাদের ছয় সন্তান দুই গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েন। চারজন সন্তান হারুনপন্থি গ্রুপের সঙ্গে যুক্ত হন, অন্য দুইজন সাচ্চু পক্ষের হয়ে অবস্থান নেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয়েছে, শুক্রবার রাতে আব্দুল হাসিম মিয়ার স্ত্রী মোসামাৎ বিবি বেগম মারা গেলে। ছোট ছেলে নুরুল হক কুমিল্লা থেকে বাড়িতে আসার আগেই হারুনপন্থি চার ভাই তাঁর মায়ের দাফন সম্পন্ন করেন। বাড়িতে পৌঁছানোর পর নুরুল হক ও তার ভাই জহিরুল হক এই বিষয় নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

এরপর বাগবিতণ্ডা রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে রূপ নেয়, যা দ্রুত কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে সাচ্চু পক্ষের নাসির উদ্দিন (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হন। উভয়পক্ষ টেঁটা, তীর, ইট-পাটকেল এবং কমপক্ষে ৩০টি ককটেল ব্যবহার করে। এর ফলে বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

নিরাপত্তার কারণে গ্রামের বাসিন্দারা বসতবাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। স্থানীয় আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, “এ ধরনের নৈরাজ্য আমরা আর দেখতে চাই না। গ্রামে আতঙ্ক বিরাজ করছে।”

নিহতের মেয়ে সাবিনা আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।” নিহতের স্ত্রী দেলুয়ারা বেগমও একই দাবি জানিয়েছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ওসি আজহারুল ইসলাম জানান, পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পরে সেনাবাহিনী অবস্থান স্থাপন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এখনো এলাকায় থমথমে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই ঘটনার বিষয়ে থানায় কোনো মামলা দায়ের হয়নি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×