অবশেষে পাবনা শহর অংশে ইছামতী নদী খনন শুরু; উচ্ছ্বসিত নদীপাড়ের মানুষ


MARCH NAEEM 2ND/Pabna Nodi Khonon Pic-03.jpg

অবশেষে পাবনা শহর অংশে পাঁচ কিলোমিটারব্যাপী ইছামতী নদী খনন কাজ শুরু হয়েছে। শনিবার (০৩ মে) সকালে শহরের লাইব্রেরী বাজার পুরাতন ব্রীজের পাশে খনন কাজ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মফিজুল ইসলাম।

এ সময় পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার, সেনাবাহিনী সদস্য ও নদী উদ্ধার আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় খনন কাজকে স্বাগত জানিয়ে নদী পাড়ে মানববন্ধন করেন ইছামতী নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সদস্যরা। তারা সব জটিলতা কাটিয়ে দ্রুত খনন কাজ শেষ করে নদীটিকে প্রবাহমান করার দাবি জানান। কোনো অপশক্তি দখলদার যেন এই কাজ বন্ধ করতে না পারে সে দাবিও তুলে ধরেন তারা।

এদিকে, নদী খনন কাজ শুরু হওয়ায় উচ্ছসিত পাবনাবাসী। তাদের প্রত্যাশা, আবার আগের স্রোতস্বীনি ইছামতী হবে। নদীপাড়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। প্রাণ ফিরবে নদী ও মানুষের।

ইছাসতী নদী উদ্ধার আন্দোলন পাবনার সভাপতি এস এম মাহবুব আলম বলেন, ‌আজ আমরা অনেক খুশি। আমাদের দীর্ঘ ১০ বছরের আন্দোলন আজ স্বার্থক হচ্ছে। ইছামতীতে আবার প্রাণ ফিরবে, আমরা নদীতে চলাচল করবো, নতুন প্রজন্ম একটি সুন্দর পাবে এর চেয়ে আর আনন্দের কি হতে পারে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কারো কাছে মাথা নত না করে আইন মেনে নদী খনন করে পাবনাবাসীর স্বপ্ন পূরণ করছে এজন্য তারা প্রশংসার দাবিদার।

উল্লেখ্য, নদীকে বাঁচাতে ২০১৬ সালে ‘ইছামতী নদী উদ্ধার আন্দোলন’ এর ব্যানারে আন্দোলনে নামে পাবনাবাসী। কিন্তু অবৈধ দখলদারদের মামলা আর রাজনৈতিক প্রভাবে গতি পায়নি নদী উদ্ধার কার্যক্রম। কয়েকদফা শুরু হলেও মুখ থুবরে পড়ে উদ্ধার কাজ।

অবশেষে ইছামতী নদী পুনরুজ্জীবিকরণ প্রকল্প গ্রহণ করে নদীটির প্রাণ ফেরানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। তারই ফলশ্রুতিতে ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে নদী উদ্ধার কাজ শুরু হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চব্বিশ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড। সিএস ম্যাপ অনুযায়ী সাঁথিয়ার জগন্নাথপুরের মাধপুর ক্লোজার পয়েন্ট থেকে খননকাজ শুরু হয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন পয়েন্টে বেশ জোরেসারে এগিয়ে চলেছে প্রকেল্পর কাজ। এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনাও উচ্ছেদ করা হয়েছে।

পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সুধাংশু কুমার সরকার বলেন, ইছামতি নদী প্রবাহমান করতে পদ্মা ও যমুনা নদীর সাথে বিভিন্ন লিংক চ্যানেলগুলো সচল করা হবে। এছাড়া নদীর সৌন্দর্য বর্ধনে বিভিন্ন স্থানে নির্মাণ ও পুন:নির্মাণ করা হবে ছোট বড় ২৩টি সেতু। সেইসঙ্গে মধ্য শহরে নদীর দুইপাড়ে ১০ কিলোমিটার ড্রেন, ১০ কিলোমিটার ওয়াকওয়ে ও ৫৬টি ঘাট নির্মাণ এবং বৃক্ষরোপণ করা হবে।

তিনি আরো জানান, প্রকল্পের আওতায় ইছামতী নদী খনন করা হবে ৩৩ দশমিক ৭৭২ কিলোমিটার। আর কিছু নদী ও  লিংক চ্যানেল মিলিয়ে মোট খনন করা হবে ১১০ দশমিক ২১৬ কিলোমিটার। ইতিমধ্যে নদী খনন কাজ ৫০ ভাগ শেষ হয়েছে। 

ঢাকাওয়াচ২৪ এর খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন ।
ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×