আটলান্টিক সিটিতে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

‘একুশ মানে মাথা নত না করা’ এই প্রত্যয়ের প্রতিধ্বনিতে রফিক, জব্বার, সালাম, বরকতদের আত্মত্যাগের কথা শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ জার্সি রাজ্যের আটলান্টিক সিটিতে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এ উপলক্ষে একুশের প্রথম প্রহরে এবসিকন শহরের পূর্ব এবসিকন বুলেভার্ডেঅবস্থিত ট্রাভেল লজে অস্থায়ী শহীদ মিনারের বেদিতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। একুশের অনুষ্ঠানমালার বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে ছিল একুশের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা, একুশের কবিতা পাঠ, দেশের ও একুশের গান পরিবেশন ও শিশু- কিশোরদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা । একুশের প্রথম প্রহরে সার্বজনীন একুশ উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টি, বেঙ্গল ক্লাব, সাউথ জারসি মেট্রো আওয়ামী লীগ, নিউ জারসি দক্ষিণ স্টেট বিএনপি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সি, জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টি, বৃহত্তর নোয়াখালি সোসাইটি, সাংবাদিক ফোরাম, ট্যাক্সি ক্যাব এসোসিয়েশন, লোকাল ৫৪, নরসিংদী ভৈরব এসোসিয়েশন, বিজনেস এসোসিয়েশন, আটলান্টিক সিটি জিটনি এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে শহীদ মিনারের বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সাবেক কাউন্সিলম‍্যান মোমিনুল হক মামুনও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সি, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টি ও বেঙ্গল ক্লাব আটলান্টিক সিটি যৌথভাবে ‘সার্বজনীন অমর একুশে উদযাপন’ উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে।এ উপলক্ষে মিরাজ খানকে আহ্বায়ক, মো. মনিরুজামান ও ফরহাদ সিদ্দিককে সদস‍্য সচিব করে ‘অমর একুশে ফেব্রুয়ারি উদযাপন’ কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কাজী আরিফ লিখন ও কাজল বাড়ৈ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। অনুষ্ঠানে কবিতা আবৃত্তি করেন সুব্রত চৌধুরী, গান করেন জয়ন্ত সিনহা, আসিফ আনোয়ার, রুকু জামান। একুশের অনুষ্ঠানে প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষ‍ণীয়। তীব্র শীত উপেক্ষা করে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী একুশের অনুষ্ঠানমালায় অংশ নেন। বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব সাউথ জার্সির সভাপতি জহিরুল ইসলাম বাবুল, সাধারণ সম্পাদক জাকিরুল ইসলাম খোকা, বাংলাদেশ এসোসিয়েশন অব আটলান্টিক কাউন্টির সভাপতি শহীদ খান ও সাধারণ সম্পাদক সোহেল আহমদ, বেঙ্গল ক্লাব আটলান্টিক সিটির সভাপতি রানা কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজল বাড়ৈ একুশের অনুষ্ঠান সফল করায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান ।

গুজরাটে সংস্কৃতির মেলা: বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জয়ধ্বনি

