
আমি নির্বাচন করলে মাগুরা-১ আসনে কেউ জিততে পারবে না: সাকিব
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাগুরা-১ আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন পেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। বিপুল ভোটে জয়লাভও করেছিলেন তিনি। তবে ৬ মাসের মাথায় ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তোপের মুখে দেশ ও ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।বিজ্ঞাপন আন্দোলনের সময় দেশের অন্যান্য ক্রিকেটাররা পোস্ট করে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ালেও নীরব ছিলেন সাকিব। যার ফলে এখনও দেশে ফিরতে পারছেন না তিনি। এমনকি হত্যা মামলার আসামিও করা হয়েছে তাকে। এত দিন নিজের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে চুপ থাকলেও এবার মুখ খুলেছেন সাকিব। সম্প্রতি দেশের বেসরকারি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেন, ‘আমি মাত্র মাস ছয়েকের মতো রাজনীতিতে ছিলাম। নির্বাচনের পর সম্ভবত ৩ দিন মাগুরায় গিয়েছি। ৪-৫ মাসই ক্রিকেট নিয়ে ছিলাম। রাজনীতি করার বা পরিস্থিতি বোঝার সময় পেলাম কই? তখনকার প্রধানমন্ত্রী আমাকে বললেন, তোমাকে রাজনীতি করতে হবে না, ক্রিকেটে মনোযোগ রাখো। আমি সেই পরামর্শ মেনে চললাম।’ ‘আর কোনো এজেন্ডা তো ছিল না। আমার ভাবনাই ছিল যত দিন পারি ক্রিকেট খেলে যাব। আমি চাইলেই ক্রিকেট ছেড়ে ফুলটাইম পলিটিশিয়ান হতে পারতাম। আমার লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা। এরপর আস্তে ধীরে বুঝেশুনে রাজনীতিতে মনোযোগ দিতাম। হুট করে রাজনীতিতে জড়িয়ে যেতে চাইনি। মানুষের দুটি মৌলিক অধিকার আছে- একটা ভোট দেওয়া আরেকটা নিজের পছন্দের রাজনৈতিক দলে যোগ দেওয়া।’ সাকিবের রাজনীতিতে আসা অনেকেই স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি। তবে তার সিদ্ধান্তকে সঠিক বলে দাবি করেছেন এই তারকা ক্রিকেটার। এমনকি মাগুরায় এখনও নির্বাচন করলে তিনিই জয়লাভ করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। সাকিবের ভাষ্য, যারা বলছে রাজনীতিতে আসা ঠিক হয়নি তাদের বেশিরভাগই মাগুরার বাইরের। মাগুরার ভোটাররা বিশ্বাস করছে কোনটা- এটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারা আমাকে না চাইলে ভোট দেবে না। ব্যাপারটা তো খুব সিম্পল। আমি যদি আজও নির্বাচনে দাঁড়াই, মাগুরার লোকজন আমাকে ভোট দিতে আসবে। কারণ, তারা বিশ্বাস করে আমি তাদের জন্য কিছু করতে পারব। তিনি বলেন, ‘আমি বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে চেয়েছি। আপনি সিস্টেমের মধ্যে না থাকলে সিস্টেম পরিবর্তন করবেন কীভাবে? এখন যারা দেশ চালাচ্ছে, সিস্টেমের বাইরে থাকলে কি কোনো পরিবর্তন আনতে পারত? এটা মানুষের ব্যাপার। আমি মনে করি যখন রাজনীতিতে যোগ দিয়েছি তখন ব্যাপারটা ঠিক ছিল। আমি এখনও বিশ্বাস করি আমি ঠিক ছিলাম।’ নিজের ভাবনা নিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘আমার ভাবনা ছিল মাগুরার মানুষের জন্য কাজ করা। আমার মনে হয়েছে ওদের জন্য কিছু করতে পারব, তারাও আমাকে চায়। আমার নির্বাচনী এলাকায় সুষ্ঠু ভোট হয়েছে। আমার মনে হয় না কেউ সন্দেহ প্রকাশ করবে যে আমি যদি আবারও দাঁড়াই আবার জয়ী হবো।’

