জুবায়েদ হত্যাকাণ্ড

‘তুমি না মরলে আমি মাহিরের হবো না’: বর্ষা


‘তুমি না মরলে আমি মাহিরের হবো না’: বর্ষা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য জুবায়েদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আজ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করে।

আজ মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১২টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের আয়োজন করে। এতে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) এস. এন. মোঃ নজরুল ইসলাম, পিপিএম, বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

তিনি জানান, বর্ষা ও মাহিরের দীর্ঘ দেড় বছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। এর মাঝেই জুবায়েদ বর্ষাকে টিউশন পড়াতে গিয়ে তার সাথেও প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয়। এ বিষয়টি বর্ষার বয়ফ্রেন্ড মাহির জানতে পারলে তাদের মাঝে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। ফলে জুবায়েদকে হত্যার জন্য বর্ষা ও মাহির ১ মাস যাবৎ পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনামাফিক গত পরশু ১৯ অক্টোবর, জুবায়েদের টিউশনে যাওয়ার দিন থাকলে বর্ষা বিকাল ৪:৩০ ঘটিকায় জুবায়েদ হোসেনকে কল করে তার লোকেশন জানতে চায়। জুবায়েদ তাকে জানায় সে নূরবক্স লেন রোডে আছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে বর্ষা তার বয়ফ্রেন্ড মাহির এবং মাহিরের বন্ধু আয়লানসহ তার বাসার ২য় তলায় অবস্থান নেয়। পথিমধ্যে জুবায়েদ বর্ষার বাসায় ঢুকলে ২য় তলার সিঁড়িতে অবস্থানরত মাহির এবং তার বন্ধু আয়লান জুবায়েদের সাথে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় এবং এক পর্যায়ে মাহির জুবায়েদকে গলার নিচে ছুরিকাঘাত করে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে লালবাগ জোনের ডিসি মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, “জুবায়েদ তখনো মারা যায়নি। বাঁচার জন্য দুই তলা থেকে উপরে ওঠে। তিন তলায় দাঁড়িয়ে ছিল বর্ষা। তখন বর্ষাকে দেখে জুবায়েদ বলে, ‘আমাকে বাঁচাও।’ কিন্তু বর্ষা বলে, ‘তুমি না মরলে আমি মাহিরের হবো না।’ বর্ষা তার মৃত্যু কনফার্ম করে যায়। তখন জুবায়েদ বাঁচার জন্য দরজায় নক করেও কারো সাড়া পায়নি।”

ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, জুবায়েদের বর্ষার সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো ৩-৪ মাসের। জুবায়েদ তাকে ভালোবাসতো, কিন্তু বর্ষার ছিলো ডাবল টাইমিং। এ ঘটনায় বর্ষা নিজেকে বাঁচাতে ৩ তলা থেকে ৫ তলা অবধি চিল্লাতে থাকে এবং বলতে থাকে, “স্যারকে কে মারলো?”

হত্যাকাণ্ডে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ইতোমধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে এবং জুবায়েদের বড় ভাই ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আসামিরা হলেন: মাহির রহমান, বার্জিস শাবনাম বর্ষা এবং ফারদিন আহমেদ আয়লান।

আজ বিকাল ৩টায় তাদের আদালতে তোলা হবে।

জুবায়েদ হোসেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। একই সাথে তিনি জবিস্থ কুমিল্লা জেলা ছাত্র কল্যাণের সভাপতি ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য ছিলেন। গত এক বছর ধরে জুবায়েদ হোসেন পুরান ঢাকার আরমানীটোলার নূর বক্স লেনে রৌশান ভিলা নামের বাসায় বর্ষা নামের ছাত্রীকে ফিজিক্স, কেমিস্ট্রি ও বায়োলজি পড়াতেন।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×