মর্যাদাপূর্ণ আইসিসিআর স্কলারশিপ অর্জন করা শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ভারতের গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক উৎসব-২০২৫ গত শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৫টিরও অধিক দেশ এই আয়োজনে অংশ নেয়। বাংলাদেশের প্রতিটি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল অনবদ্য। প্রথমেই মঞ্চে বাংলার লোকসংগীত মিলন হবে কত দিনে গানে মঞ্চে সুরের মুগ্ধতা ছড়ায় অনন্যা নট্ট, গীটারে সংগত করেন প্রীতম দাশ, সেই সাথে কাহনে সুরের মুগ্ধতা ছড়ায় অভ্র বড়ুয়া। এর পরেই গুজরাট বিশ্ববিদ্যালয়ের ভরতনাট্যম নৃত্য বিভাগের শিক্ষার্থী অনুরূপা ত্রিপুরার পরিচালনায় ও পরিবেশনায় বেশ কিছু নজরকাড়া লোকনৃত্য ও পাহাড়ি নৃত্য পরিবেশিত হয়। মনিপুরী নৃত্য পরিবেশনা করেন রশ্নি সিনহা। লোকনৃত্য পরিবেশনা করেন ফেন্সী ত্রিপুরা, রোদ্রা দত্ত, ত্রিয়াশা পাল। নজড়কারা ফ্যাশন শো দিয়ে মঞ্চে বাঙালিদের পোশাক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য তুলে ধরা হয়। চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠী অনন্য সুন্দরভাবে তাদের বৈচিত্র্যময় নান্দনিক পোশাক তুলে ধরে, সেই সাতে শাড়ি, পাঞ্জাবি, ধুতির বৈচিত্র্যতাও ছিল নজরকাড়া। ফ্যাশন শো তে অংশ নেয় তাহমিনা শাম্মি, ফারিয়া তাবাসসুম, চিংসু মারমা, মুক্তা চাকমা, শুভ্র, অনুরূপা ত্রিপুরা, অনন্যা নট্ট, আহনাফ, অভ্র, রশ্নি সিনহা ও ফেন্সী ত্রিপুরা। বাংলাদেশের ওপর মনোমুগ্ধকর ভিডিও প্রেজেন্টেশন তুলে ধরেন তাহমিনা শাম্মি, যেখানে বৈচিত্র্যময় বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থান, সংস্কৃতি ও পর্যটনের চিত্র তুলে ধরা হয়। এছাড়াও ছিল পিটার ও সাজ্জাদ সাওনের গান ও কবিতার মেলবন্ধনে অনবদ্য পরিবেশনা বলে জানান ভারতের দিল্লী বোর্ডের অধীনে দার্জিলিংয়ে অবস্থিত এফএলএসের সাবেক প্রিফেক্টোরিয়াল বডি প্রধান অভ্র বড়ুয়া। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা প্রবাসে থেকেও নিজেদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন তা তাদের নিবেদনের মধ্যে ফুটে ওঠে। তাদের নিরলস প্রচেষ্টা প্রমাণ করে যে, শেকড়ের টান কখনোই ম্লান হয় না। এভাবেই তারা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিচয় গড়ে তুলছেন, যা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের মর্যাদা আরও সুদৃঢ় করবে।