বিসিবিতে দুদকের হানা, মিলেছে দুর্নীতির প্রমাণ
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগের সত্যানুসন্ধানে গতকাল মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিসিবি কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন দুদক কর্মকর্তারা। তৃতীয় বিভাগ বাছাই টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা, বিপিএলের টিকিট বিক্রিতে অসামঞ্জস্য এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে কনসার্ট আয়োজন করে অর্থ লোপাট করার অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিন তদন্তে নেমেছে দুদক। সেখানে বিপিএলের টিকিট বিক্রি ও তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রাথমিক প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযান পরিচালনা শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় সংস্থাটি। দুদকের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, একাদশ বিপিএলে ১৩ কোটি টাকার টিকিট বিক্রি হলেও তৃতীয় থেকে দশম বিপিএলে ১৫ কোটি টাকা আয় দেখানো হয়েছে, যা বিগত বিপিএলগুলোতে ব্যাপক আর্থিক অনিয়মের ইঙ্গিত বহন করে বলে সন্দেহ তদন্ত-সংশ্লিষ্টদের। দুদক জানায়, “ক্রিকেট সেলিব্রেট মুজিব ১০০” বাস্তবায়নে ২৫ কোটি ৩৮ লাখ টাকা খরচ দেখানো হলেও প্রকৃতপক্ষে মাত্র ৭ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল- এমন তথ্য পায় দুদক টিম। এক্ষেত্রে প্রায় ১৯ কোটি টাকার আর্থিক অনিয়মের তথ্য প্রাথমিকভাবে পাওয়া যায়। অভিযানকালে অভিযোগগুলোর প্রাথমিক সত্যতার পরিপ্রেক্ষিতে অধিকতর যাচাইয়ের লক্ষ্যে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। রেকর্ডপত্র যাচাই-বাছাই করে কমিশন বরাবর প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানায় সংস্থাটি। বিগত বছরগুলোতে তিন-চারটি নামসর্বস্ব ক্লাবের আবেদন দেখিয়ে বাছাই লিগে দুর্নীতি ও অনিয়ম হওয়ার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানায় দুদক। বিসিবির সভাপতি ও বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ বিপিএল শেষে সংবাদ সম্মেলনে জানান, বিগত আট বছরে টিকিট বিক্রি থেকে আয়ের অসামাঞ্জস্য খতিয়ে দেখা হবে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে অভ্যন্তরীণ তদন্তের উদ্যোগও নেন তিনি। দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন বলেন, ‘আগে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ নিয়ে টিকিটের ব্যাপারে চুক্তি করা হতো। তারা টিকিট বিক্রি করে বিসিবিকে একটি অংশ দিত। গত ৩-৪ আসরে বিসিবি নিজ থেকে টিকিট বিক্রি করছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে একাদশ আসরে আমরা দেখেছি, ১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছে। আট বছরে যেখানে ১৫ কোটি, এক বছরেই ১৩ কোটি। রেকর্ডপত্র আমরা পেয়েছি। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসংগতি এখানে।’ বিপিএলের টিকিট ব্যাংক, অনলাইন এবং অভ্যন্তরীণভাবে বিক্রি হতো। বেশি টিকিট বিক্রি হতো ভাউচার দিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে। বিসিবির অ্যাকাউন্টস বিভাগ নগদ অর্থ নিয়ে টিকিট বিক্রির দায়িত্ব পালন করেছে। অভিযোগ আছে, অভ্যন্তরীণ শাখা থেকে বিক্রি করা টিকিটের টাকা বোর্ডের কোষাগারে জমা হতো না। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত একজন কর্মকর্তা রাজসাক্ষী হতে পারেন বলে জানা গেছে।’ তৃতীয় বিভাগ বাছাই টুর্নামেন্টের ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করার পেছনে অসৎ উদ্দেশ্য থাকার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন দুদক কর্মকর্তারা। মূলত ২০১৪-১৫ মৌসুমে অংশগ্রহণ ফি পাঁচ লাখ টাকা করা হলে একাডেমিগুলোর অংশগ্রহণ ব্যাপকহারে কমে যায়। পাঁচ থেকে সাতটি একাডেমি নিয়ে হয়েছে বাছাই লিগ। বিসিবির পট পরিবর্তনের পর বর্তমান সভাপতি ফারুক আহমেদ অংশগ্রহণ ফি এক লাখ টাকা করায় ৬০টি একাডেমি নিবন্ধন করে। বাছাই লিগের আবেদন ফি বাড়িয়ে দলের অংশগ্রহণ কমার পেছনে বোর্ডের বা ব্যক্তিগত কোনো প্রভাব ছিল কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হবে- জানান আল আমিন। তিনি বলেন, ‘তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগে এবার ৬০টি দল অংশ নিয়েছে। আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। আমরা কাগজপত্র সংগ্রহ করেছি, এক্ষেত্রে ব্যক্তিগত বা বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখার জন্য। এমনিতেই বোঝা যাচ্ছে, আগে হয়তো অংশগ্রহণের স্বাধীনতা ছিল না, কোনো চাপ ছিল। যে কারণে দলগুলো আসত না। আমরা বিস্তারিত যাচাই-বাছাই করে বুঝতে পারব এখানে কী অসংগতি ছিল।’ ২০২০-২১ সালে মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে কনসার্টের আয়োজন করে বিসিবি। ওই আয়োজনে ব্যয়ের হিসাবে গরমিল রয়েছে বলে জানান আল আমিন। তার মতে, ‘মুজিব শতবর্ষের ব্যয়ের হিসাবে কিছু অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ডপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো যাচাই-বাছাই করে আমরা আমাদের এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করব। সেই অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে।’ দুদকে জমা হওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখিয়ে অর্থ লোপাট করা হয়েছে। আল আমিনের মতে, ‘কনসার্টসহ যে আয়োজন হয়েছিল, সেখানে সব মিলিয়ে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। আমরা এই অভিযোগ পেয়েছি। আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকা সরানো হয়েছে বা কিছু হয়েছে। এরকম অভিযোগ আমরা পেয়েছি।’ বিসিবির কাছে খরচের সকল রেকর্ডের তথ্য চেয়েছেন কর্মকর্তারা। তিনি বলেন, ‘বিসিবির অর্থ বিভাগের কাছ থেকে কাগজপত্র চেয়েছি। কিছু কাগজ পর্যালোচনায় আমরা বুঝতে পেরেছি, এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার হিসাবে অস্বাভাবিকতা আছে। এছাড়া টিকিট বিক্রির ২ কোটি টাকাও এখানে দেখানো হয়নি। তাই এখানে টাকা আত্মসাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। সব কাগজপত্র হাতে পেলে সুনির্দিষ্ট করে আমরা বলতে পারব।’ দুদক পরিচালিত দেড় ঘণ্টার অভিযানে কর্মকর্তাদের সঙ্গে ছিলেন বিসিবির সিইও নিজাম উদ্দিন চৌধুরী। তদন্ত কমিটিকে সর্বাত্মক সহযোগিতা এবং ডকুমেন্টস সরবরাহ করা হবে বলে জানান তিনি। সিইও বলেন, ‘যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, এ সবের ব্যাপারে আমাদের কাছে যত কাগজপত্র আছে, সব বিভাগকে সেগুলো দুদকের কাছে দিয়ে সহযোগিতার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দিক থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে। এখন যেহেতু অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে, তাই এর বেশি কিছু বলা উচিত হবে না।’ গতকাল মঙ্গলবার বিকেল দুদকের চাহিদা মতো কাগজপত্র রেকর্ড থেকে বের করে ফাইল করা হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ভুল সিদ্ধান্তের দায় স্বীকার করলেন সাকিব
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ও সফল অলরাউন্ডারদের একজন সাকিব আল হাসান। তবে মাঠের বাইরের ঘটনা প্রায়ই তাকে এনে দেয় বিতর্কের মুখে। গত বছর জুলাই-আগস্টে যখন বাংলাদেশ উত্তাল ছিল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে, ঠিক সেই সময় সাকিব ছিলেন বিদেশে-তাও ঘুরছিলেন কানাডার একটি সাফারি পার্কে। ছবি দিয়েছিলেন স্ত্রী শিশির। এরপর থেকেই দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে তার ভূমিকা নিয়ে। একটি ইংরেজি দৈনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিব সেই সময়কার পরিস্থিতি এবং নিজের আচরণ নিয়ে কথা বলেছেন খোলামেলাভাবে। ছবিটি তিনি নিজে পোস্ট না করলেও দায় নিচ্ছেন পুরোপুরি। বলছেন, ‘এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত পারিবারিক ভ্রমণ ছিল। এখন বুঝতে পারছি, একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমার আরও সচেতন হওয়া উচিত ছিল।’ তিনি আরও বলেন, তখন তার মনোযোগ ছিল শুধুই ক্রিকেটে, আমাকে কখনো রাজনীতিতে জড়াতে বলা হয়নি, বরং সব সময় বলা হয়েছে, ‘শুধু ক্রিকেট খেলো।’ আমি সেটাই করেছি।’ সেই ছবিটি যে এমন তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি করবে, তা বুঝে উঠতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সাকিব। অনেকে কষ্ট পেয়েছেন, সেটিও স্বীকার করেছেন, ‘এখন বুঝতে পারছি, ওটা একটা ভুল ছিল। এমনকি অন্যরাও একই রকম জিনিস পোস্ট করলেও, আমারটা বেশি মনোযোগ পেয়েছে।’ কানাডায় গ্লোবাল টি-টোয়েন্টি লিগ চলাকালে এক দর্শকের সঙ্গে সাকিবের বাগ্বিতণ্ডা নিয়েও দিয়েছেন ব্যাখ্যা। ওই দর্শক কেন তিনি কিছু করছেন না, সে নিয়ে বারবার প্রশ্ন করলে সাকিবও পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘ভাই, আপনি কী করেছেন?” এখান থেকেই উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। সাকিবের ভাষায়, ‘আমি তো ওই সময়ের ঘটনাগুলো উপেক্ষা করছিলাম না। আমি শুধু জানতাম না কী করতে হবে, কোনটা কার্যকর হবে।’ তিনি মনে করেন, ফাঁকা বুলি নয়, বরং দায়িত্বশীল ভূমিকা জরুরি, ‘আমি যদি সরাসরি পরিবর্তন আনতে না পারি, তাহলে ফাঁকা বুলি আওড়ে কী লাভ!’ -এই ছিল সাকিবের বক্তব্য। রাজনীতিতে জড়িয়ে এখন সাকিব ক্রিকেট থেকে অনেকটা দূরে। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত এই অলরাউন্ডার শেষ টেস্ট খেলতে পারেননি ঘরের মাঠে, খেলেননি পাকিস্তান ও দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও। কবে ফিরবেন মাঠে, সেই প্রশ্ন এখনো রয়ে গেছে অনিশ্চয়তায়।

সিলেট পৌঁছেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল
বাংলাদেশের বিপক্ষে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে সিলেট এসে পৌঁছেছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল। বুধবার (১৬ এপ্রিল) দুপুরে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান উইলিয়ামস-ক্রেইগ আরভিনরা। এয়ারপোর্টে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে জিম্বাবুয়ে দলকে। বডি ল্যাংগুয়েজ আর চোখে মুখে জয়ের জন্য কতটা মরিয়া সেটা দেখে সহজেই আঁচ করা যায়। এবার পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই বাংলাদেশে খেলতে এসেছে সফরকারীরা। চোট কাটিয়ে জিম্বাবুয়ের টেস্ট দলে ফিরেছেন উইলিয়ামস। ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন আরভিনও। অভিজ্ঞ দুই ক্রিকেটার আরভিন ও উইলিয়ামসের পাশাপাশি বাংলাদেশ সফরে ফেরানো হয়েছে বাঁহাতি স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজাকে। তরুণ পেসার নিউম্যান নিয়ামুরির বদলে সুযোগ পেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে ১৫ সদস্যের দল নিয়ে বাংলাদেশে দুই টেস্ট খেলতে এসেছে জিম্বাবুয়ে। লম্বা সময় পর বাংলাদেশে টেস্ট খেলতে এলো জিম্বাবুয়ে। সবশেষ ২০২০ সালে বাংলাদেশে টেস্ট খেলেছিল তারা। যদিও সেবার ইনিংস ও ১০৬ রানে হেরেছিল সফরকারীরা। আগামী ২০ এপ্রিল থেকে সিলেটে হবে প্রথম টেস্ট। সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট হবে চট্টগ্রামে ২৮ এপ্রিল থেকে।

ডর্টমুন্ডের কাছে তিন গোল খেয়েও সেমিতে বার্সা
চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালের দ্বিতীয় লেগে বার্সেলোনাকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। তারপরও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নিয়েছে গত আসরের ফাইনাল খেলা দলটি। দুই লেগ মিলিয়ে ৫-৩ গোলের জয়ে শেষ চারে পা রেখেছে হানসি ফ্লিকের বার্সা। কাজটা প্রথম লেগেই সেরে রেখেছিল বার্সেলোনা। ঘরের মাঠে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়েছিল ৪-০ গোলে। যে কারণে দ্বিতীয় লেগে জার্মান ক্লাব ডর্টমুন্ড ৩-১ গোলে জিতলেও সেমিফাইনালে চলে গেছে বার্সা। কারণ দুই লেগ মিলিয়ে এগিয়ে কাতালানরা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) রাতে সিগনাল ইডুনা পার্কে ১১ মিনিটে পেনাল্টি খায় বার্সা। গিরেসি গোল করে এগিয়ে নেন ডর্টমুন্ডকে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান ২-০ করে ডর্টমুন্ড কামব্যাকের স্বপ্ন দেখে। কিন্তু পরেই আত্মঘাতী গোলে ওই স্বপ্ন ভেঙে যায়। ৫৪ মিনিটে বেনসেবাইনি নিজেদের জালে বল পাঠিয়ে দেন। ৭৬ মিনিটের গোলে গিরেসি তার হ্যাটট্রিকসূচক গোলটি করেন। কোয়ার্টার ফাইনালে বার্সার বিপক্ষে এক লেগের জয় ও গিরেসির হ্যাটট্রিকটাই প্রাপ্তি ডর্টমুন্ডের।

সিলেটে পুরো দমে অনুশীলনে জাতীয় দল
সিলেটে টেস্ট ম্যাচকে সামনে রেখে সর্বোচ্চ উজাড় করে দিতে প্রস্তুত হচ্ছেন ক্রিকেটাররা। তার উপর স্বাগতিকের তকমা গায়ে নিয়ে মাঠে নামার বাড়তি সুবিধা তো থাকছেই। অনুশীলনের শুরুর দিনে ১০ ক্রিকেটারের অংশগ্রহণ নিজেদের ঝালিয়ে নেয় টাইগাররা। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) অনুশীলনে বেশ সিরিয়াল ছিলেন টাইগার ব্যাটাররা। এদিন নেটে নিজেদের ঝালিয়ে নিয়েছে মুশফিক মিরাজ লিটনরা। অনুশীলনের দুই সেশনেই ঘাম ঝরিয়েছেন মি: ডিপেন্ডেবল’ মুশফিকুর রহিম। নেটে নাহিদ রানা তাইজুলরা প্রস্তুতি সেড়েছেন পুরো দমে। এদিকে অভিজ্ঞদের নিয়ে চার বছর পর পূর্ণ শক্তির দল নিয়ে বাংলাদেশে আসছে জিম্বাবুয়ে। সব শেষ ২০২০ সালে একমাত্র টেস্ট ম্যাচটি ইনিংসের ব্যবধানে জিতেছিল বাংলাদেশ। এবার দুইটি ম্যাচ হবে ঢাকার বাইরে যার মধ্যে প্রকৃতি কন্যা সিলেটে প্রথম টেস্টে শান্তদের মুখোমুখি হবে দলটি । অনুশীলন শেষে টিম হোটেল ফেরার সময় বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে শান্ত মুমিনুলদের। সব শেষ চার বছর আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ইনিংস ব্যবধানে জয় পেয়েছিলো টাইগাররা। এবারো অনুশীলনে পুরো দলের সিরিয়াসনেস আর বডি ল্যাংগুয়েজ তাই বলছে তবে পাঁচ দিনের এই যুদ্ধে কে হাসবে শেষ হাসি সেটি দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত।

মুজিববর্ষের আয়োজনে ২০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ
মিরপুর শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তিন সদস্য একটি অভিযান পরিচালনা করেছেন। অভিযান শেষে দুদকের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে তারা এই এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করেছেন। বিসিবিতে প্রায় দেড় ঘণ্টার অভিযান পরিচালনার পর সংবাদ সম্মেলনে দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন জানান, তারা তিনটি অভিযোগ পাওয়ায় এই অভিযান পরিচালনা করেছেন। এর মধ্যে দুটি অভিযোগ হলো- বিপিএলের প্রথম ১০ আসরের টিকেট বিক্রির আয়ে অসঙ্গতি। অন্যটি হলো মুজিব শতবর্ষ আয়োজনে বিসিবির অর্থ আত্মসাত। এছাড়া দুদকের প্রধান কার্যালয়ের চিঠিতে জানানো হয়, বিসিবি’র বিভিন্ন ক্রিকেট লিগের বাছাই প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনফোর্সমেন্ট অভিযানের জন্য টিম পাঠানো হয়। দুদকের সহকারী পরিচালক আল আমিন পরে ২০২০-২১ সালে বিসিবির আয়োজিত মুজিববর্ষের অনুষ্ঠানে আয়-ব্যয়ে গড়মিল আছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘মুজিববর্ষের আয়োজনে আয়-ব্যয়ে অস্বাভাবিকতা আছে। এসব অভিযোগের বিষয়ে রেকর্ড-পত্র সংগ্রহ করা হয়েছে। যা যাচাইবাছাই করে এনফোর্সমেন্ট ইউনিটে প্রতিবেদন দাখিল করবো। পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে কমিশন।’ মুজিববর্ষ আয়োজনের অসঙ্গতির প্রসঙ্গে আল-আমিন বলেন, ‘কনসার্টসহ বিসিবির সব আয়োজনে ২৫ কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। তবে আসলে খরচ হয়েছে ৭ কোটি টাকার মতো। এখানে প্রায় ১৯ কোটি টাকার কিছু একটা হয়েছে, এমন অভিযোগ পেয়েছি আমরা। টিকেট বিক্রির ২ কোটি টাকাও দেখানো হয়নি। অর্থ আত্মসাতের পরিমাণ তাই বাড়তে পারে। আমরা এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি। বিসিবির অর্থ বিভাগে কাগজপত্র পেয়েছি। সব কাগজপত্র হাতে পেলে সুনির্দিষ্ট করে বলতে পারবো।’ বিপিএলের টিকেট বিক্রির আয়ে অস্বাভাবিকতা সম্পর্কে দুদকের এই সহকারী পরিচালক জানান, বিসিবি একাদশ আসরে ১৩ কোটি টাকা টিকিট বিক্রি থেকে আয় করেছে। যেখানে আগের আট বছরে আয় ছিল ১৫ কোটি। এখানে অস্বাভাবিকতা আছে। বিস্তারিত যাচাই করলেই বোঝা যাবে কী অসঙ্গতি এখানে আছে। বিসিবির তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে ২০১৪-১৫ মৌসুম থেকে ক্লাব নিবন্ধন ফি ৭৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫ লাখ টাকা করা হয়। এতে টুর্নামেন্টে দলের অংশগ্রহণ কমে। গত ক’বছরে ৫টির বেশি দল তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটে অংশ নেয়নি। অর্থ নিয়ে এই কারসাজির অভিযোগ পুরনো। দুদক জানিয়েছে, আগে ২-৩ বা সর্বোচ্চ ৪ দলের লিগ হতো। এখানে হয়তো কোনো কারণ আছে। কাগজপত্র সংগ্রহ করা হয়েছে, বোর্ডের কোনো প্রভাব ছিল কিনা দেখা হবে। সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজামউদ্দিন চৌধুরী জানান, দুদককে তাদের অনুসন্ধানের বিষয়ে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারত, সূচি ঘোষণা
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে অংশ নিতে বাংলাদেশ সফরে আসছে ভারতীয় দল। আগামী আগস্টে দুই দলের মধ্যে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে সূচিও চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এই সফরে বাংলাদেশের বিপক্ষে তিনটি করে ওয়ানডে, সমসংখ্যক টি-টোয়েন্টি খেলবে ভারতীয় দল। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ১৩ আগস্ট ভারতীয় দল বাংলাদেশে পা রাখবে। ১৭ আগস্ট প্রথম ওয়ানডে মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে। একই ভেন্যুতে পরের ওয়ানডে ২০ আগস্ট। এরপর দুই দল চলে যাবে চট্টগ্রামে। বীরশ্রেষ্ঠ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে তৃতীয় ওয়ানডে। এরপর চট্টগ্রামে ২৬ আগস্ট থেকে শুরু হবে টি-টোয়েন্টি সিরিজ। প্রথম ম্যাচ খেলেই দুই দল ফিরে আসবে ঢাকায়। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শেষ দুটি টি-টোয়েন্টিতে মুখোমুখি হবে দুই দল। ম্যাচ দুটি মাঠে গড়াবে ২৯ এবং ৩১ আগস্ট। এক বিবৃতিতে বিসিবির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সিরিজটি নিয়ে বলেছেন, ‘এই সিরিজটি আমাদের হোম ক্যালেন্ডারের সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ এবং সবচেয়ে প্রত্যাশিত ইভেন্টগুলোর মধ্যে একটি হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। ভারত সকল সংস্করণে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে একটি মানদণ্ড স্থাপন করেছে এবং উভয় দেশের লক্ষ লক্ষ ক্রিকেটপ্রেমী এই প্রতিযোগিতাটি উপভোগ করবেন।’ তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ এবং ভারত বেশ কয়েকটি প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেছে এবং আমি নিশ্চিত যে এটি আরেকটি কঠিন এবং বিনোদনমূলক সিরিজ হবে।’
মার্চ মাসের সেরা শ্রেয়াস আইয়ার
ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিততে অন্যতম মুখ্য ভূমিকা ছিল শ্রেয়াস আইয়ারের। যার স্বীকৃতি পেয়েছেন আইসিসির মার্চ মাসের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে। পুরস্কারটি জিততে তিনি পেছনে ফেলেছেন নিউজিল্যান্ডের জ্যাকব ডাফি ও রাচিন রবীন্দ্রকে। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক ছিলেন আইয়ার। তুলেছেন ২৪৩ রান। আইয়ারের এই পুরস্কারে ব্যাক টু ব্যাক মাসসেরার স্বীকৃতি পেয়েছে ভারত। ফেব্রুয়ারিতে সেরা হয়েছিলেন শুবমান গিল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে মিডল অর্ডারে মুখ্য ভূমিকা রেখেছেন আইয়ার। মার্চে তিন ম্যাচে ৫৭.৩৩ গড়ে তুলেছেন ১৭২ রান। স্ট্রাইক রেট ছিল ৭৭.৪৭। তার মধ্যে ছিল দর্শনীয় কিছু ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে খেলেছেন ৭৯ রানের ইনিংস। পরে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬২ বলে ৪৫ ও ফাইনালে কিউইদের বিপক্ষে খেলেছেন ৪৮ রানের কার্যকরী ইনিংস। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হাল ধরার সঙ্গে জুটি গড়ার সামর্থ্য ভারতকে শিরোপা জিততে সহায়তা করেছে। মাসসেরা হয়ে আইয়ার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন, ‘আইসিসি প্লেয়ার অব দ্য মান্থ হয়ে আমি সত্যিকার অর্থেই নিজেকে সম্মানিত মনে করছি। এই স্বীকৃতি আমার জন্য অবিশ্বাস্যরকমের বিশেষ কিছু। এমনটা পেলাম সেই মাসে,যেবার আমরা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছি। এই মুহূর্তটি আমি আজীবন মনে রাখবো।’

বিকেলে ঢাকায় আসছে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দল
গতবছর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে দুটি টেস্ট খেলার কথা ছিল বাংলাদেশের। টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপ সামনে থাকায় তখন সিরিজটি স্থগিত করা হয়েছিল। এবার গড়াতে চলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজটি। চলতি মাসে টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসছে জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ খেলার জন্য আজ ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশে পা রাখবে জিম্বাবুয়ে দল। ক্রেইগ আরভিনের নেতৃত্বাধীন দলটি রাতে ঢাকায় অবস্থান করে পরদিন বুধবার সকালে প্রথম টেস্টের ভেন্যু সিলেটে যাবে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) জিম্বাবুয়ে দলের সফরসূচি জানিয়েছে, জিম্বাবুয়ে দল আজ (মঙ্গলবার, ১৫ এপ্রিল) বিকেল ৫:২০ মিনিটে বাংলাদেশে এসে পৌঁছাবে। দলটি ঢাকায় রাত্রিযাপন করে ১৬ এপ্রিল সকালে সিলেটের উদ্দেশ্যে উড়ে যাবে। দুই দলের প্রথম ম্যাচ শুরু হবে ২০ এপ্রিল, সিলেটে শুরু হবে প্রথম টেস্ট। দ্বিতীয় ম্যাচটি শুরু হবে ২৮ এপ্রিল থেকে, এই ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের বাংলাদেশ দল- নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মাহমুদুল হাসান জয়, সাদমান ইসলাম, জাকির হাসান, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহিদুল ইসলাম অংকন, জাকের আলি অনিক, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ, খালেদ আহমেদ, তানজিম হাসান সাকিব। বাংলাদেশ সফরের জন্য জিম্বাবুয়ে টেস্ট স্কোয়াড- ক্রেগ আরভিন (অধিনায়ক), ব্রায়ান বেনেট, জনাথন ক্যাম্পবেল, বেন কুরান, ট্রেভর গ্যান্ডু, ওয়েসলি মাধভেরে, ওয়েলিংটন মাসাকাদজা, ভিনসেন্ট মাসেকেসা, নিয়াশা মায়াভো, ব্লেসিং মুজারাবানি, রিচার্ড এনগারাভা, ভিক্টর নিয়াউচি, তাফাদজওয়া সিগা, নিকোলাস ওয়েলচ, শন উইলিয়ামস

ব্যালন ডি’অর পাওয়ার র্যাঙ্কিং: কর্তৃত্ব বার্সেলোনার হাতে
লিভারপুল চ্যাম্পিয়ন্স লিগ থেকে বিদায় নেওয়ায় মোহামেদ সালাহ ব্যালন ডি’অর পাওয়ার র্যাঙ্কিং থেকে পিছিয়ে গেছেন। লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগে রিয়াল মাদ্রিদ ব্যাকফুটে থাকায় একই দশা কিলিয়ান এমবাপ্পেরও। লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ একাধিক শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রেখেছে বার্সেলোনা, পিএসজি, বায়ার্ন মিউনিখ ও ইন্টার মিলান। এর মধ্যে গোল, গোলে সহায়তা ও ভালো খেলার হিসেবে কাতালান ক্লাবটির ফুটবলাররা এগিয়ে থাকায় ব্যালন ডি’অরের পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ের কর্তৃত্ব দলটির ফুটবলারদের হাতে। সংবাদ মাধ্যম গোল সর্বশেষ ব্যালন ডি’অরের যে পাওয়ার র্যাঙ্কিং দিয়েছে তাতে সেরা চারের তিনজন বার্সার। তারা হলেন- রাফিনিয়া, লামিনে ইয়ামাল ও রর্বাট লেভানডভস্কি। তাদের সঙ্গে লড়াই জমিয়ে তুলেছেন পিএসজির সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড উসমান ডেম্বেলে। গোলের ব্যালন ডি’অর পাওয়ার র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষে আছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রাফিনিয়া। তিনি ২০২৪-২৫ মৌসুমে ৩৩ গোল করেছেন, ২২ গোলে সহায়তা দিয়েছেন। এরই মধ্যে সুপারকোপা দে স্পেন জিতেছেন। সামনে কোপা দেল রে’র ফাইনাল খেলবেন। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শেষ চারে এক পা দিয়ে রেখেছে বার্সা। লা লিগার পথেও এগিয়ে বার্সা। দুইয়ে আছেন পিএসজির উসমান ডেম্বেলে। ফ্রান্স ফরোয়ার্ড মৌসুমে গোল করেছেন ৩৪টি। নয় গোলে সহায়তা দিয়েছেন। লিগ শিরোপা নিশ্চিত করে ফেলেছেন, ট্রফি দে চ্যাম্পিয়ন জিতেছেন। রাফিনিয়ার মতো লিগ, চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের সুযোগ আছে বার্সার দুই তারকা ইয়ামাল ও লেভার। তবে গোলের হিসেবে তারা পিছিয়ে আছেন। ইয়ামাল যেমন ১৫ গোল করেছেন। তবে সহায়তা দিয়েছেন ২২ গোলে। বার্সা স্ট্রাইকার লেভা ৪০ গোল করেছেন। তবে সহায়তা দিয়েছেন ৫ গোলে। র্যাঙ্কিংয়ে পাঁচে আছেন মো সালাহ। লিভারপুল আর এক জয় পেলে লিগ শিরোপা ঘরে তুলবে। দলের এই যাত্রায় সালাহ ৩৫ গোল করেছেন, ২৪ গোলে সহায়তা দিয়েছেন। ছয়ে আছেন বার্সার মিডফিল্ডের প্রাণভ্রোমরা পেদ্রি। কিলিয়ান এমবাপ্পে রিয়ালের শিরোপার মতো র্যাঙ্কিংয়েও পিছিয়ে গেছেন। ব্যালন ডি’অরের ভালো সম্ভাবনা আছে হ্যারি কেইনের। ইন্টার বাধা পেরিয়ে বায়ার্ন শেষ চারে যেতে পারলে র্যাঙ্কিংয়ে উপরে চলে আসবেন ইংলিশ স্ট্রাইকার কেইন। তিনি মৌসুমে ৩৯ গোল করেছেন, ১২ গোল করিয়েছেন। সেরা দশের পরের দুই জায়গা যথাক্রমে ইন্টারের লওতারো মার্টিনেজ ও রিয়ালের জুড বেলিংহামের দখলে।

এবার সতীর্থ আলবাকে কামড়ে দিলেন সুয়ারেজ
যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে লিওনেল মেসির সঙ্গে ইন্টার মায়ামিতে খেলছেন লুইস সুয়ারেজ। ওই দলে আছেন তাদের বার্সার সাবেক সতীর্থ জর্ডি আলবা ও সার্জিও বুসকেটস। এর মধ্যে লস এঞ্জেলেসের বিপক্ষে গত বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপে খেলতে নামে ইন্টার মায়ামি। ম্যাচে ছিলেন সাবেক বার্সা ত্রয়ী মেসি-সুয়ারেজ ও আলবা। ম্যাচটি ইন্টার ৩-১ গোলে জিতেছে। ওই ম্যাচের ৮৯ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যাতে দেখা গেছে সতীর্থ জর্ডি আলবার আঙুলে কামড়ে দিয়েছেন সুয়ারেজ। ভিডিওতে দেখা যায়, জটলার মধ্যে সতীর্থ আলবার কাঁধে হাত দিয়ে জোরে চাপ দেন সুয়ারেজ। এতে ব্যথা পেয়ে আলাবা তার হাত উঁচু করলে আঙুলে কামড়ে দেন সাবেক বার্সা ও উরুগুয়ের স্ট্রাইকার। ধারণা করা হচ্ছে, সুয়ারেজ মনে করেছিলেন আঙুলটা প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়ের। ওই সময় আলবাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন সাবেক চেলসি ও এসি মিলানের ফ্রান্স স্ট্রাইকার অলিভার জিরু। এটি সুয়ারেজের ফুটবল ক্যারিয়ারে মাঠে চতুর্থবার কামড়ের ঘটনা। তিনি ২০১৪ বিশ্বকাপে কামড় কাণ্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছিলেন। ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত ওই বিশ্বকাপে তিনি ইতালির ডিফেন্ডার কিয়েল্লিনির কাঁধে কামড়ে দিয়েছিলেন। দাঁতের দাগ পর্যন্ত বসে গিয়েছিল ইতালির সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের কাঁধে। এর আগে ২০১০ সালে আয়াক্সে খেলাকালীন এই স্ট্রাইকার উসমান বাক্কালকে কামড়ে দিয়েছিলেন। ওই ঘটনায় তিনি সাত ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন। এরপর ২০১৩ সালে লিভারপুলে খেলার সময় চেলসির ব্রানিসলাভ ইভানোভিককে কামড়ে ১০ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন। কিয়েল্লিনিকে কামড়ের ঘটনায় তিনি ৪ ম্যাচ নিষিদ্ধ হয়েছিলেন। এবার সতীর্থকে কামড় দেওয়ায় তিনি নিষেধাজ্ঞার হাত থেকে বেঁচে যাচ্ছেন।

অবশেষে সেই গায়কের সাথে দেখা, যার নামে মেসির নাম রেখেছিলেন তার মা
ছবিতে যে দুইজন ব্যক্তিকে দেখতে পাচ্ছেন, তাদের একজন লিওনেল মেসি এবং আরেকজন লিওনেল রিচি। ইনস্টাগ্রামে যিনি ছবিটি পোস্ট করেছেন, বিশ্ব তাকে চেনে লিওনেল রিচি নামে। তার সঙ্গে যিনি আছেন, তাকে পুরো বিশ্ব চেনে লিওনেল মেসি নামে। এক লিওনেল সংগীতের রাজা, অন্যজন ফুটবলের রাজপুত্র। ইনস্টাগ্রামে দুইজনের ছবির ক্যাপশনে লেখা, ‘যখন লিওনেলের সঙ্গে লিওনেলের দেখা। ওর মা আমার নামে ওর নাম রেখেছিলেন, আর আজ আমাদের দেখা হলো। এত বছর পর দেখা হয়ে ভালো লাগলো।’ একজন সুরের জাদুকর, আরেকজন ফুটবলের জাদুকর। দুইজনে দুই জগতের মানুষ, তবে নামটা একই। একজন আশি-নব্বই দশকের তুমুল জনপ্রিয় গায়ক-গীতিকার, অন্যজন সর্বকালের সেরা ফুটবলার।যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার সময় গত বুধবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা, চেজ স্টেডিয়ামে সেদিন কনক্যাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের ম্যাচ ছিলো। সেই ম্যাচে এলএএফসিকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে মেসির ইন্টার মায়ামি। দলের জয়ে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন লিওনেল মেসি, একাই করেছিলেন দুই গোল।ম্যাচ শেষে স্টেডিয়ামের টানেলে ‘দ্য কমোডোরস’ ব্যান্ডের একসময়ের নেতার সঙ্গে দেখা হয় মেসির। তার সঙ্গে হাত মেলান আর্জেন্টাইন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার। হাসিমুখেই কথা বলেন দুইজন। তবে তাদের মধ্যে কী কথা হয়েছে, তা জানা যায়নি।দুজনের নামের একটা মিল রয়েছে। লিওনেল রিচির নাম থেকেই অনুপ্রাণিত লিওনেল মেসির নাম। মেসির মা সেলিয়া মারিয়া কুচ্চিত্তিনি প্রথম এই গল্পটা বলেছিলেন। ২০১০ সালে তার মুখ থেকেই শোনা যায় সেই গল্প।সে সময় আর্জেন্টিনার টেলিভিশন চ্যানেল তেলেফেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসির মা বলেছিলেন, ‘ওর জন্ম সহজ ছিলো না। আমার ডেলিভারির নির্ধারিত সময় পার হয়ে গিয়েছিলো। ডাক্তার বললেন, আর ঝুঁকি নেবো না, লেবার ইন্ডিউস করবো। সকাল ৬ টায় হাসপাতালে গিয়েছিলাম, আর লিও জন্ম নেয় বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে। কিন্তু তার নাম নিয়ে বাধে বিপত্তি। আগে থেকেই তার কোনও নাম ঠিক করে রাখা হয়নি। আমি সবসময় লিওনেল নামটা পছন্দ করতাম কিন্তু হোর্হে ওর নাম রাখে লিওনেল। তখন আমি বলি, এটা তুমি কী করলে! সে আমাকে বললো, আমরা দুজনই তো লিওনেল রিচিকে খুব পছন্দ করি, তাই ওই বানানে রেখেছি।’এমন অদ্ভূত গল্পটা লিওনেল রিচির কাছেও পৌঁছে যায়। অবশ্য প্রথমে তিনি এটা সত্যি মরে করেননি। তার ধারনা, এটা কোনও বানানো মজার গল্প। তবে পরে যখন তিনি নিশ্চিত হন, মেসির মা যখন নিজেই বলছেন, তখন তিনি বেশ খুশি হন। পরে রিচি নিজেই বলেছিলেন, আমি জানি ও গান গাইতে পারে না। কিন্তু আমিও তো ফুটবল খেলতে পারি না। আমরা বন্ধু হতেই পারি। অবশেষে দেখা হলো তাদের দুইজনের।

হারের পর দিল্লি অধিনায়কের জরিমানা
আইপিএলে চলতি মৌসুমে দারুণ ছন্দে ছিল দিল্লি ক্যাপিটালস। তাদের টানা জয়ের ধারায় গতকাল ছেদ টেনে দিয়েছে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। পরাজয়ের পর এবার স্লো ওভার রেটের জরিমানাও গুণতে হচ্ছে দিল্লি অধিনায়ক অক্ষর প্যাটেলকে। তাকে ১২ লাখ ভারতীয় রুপি জরিমানা করা হয়েছে। আইপিএলের কোড অব কন্ডাক্ট অনুযায়ী, মৌসুমে প্রথম স্লো ওভার রেটের অপরাধের জন্য জরিমানা হবে ১২ লাখ রুপি। আইপিএল অবশ্য নিষেধাজ্ঞার শাস্তি থেকে সরে এসেছে। এখন শাস্তি হিসেবে শুধু জরিমানা ও ম্যাচে ফিল্ডিং সীমাবদ্ধতা রাখা হচ্ছে। ২০৬ রান তাড়া করতে গিয়ে দিল্লি একটা পর্যায়ে ফেভারিট অবস্থানেই ছিল। যার পেছনে অবদান করুণ নায়েরের ৮৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। তার ব্যাটেই ৮ ওভারে দলটার প্রয়োজন ছিল ৬৬ রান, হাতে তখন ৭ উইকেট। কিন্তু নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তারা। বিশেষ করে ১৯তম ওভারে হ্যাটট্রিক রানআউটে কপাল পুড়েছে। হেরেছে ১২ রানে। যার ফলে ৫ ম্যাচে প্রথম হারের তিক্ত স্বাদ পেয়েছে দিল্লি। ম্যাচের পর অধিনায়ক অক্ষর বলেছেন, ‘ম্যাচটা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। আমার মনে হয় মিডল অর্ডারে সফট ডিসমিসাল হয়েছে। শটগুলো ছিল খুব বাজে। ১২ রানে হেরেছে, অথচ তখনও একওভার বাকি ছিল। তার মানে ছিল আমরা তখনও ম্যাচটা জিততে পারতাম।’

এমবাপের লাল কার্ড এবং রিয়ালের কষ্টার্জিত জয়
রেলিগেশনের শঙ্কায় থাকা আলাভেসের মাঠে গিয়ে বেশ কষ্টার্জিত জয় নিয়েই ফিরতে হলো রিয়াল মাদ্রিদকে। ১-০ গোলের এই জয়ে রিয়ালকে বেশ মূল্যও চোকাতে হয়েছে। লাল কার্ড দেখেছেন কিলিয়ান এমবাপে। ৩৮তম মিনিটে লাল কার্ড দেখে তাকে মাঠ ছাড়তে হয়েছে। স্প্যানিশ লা লিগায় এমনিতেই বার্সেলোনার চেয়ে শিরোপা লড়াইয়ে অনেকটা পেছনে পড়ে গেছে রিয়াল। আগেই চার পয়েন্টের ব্যবধান তৈরি হয়েছে। সেই ব্যবধানটাই ধরে রাখতে পারলো ১-০ গোলের জয়ে। ৩১তম ম্যাচ শেষে রিয়ালের পয়েন্ট ৬৬। বার্সেলোনার পয়েন্ট ৭১। ৩০ ম্যাচে ৬০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ। ৩৪তম মিনিটে ফরাসী তারকা এদুয়ার্দো কামাভিঙ্গার গোলে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিও একটি গোল করেছিলেন; কিন্তু ভিএআর চেক করে সেই গোল বাতিল করে দেন রেফারি। কামাভিঙ্গা গোল করার ৪ মিনিট পরই, খেলার ৩৮তম মিনিটে আলাভেসের মিডফিল্ডার আন্তোনিও ব্লাঙ্কোকে খুব বাজেভাবে ট্যাকল করেন কিলিয়ান এমবাপে। যে কারণে রেফারি সরাসরি লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে তাকে বের করে দেন। দ্বিতীয়ার্ধের মাঝপথে গিয়ে (৭০ মিনিটে) একই ধরনের ফাউল ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে করেন আলাভেসের মানু সানচেজ। যে কারণে তাকেও লাল কার্ড দেখিয়ে মাঠ থেকে বের করে দেন রেফারি। আলাভেসের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে সপ্তাহের মাঝপথে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আর্সেনালের কাছে ৩-০ গোলে হেরেছিলো রিয়াল মাদ্রিদ। এরপর আলাভেসের মাঠে এসেও খাবি খেতে হয়েছে তাদের। সব মিলিয়ে গত একটি মাস বেশ বাজে অবস্থাতেই কাটছে রিয়ালের। লা লিগায় পিছিয়ে পড়া, আর্সেনালের কাছে হার- যে কারণে জয়ে ফেরাটা খুব বেশি প্রয়োজন ছিল তাদের। ১-০ গোলের কষ্টার্জিত সেই জয়টাই অবশেষে এলো লজ ব্লাঙ্কোজদের। এই ম্যাচে আবার কোচ কার্লো আনচেলত্তিও থাকতে পারেননি ডাগআউটে। গত সপ্তাহে ভ্যালেন্সিয়ার কাছে হারের ম্যাচে পঞ্চম হলুদ কার্ড দেখেন তিনি। যে কারণে এই ম্যাচে নিষিদ্ধ ছিলেন তিনি। গ্যালারিতে বসেই ম্যাচটা দেখতে হয়েছে আনচেলত্তিকে। তার পরিবর্তে এই ম্যাচে রিয়ালের কোচ ছিলেন কার্লোর ছেলে এবং সহকারী কোচ ডেভিড আনচেলত্তি। এই ম্যাচটি দেখতে মাঠে ছিলেন স্পেনের জাতীয় দলের কোচ লুইস ডি লা ফুয়েন্তে। তার সামনেই ডিফেন্ডার রাউল আসেনসিও ১৯তম মিনিটে গোল করেন। কিন্তু ভিএআর চেক করে সেই গোল বাতিল করা হয়। এর ১৫ মিনিট পর, ৩৪তম মিনিটে ফেদে ভালভের্দের সঙ্গে ওয়ান-টু ওয়ান করে বল নিয়ে এগিয়ে যান কামাভিঙ্গা এবং দারুণ এক শটে বল জড়িয়ে দেন আলাভেসের জালে। ২০২২ সালের মার্চের পর রিয়ালের জার্সিতে এটা এই মিডফিল্ডারের প্রথম গোল।

রাজস্থানকে উড়িয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে বেঙ্গালুরু
রাজস্থান রয়্যালসকে তাদের ঘরের মাঠে উড়িয়ে দিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু। বিরাট কোহলি এবং ফিল সল্টের ফিফটিতে রাজস্থানের দেয়া ১৭৪ রানের লক্ষ্য ১৫ বল এবং ৯ উইকেট হাতে রেখে পেরিয়ে গেছে বেঙ্গালুরু। এই জয়ে পয়েন্ট টেবলের তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে বেঙ্গালুরু। ৬ ম্যাচে তাদের জয় ৪টি। অন্যদিকে, ঘরের মাঠে হেরে টেবিলের সাতে নেমেছে রাজস্থান। ৬ ম্যাচে ২ জয়ের বিপরীতে চারটিতে হেরেছে তারা।রোববার (১৩ এপ্রিল) শুরুতে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৪ উইকেটে ১৭৩ রান করে রাজস্থান। ২ ছক্কা ও ১০ চারে ৪৭ বলে ৭৫ রান করেন যশস্বী জয়সওয়াল। তবে অন্যপ্রান্তে তেমন ভালো সমর্থন পাননি এই তারকা ব্যাটার।ওপেনিংয়ে নেমে শুরু থেকেই ব্যাট হাতে বেশ সংগ্রাম করেছেন রাজস্থান অধিনায়ক সানজু স্যামসন। সপ্তম ওভারে তার সেই সংগ্রাম থামান ক্রুনাল পান্ডিয়া। ১৯ বলে ১৫ রান করেন স্যামসন।মিডল অর্ডারে রায়ান পরাগ ২২ বলে ৩০ এবং ধ্রুব জুরেল ২৩ বলে ৩৫ রান করেন। আর তাতে ১৭৩ রানের সংগ্রহ পায় রাজস্থান।লক্ষ্য তাড়ায় রাজসিক শুরু পায় বেঙ্গালুরু। প্রথম ওভার থেকেই ঝোড়ো ব্যাটিং করেন সল্ট। নবম ওভারে তিনি আউট হওয়ার আগে স্কোরবোর্ডে ৯২ রান যোগ করে বেঙ্গালুরু। ৬ ছক্কা ও ৫ চারে ৩৩ বলে ৬৫ রান করেন সল্ট।অন্যপ্রান্তে কোহলি ব্যাট করেছেন নিজস্ব গতিতে। ৩৯ বলে ফিফটি তুলে নেয়ার পর শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬২ রানে। তিনে নামা পাড়িকেলও ছিলেন দারুণ ছন্দে। চার মেরে জয় নিশ্চিত করার আগে ২৮ বলে ৪০ রান করেন এই ব্যাটার।

প্রিমিয়ার লিগেই থাকবেন ডি ব্রুইনা!
সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়ে গেছে ম্যানচেস্টার সিটিতে আর থাকবেন না। চলতি মৌসুম শেষ হলেই ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাবকে বিদায় নেবেন কেভিন ডি ব্রুইনা। যার মাধ্যমে শেষ হবে ইতিহাদে তার ১০ বছরের লম্বা ক্যারিয়ার। পরবর্তী মৌসুমে কোথায় দেখা যাবে বেলজিয়ান ৩৩ বছর বয়সী তারকাকে, তা নিয়েই ফুটবলপ্রেমীদের যত আলোচনা। কেউ কেউ ভাবছেন, ইংল্যান্ড থেকেই সরে যাবেন ডি ব্রুইনা। এছাড়া সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছে, বেলজিয়ান মিডফিল্ডারের সঙ্গে আলোচনা করতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগের (এমএলএস) ক্লাব ইন্টার মিয়ামিও। ডি ব্রুইনা কি আসলেই প্রিমিয়ার লিগ থেকে সরে যাবেন, ফুটবলভক্তদের কৌতূহল মেটাতে বেলজিয়ান তারকাকে প্রশ্নটি করেন নরওয়েজিয়ান সাংবাদিক জ্যঁ অ্যাগে ফিয়োরটোফ। উত্তরে প্রিমিয়ার লিগে থাকার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দেননি ডি ব্রুইনা। ফিয়োরটোফকে এক সাক্ষাৎকারে ডি ব্রুইনা বলেন, ‘আমি জানি না। সত্যি বলতে আমি জানি না। চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটা খুব বেশিদিন আগের নয়। ফুটবল জগতে এক সপ্তাহের মধ্যে কিছুই চূড়ান্ত হয় না। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর এখনও আমার পরিবারের সঙ্গে দেখা করিনি। আমাকে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে, তারপর দেখি কোন দল আমাকে চায়। তাই আমি জানি না। আমার কোনো ধারণা নেই।’ ভালো প্রস্তাব পেলে যেকোনো দলেই যোগ দিতে প্রস্তুত ডি ব্রুইনা। চ্যালেঞ্জ নিয়েই নিজের বয়সকে জয় করতে চান। ডি ব্রুইনা বলেন, ‘সব সময়ই একটা চ্যালেঞ্জ থাকে। আমি জানি না পরের মৌসুমে কী হবে। যদি কোনো দল আসে এবং আমাকে একটি ভালো স্পোর্টস প্রজেক্টের কথা বোঝাতে পারে… আমি জানি, আমি আর ততটা তরুণ নই। তবুও আমি মনে করি, আমি এখনও সর্বোচ্চ পর্যায়ে পারফর্ম করতে পারি। জানি না কোন কোন দল আগ্রহী বা তারা কী করতে চায়। যেই প্রজেক্টই আসুক না কেন- আমি শুনতে রাজি। আমি ফুটবলকে ভালোবাসি- আমি খেলতে ভালোবাসি এবং যদি কোনো ভালো প্রজেক্ট আসে এবং আমার পরিবারও সেটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, তাহলে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবো।’ ম্যানসিটিতে ১০ মৌসুমে ৬টি প্রিমিয়ার লিগ, একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ও দুই বার পেশাদার ফুটবলারস অ্যাসোসিয়েশনের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার (পিএফএ) জিতেছেন ডি ব্রুইনা।

ডি ব্রুইনার দ্যুতি ছড়ানোর রাতে বিশাল জয় ম্যানসিটির
ক্রিস্টাল প্যালেসের মতো দলের কাছে ২১ মিনিটেই ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়েছিল বর্তমান ও টানা চারবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি। চলতি মৌসুমে অফ ফর্মে থাকা ম্যানসিটি কত ব্যবধানে হারে, তখন সেটিই ভাবছিলেন ফুটবলপ্রেমীরা। কিন্তু ম্যানসিটিতে যে কেভিন ডি ব্রুইনার মতো অভিজ্ঞ এক খেলোয়াড় আছেন, তা হয়তো কিছুক্ষণের জন্য ভুলে গিয়েছিলেন সমর্থকরা। দর্শকদের নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ দিতে খুব বেশি দেরিও করেননি ডি ব্রুইনা। ৩৩ মিনিটের গোল করে ব্যবধান কমিয়ে এনেছেন তিনি। পরে করেছেন দুটি অ্যাসিস্টও। শনিবার ঘরের মাঠ ইতিহাদে ব্রুইনার দ্যুতি ছড়ানোর রাতে ২-০ গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও ৫-২ ব্যবধানের বিশাল জয় পেয়েছে ম্যানসিটি। এতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের টেবিলের চারে উঠেছে পেপ গার্দিওলার দল। এই জয়ে ১২তম স্থানে থাকা প্যালেসের সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা ৮ ম্যাচের অপরাজিত থাকার রেকর্ড ভেঙে দেয় সিটি। এখন চেলসি ও নিউক্যাসল ইউনাইটেডের চেয়ে এক পয়েন্টে এগিয়ে সিটি। দশ বছরের ক্যারিয়ার শেষে মৌসুম শেষে সিটি থেকে বিদায় নেবেন ডি ব্রুইনা। যাওয়ার মৌসুমেও প্রিয় দলকে চ্যাম্পিয়নস লিগের যোগ্য প্রতিযোগী করে দিতে চান তিনি। ম্যাচ শেষে নিজের আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করে বিবিসিকে ডি ব্রুইনা বলেন, ‘আমি যখন থেকে এখানে আছি তখন থেকে প্রতি বছরই আমরা চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলছি, তাই আমি আশা করি আগামী বছরও তাই হবে। আমি শুধু আগের মতোই ভালো ফুটবল খেলতে চাই।’ সিটির ভুলের সুযোগ নিয়ে প্রথম ২১ মিনিটেই দুটি গোল করে প্যালেস। ৮ মিনিটে ইসমাইলা সার একটি ক্রস দেন, যা স্লাইড করতে গিয়ে জোসকো গভারদিওলের নাগালের বাইরে চলে যায়। ফলে বলটি প্যালেসের ইংল্যান্ড উইঙ্গার এবারেচি এজের কাছে পৌঁছে। ফাঁকা থাকা এবারেচি গোলরক্ষক এডারসনের পজিশনিং ভুলের সুযোগ নিয়ে বল জালে জড়ান। এটি চলতি মৌসুমে এবারেচির তৃতীয় লিগ গোল। ১৩ মিনিট পরে অ্যাডাম হোয়ার্টনের নিখুঁত কর্নার থেকে ক্রিস রিচার্ডস কাছ থেকে হেড করে প্যালেসের দ্বিতীয় গোল করেন। ২৯ মিনিটে এবারেচি আবারও গোল করেন, তবে প্রিমিয়ার লিগে প্রথমবার ব্যবহৃত আধা-স্বয়ংক্রিয় অফসাইড প্রযুক্তি তাকে অফসাইড অঞ্চলে চিহ্নিত করে। ফলে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। তবে প্যালেসের জয়ের আশা বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। ৩৩ মিনিটে সিটির অধিনায়ক ডি ব্রুইনা গোল করেন। এতে সিটির প্রত্যাবর্তনের সূচনা হয়। প্যালেসের দাইচি কামাডা গোলবারের ২৫ গজ দূরে নিকো গঞ্জালেজকে ফাউল করলে ডি ব্রুইনা ডান পায়ের নিখুঁত ফ্রি-কিক নেন। যা রুবেন দিয়াস এবং গঞ্জালেজের তৈরি করা দেয়াল পেরিয়ে প্যালেসের জালে প্রবেশ করে। ৩ মিনিট পরেই সিটি সমতা ফেরায়। জেমস ম্যাকঅ্যাটি বক্সে একটি ক্রস দেন, যা ডি ব্রুইনের কাছে যায়। সেখান থেকে ইলকায় গুন্দোগানকে বল দেন ডি ব্রুইনা। কিন্তু গুন্দোগান ভুলভাবে বল মারেন এবং সেটি ওমার মারমুশের কাছে যায়, তিনি সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে মাত্র ৮০ সেকেন্ডের মধ্যে আবারও গোল করে সিটি। ডি ব্রুইনার অ্যাসিস্ট থেকে গোলটি করেন মাতিও কোভাসিচ। ৯ মিনিট পর সিটি গোলরক্ষক এডারসনের লম্বা পাস প্যালেসের রক্ষণের পেরিয়ে জেমস ম্যাকঅ্যাতির কাছে চলে যায়। অফসাইড ফাঁদ এড়িয়ে বক্সে ঢুকে প্যালেসের গোলরক্ষক হেন্ডারসনকে কাটিয়ে খালি জালে বল পাঠান ম্যাকআতি। এতে ৩-২ গোলে এগিয়ে যায় সিটি। এতে এক মৌসুমে চারটি অ্যাসিস্ট করা প্রথম প্রিমিয়ার লিগ গোলরক্ষক নির্বাচিত হন এডারসন। টানা চার লিগ ম্যাচে অপরাজিত থাকা সিটি আগামী শনিবার এভারটনের মুখোমুখি হবে। আর প্যালেস বুধবার নিউক্যাসলের বিপক্ষে খেলবে।

ইন্টার মায়ামিতে চুক্তি বাড়াচ্ছেন মেসি
সম্পর্ক দীর্ঘায়িত হচ্ছে লিওনেল মেসি ও ইন্টার ময়ামির। আগামী ৩১ ডিসেম্বর বর্তমান চুক্তি শেষ হলেও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর, দুইপক্ষই সম্মত হয়েছে নতুন চুক্তির বিষয়ে। মেসিতেই বদলে গেছে মেজর লিগ সকারের চিত্র। শুধু ইন্টার মায়ামি নয়, মেসি আসার সুফল পাচ্ছে গোটা আমেরিকান ফুটবল। তাই মায়ামি চাচ্ছে মেসির যক্তরাষ্ট্র অধ্যায় লম্বা হোক আরও, একই চাওয়া মেজর লিগ সকার কর্তৃপক্ষেরও। কারণ বিশ্বের সর্বকালের সেরা ফুটবলারের বদৌলতেই যে এমএলএস জনপ্রিয়তা পেয়েছে। হাতে এখনও বেশ খানিকটা সময় থাকলেও এরইমধ্যে মেসির চুক্তি নিয়ে সুখবর দিয়েছে ইন্টার মায়ামি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লাবটির ব্যবস্থাপনা প্রধান জর্জ মাস জানান, নতুন করে চুক্তির বিষয়ে সম্মত হয়েছেন মেসি। তবে এই কার্যক্রম সম্পন্ন হতে আরও দুই থেকে তিন মাস লাগবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জর্জ মাস বলেন, ‘আশা করছি আগামী ৬০ থেকে ৯০ দিনের মধ্যেই আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে পারব। আমাদের সবার স্বপ্ন এখন নতুন স্টেডিয়ামে মেসিকে খেলতে দেখা। আগামী বছর মার্চেই হয়তো শুরু হবে নতুন স্টেডিয়ামের পথচলা। আমি বিশ্বাস করি, সেখানে প্রথম ম্যাচেই আমাদের অধিনায়ক মেসিকে দেখা যাবে।’ বাণিজ্যিক দৃষ্টিকোণ থেকে লিওনেল মেসিকে যুক্তরাষ্ট্রে রাখতে বদ্ধপরিকর এমএলএস। এ বিষয়ে তাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে ইউনাইটেড স্টেটস সকার ফেডারেশন। কারণ সামনের বছর কানাডা ও মেক্সিকোকে নিয়ে বিশ্বকাপ আয়োজন করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ইন্টার ময়ামিতে ক্যারিয়ার লম্বা করার বিষয়ে নিজের স্বার্থও দেখছেন মেসি। এখানে থাকলে অফ সিজনে তার ধারে বার্সেলোনায় খেলার সুযোগ রয়েছে। আবার কাতালুনিয়ায় ফেরা মেসির কাছে স্বপ্নপূরণের মতো। যেটা এমএলএস ছাড়লে অন্য কোথাও এতটা সহজ হবে না।

আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী দুই তারকার বিরুদ্ধে জুয়া খেলার অভিযোগ, হচ্ছে তদন্ত
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী ফুটবলার অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও লিয়ান্দ্রো প্যারাদেসসহ ১২ ফুটবলারের বিরুদ্ধে জুয়া কেলেঙ্কারির অভিযোগ তুলেছে ইতালি। তারা অবৈধ আর্থিক লেনদেনে জড়িত ছিলেন বলে দাবি। তবে ডি মারিয়া এবং প্যারাদেস অভিযোগ অস্বীকার করেছে। অভিযুক্ত ১২ ফুটবলারের মধ্যে একজনের নাম জানা যায়নি। অন্য ৯ জন হলেন এসি মিলানের আলেসান্দ্রো ফ্লোরেঞ্জি, ফিউরেন্তিনার নিকোলো জানিওলো, জুভেন্টাসের ম্যাটিয়া পেরিন ও ওয়েস্টন ম্যাককিনি, আটালান্টার রউল বেলানোভা, তুরিনোর স্যামুয়েলে রিচি, ক্যালসিওর ক্রিস্টিয়ান বৌনাইতো, পারমার মাটেও ক্যানসেলিয়েরি ও লিডস ইউনাইটেডের জুনিয়র ফিরপো। ইতালিভিত্তিক সংবাদ মাধ্যমে কোরিয়েরে ডেলা সেরা জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অবৈধ জুয়ার ওয়েবসাইট পরিচালনাকারী দুই ব্যক্তিকে বিপুল পরিমাণ অর্থ স্থানান্তর করেছেন। পাঁচ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট অবৈদ কাজটি পরিচালনায় কাজ করত। এই লেনদেন আড়াল করতে তিন সদস্যের একটি দল গহনার দোকান চালাতেন। তাদের অবৈধ অনলাইন পোকার গেমে অংশগ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। অবৈধ এসব কাজ হয়েছে ২০২১-২০২২ সালের মধ্যে। ওই সময়ে বেনফিকার ডি মারিয়া, রোমার প্যারাদেস ও লিডসের ম্যাককিনি জুভেন্টাসে খেলতেন, ফিরপো বাদে বাকিরা ছিলেন ইতালির অন্যান্য ক্লাবে। ফিরপো তখনও লিডসে খেলতেন। ইতালির আইনজীবীরা জানিয়েছেন, গহনার দোকানগুলো অর্থ প্রদানের সুবিধার্থে হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছিল, যেখানে জুয়াড়িরা উচ্চমানের জিনিসপত্রের জন্য কাল্পনিক অর্ডার দিয়েছিলেন, যা আসলে কখনও সরবরাহই করা হয়নি। তারা বিষয়টি তদন্তে কাজ করছেন। তুরিনভিত্তিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা দ্য গার্দিয়া ডি ফিনজানা নাকি এরইমধ্যে এই কেলেঙ্কারির পেছনে থাকা পাঁচ ব্যক্তি ও একটি কোম্পানির কাছ থেকে দেড় মিলিয়ন ইউরো জব্ধ করেছে।

পিএসএল না খেলেই ফিরে আসতে হচ্ছে লিটনকে
পাকিস্তান সুপার লিগে গিয়ে মাঠেই নামতে পারলেন না বাংলাদেশের ওপেনার লিটন দাস। করাচি কিংসের হয়ে মাঠে নামার আগেই দেশে ফিরে আসতে হচ্ছে তাকে। অনুশীলনে গিয়ে আঙ্গুলে চোট পেয়েছেন তিনি। আগামী দুই সপ্তাহ মাঠের বাইরে থাকতে হবে তাকে। এর অর্থ, মাঠে নামার আগেই পিএসএল শেষ হয়ে গেলো লিটনের। নিজের ভ্যারিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এ তথ্য জানিয়েছেন লিটন নিজে। ফেসবুক পোস্টে লিটন লিখেছেন, ‘আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আমি করাচি কিংসের হয়ে পিএসএলে খেলতে সত্যিই মুখিয়ে ছিলাম; কিন্তু সর্বশক্তিমান অন্য পরিকল্পনা করে রেখেছেন। একটি অনুশীলন সেশনে গিয়ে আমি আঙ্গুলে আঘাত পেয়েছি। স্ক্যান করার পর দেখা গেলো, হেয়ারলাইন ফ্র্যাকশ্চার ধরা পড়েছে। এ থেকে সুস্থ হতে অন্তত ২ সপ্তাহ সময় লাগবে।’ ‘তাই দুঃখের বিষয় হল, আমার পিএসএল মিশন শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে। আমি বাংলাদেশে ফিরে যাচ্ছি এবং দ্রুত সুস্থতার জন্য আপনাদের দোয়া ও ভালবাসা কামনা করছি। সে সঙ্গে আমার দল করাচি কিংসকেও অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি।’ সত্যিই পিএসএল খেলার জন্য মুখিয়ে ছিলেন লিটন। পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার আগে, বিমানে ওঠার পর এবং করাচি গিয়ে ক্লাবটির উষ্ণ অভ্যর্থণা- সবকিছুর ছবি নিজে পোস্ট করেছেন ফেসবুকে। আইপিএল খেলার অভিজ্ঞতা থাকলেও পিএসএলে এবারই প্রথম খেলতে গিয়েছিলেন লিটন। পুরো পিএসএল খেলার জন্যই ছাড়পত্র ছিল তার; কিন্তু না খেলেই ফিরতে হচ্ছে তাকে। বাংলাদেশ থেকে এবারের পিএসএলে দল পেয়েছিলেন লিটনসহ তিনজন। এরই মধ্যে লাহোর কালান্দার্স দলে যোগ দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট খেলে পেশোয়ার জালমিতে খেলতে যাবেন ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা।

নাইটহুড পাচ্ছেন জেমস অ্যান্ডারসন
দারুণ এক সম্মাননা পাচ্ছেন টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী জেমস অ্যান্ডারসন। ক্রিকেটে অবদানের জন্য নাইটহুড দেওয়া হচ্ছে সাবেক এই পেসারকে। গত গ্রীষ্মে টেস্ট ক্রিকেটকে বিদায় বলেন অ্যান্ডারসন। ৭০৪ উইকেট নিয়ে এই সংস্করণে ইতিহাসেরই সফলতম পেসার তিনি। ২০০২ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখেন অ্যান্ডারসন। পরের বছর মে মাসে শুরু হয় টেস্ট ক্রিকেটে তার পথচলা। ৪২ বছর বয়সী অ্যান্ডারসন দুই দশকের বেশি সময়ের দীর্ঘ ক্যারিয়ারে খেলেছেন ১৮৮ টেস্ট, ১৯৪ ওয়ানডে ও ১৯ টি-টোয়েন্টি। ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড প্রধান রিচার্ড টম্পসন মনে করেন, ‘ইংল্যান্ড কিংবদন্তি’ অ্যান্ডারসনের নাইটহুড ‘প্রাপ্য সম্মাননা’ যিনি ক্রিকেটকে অনেক কিছু দিয়েছেন। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১ হাজার ১১৪ উইকেট নিয়েছেন অ্যান্ডারসন। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে উইকেট নিয়েছেন ৩৫৮টি। আর টি-টোয়েন্টিতে পেয়েছেন ৪১ উইকেট।

৬৪ দল নিয়ে ২০৩০ বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাব কনমেবলের
আগামী ২০৩০ আয়োজন করা হবে ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের ২৪তম সংস্করণ। এ আসরে উৎযাপন করা হবে বিশ্বকাপ ফুটবলের শতবর্ষ। বিশ্বকাপের ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ২০৩০ আসরকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ফিফা। ২০২৬ আসরের মতো এই সংস্করণে প্রতিযোগিতা করবে মোট ৪৮টি দল। টুর্নামেন্টটি আয়োজন করবে তিনটি মহাদেশের মোট ৬টি দেশ। ১৯৩০ সালের প্রথম বারের মতো ফুটবল বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকার দেশ উরুগুয়েতে। ২০৩০ আসরেও উদ্বোধনী ম্যাচগুলো হবে দক্ষিণ আমেরিকায়। তবে একক কোনো দেশ নয়, ভাগাভাগি করে তা আয়োজন করবে তিনটি দেশ- আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ে। টুর্নামেন্টের বাকি ম্যাচগুলো হবে ইউরোপের দেশ স্পেন ও পর্তুগাল এবং আফ্রিকার দেশ মরক্কোতে। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) ২০৩০ সালের বিশ্বকাপকে ৬৪ দলের টুর্নামেন্টে উন্নীত করার আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা (কনমেবল)। বৃহস্পতিবার একটি সভা আয়োজন করে কনমেবল। ওই সভায় উপস্থিত ছিলেন ফিফার প্রেসিডেন্ট জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। সভায় কনমেবল সভাপতি আলেহান্দ্রো ডমিঙ্গেজ বলেন, ‘(দল বাড়ানোর) ফলে সকল দেশ বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাবে এবং পৃথিবীর কেউই এই উৎসব থেকে বঞ্চিত হবে না। আমরা বিশ্বাস করি এই শতবর্ষ উদযাপন হবে অনন্য। কারণ শত বছর একবারই উদযাপন করা যায়।’ ফিফা কাউন্সিলের মার্চ মাসের এক সভায় প্রথম এই প্রস্তাবটি উত্থাপন করেন উরুগুয়ের ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি ইগনাসিও আলোনসো। এবার সেই প্রস্তাব মহাদেশীয় ফুটবল নিয়্ন্ত্রক সংস্থাও তুললো। প্রস্তাবটি গৃহীত হলে ২০৩০ সালের সংস্করণে ১২৮টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। যা ১৯৯৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত খেলা ৬৪ ম্যাচের ফরম্যাটের চেয়ে দ্বিগুণ। প্রস্তাবের সমালোচকরা বলছেন, এটি বাছাইপর্বের মানকে ক্ষুন্ন করে। ইউরোপিয়ান ফুটবল সংস্থার (উয়েফা) সভাপতি আলেকসান্ডার চেফেরিন এই প্রস্তাবকে ‘বাজে ধারণা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে চেফেরিন বলেন, ‘এই প্রস্তাবটি আমার জন্য সম্ভবত আপনার চেয়েও বেশি বিস্ময়কর ছিল। আমি মনে করি এটি একটি বাজে ধারণা।’

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে খোশগল্পে মাতলেন সাকিব
সাকিব আল হাসান বাংলাদেশ ক্রিকেটের সবচেয়ে বিতর্কিত চরিত্র। আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে শুরু করে জুয়ার বিজ্ঞাপনে মুখ দেখানোর মতো নানা ঘটনায় সমালোচনার খোরাক জুগিয়েছেন। এবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ হওয়া ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ফের বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকা সাকিব এখন যুক্তরাষ্ট্রে ঘাঁটি গেড়েছেন। সেখানেই নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আড্ডা দিতে দেখা গেছে তাকে। বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টার কিছু সময় পর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বেশকিছু ছবি পোস্ট করেন যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের নেতা স্বপ্নীল খান। সেসব ছবিতে ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে হাসিমুখে দেখা দেন সাকিব আল হাসান। পোস্টের ক্যাপশনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা স্বপ্নীল লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগের সাথে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব ভাই!’ এদিকে সম্প্রতি বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (৬ এপ্রিল) দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বলেছেন, ‘আমাদের আশঙ্কা সাকিব আল হাসান দুদকের আসামি হতে পারেন।’ এমন আশঙ্কার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের অনুসন্ধান পর্যায়ে আছে। অনুসন্ধানের পরে বোঝা যাবে।’