ভিয়েতনামে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

ভিয়েতনামের হ্যানয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে যথাযোগ্য মর্যাদায় শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৫ পালন করা হয়েছে। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করণের মাধ্যমে দিবসটির প্রথম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ লুৎফর রহমানের নেতৃত্বে দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ দূতাবাসের অস্থায়ী শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পড়া হয়; প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয় ও একুশের ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। সন্ধ্যায় দূতাবাসের কনফারেন্স রুমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে হ্যানয়স্থ বিভিন্ন দূতাবাসের কূটনীতিকবৃন্দ, ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি, ভিয়েতনামের সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও পর্যটন বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রতিনিধি এবং ভিয়েতনামে অবস্থিত প্রবাসি বাংলাদেশিরা অংশগ্রহণ করেন। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের থিম সংগীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ও হ্যানয়স্থ ইউনেস্কো অফিসের শিক্ষাবিষয়ক প্রতিনিধি মিকি নযাবা। মোহাম্মদ লুৎফর রহমান ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারির ভাষা আন্দোলনের শহীদদেরকেশ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫তম উদযাপন বার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আজকের দিনটি আমাদের জন্য এক দিকে কষ্টের, অন্যদিকে সম্মান ও গৌরবের। ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে মাতৃভাষা বাংলার অধিকার আদায়ে আমাদের এক ঝাঁক তরুণ রাজপথে তাদের জীবন উৎসর্গ করে। আমরা রক্তের বিনিময়ে মায়ের ভাষার অধিকার ফিরে পেয়েছি যা বিশ্বে বিরল। অন্যদিকে দিবসটি গৌরবের। আমাদের রক্তে অর্জিত ভাষার অধিকারের সম্মানে ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০০০ সাল থেকে দিবসটি জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্রকর্তৃক একযোগে পালিত হয়ে আসছে।’ ‘বাংলাদেশের তরুণ ছেলেরা মাতৃভাষা রক্ষার্থে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে যে অনন্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন, আগামী শতাব্দীগুলোতে, কাল থেকে কালান্তরে সেই চেতনায় ভাষা এবং সাংস্কৃতিক অধিকার রক্ষার মাধ্যমে সারাবিশ্বে আরো শান্তি ও উন্নয়নের পথ সুপ্রসারিত হোক।’ মিকি নযাবা দিবসটির ২০২৫ সালের প্রতিপাদ্য ‘মেক ল্যাঙ্গুয়েজ কাউন্ট ফর সাসটেইনঅ্যাবল ডেভেলপমেন্ট’ উল্লেখ করে বলেন, ‘জাতিসংঘ উন্নয়ন অভিষ্ট লক্ষ্য-৪ (অন্তর্ভূক্তিমূলক, গুনগত ও জীবনব্যাপী শিক্ষা লাভের সুযোগ) বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে মাতৃভাষায় শিক্ষা গ্রহণের বিকল্প নেই। মাতৃভাষা ভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থা একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষাক্ষেত্রে পরিপূর্ণ বিকাশের সবচেয়ে শক্তিশালী স্তম্ভ। অথচ আজ বিশ্বে অনেক শিশু মাতৃভাষায় শিক্ষার গ্রহণের অধিকার থেকে বঞ্চিত।’ বিশ্বের সব শিশুর জন্য মাতৃভাষায় শিক্ষা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি। আলোচনা পর্ব শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সম্মানে হ্যানয়স্থ বেশ কয়েকটি দূতাবাস থেকে তাদের মাতৃভাষায় প্রাপ্ত ভিডিও পারফর্মেন্স দেখানো হয়। ভিয়েতনামে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি বাংলা ভাষায় গান করেন। রাশিয়া দুতাবাসের কূটনীতিক আন্দ্রে বোরোডেনকো ও ভিয়েতনামে বসবাসরত প্রবাসি বাংলাদেশী নাগরিক জুনায়েদ সিদ্দিকি রাশিয়ান ও বাংলা ভাষায় কবিতা আবৃত্তি করে শোনান। এছাড়াও, মায়ের ভাষায় অভিব্যক্তি প্রকাশের জন্য আয়োজন করা হয় ‘দেয়াল লিখন উৎসব’। এতে বিভিন্ন ভাষাভাষীদের লেখনীতে বিভিন্ন ভাষার মিলনমেলায় পরিণত হয় দূতাবাসের প্রাঙ্গণ।

নরসিংদী জেলা সমিতি ইউএসএর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করেছে নরসিংদী জেলা সমিতি ইউএসএ। এ উপলক্ষে গত ২১ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের কুইন্স প‍্যালেসে প্রভাতফেরী করেছে এ সমিতি। সমিতির সভাপতি শামীম গফুর ও সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক বাবুলের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক প্রবাসী নরসিংদীবাসী ৫২র ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্বরণে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন। একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিল সমিতির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন, নরসিংদী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান কবীর আহমেদ, সহ-সভাপতি ফিরোজ আহমেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জে মোল্লা সানী, জিয়াউর রহমান, সুমন খন্দকার, মতিউর রহমান, সাইফুর রহমান, জেসমিন আনোয়ার। প্রচন্ড শৈত‍্যপ্রবাহ উপেক্ষা করে শহীদ মিনারে উপস্থিত হওয়ায় শামীম গফুর উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।

মিশিগানে ইসলামিক হেল্পিং ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ নর্থ আমেরিকার আত্মপ্রকাশ

যুক্তরাষ্ট্রের মিশিগান রাজ্যে ইসলামিক হেল্পিং ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ অব নর্থ আমেরিকা নামের সংগঠন আত্মপ্রকাশ করেছে। হ্যামট্রাম্যাক সিটির কনান্ট অ্যাভিনিউয়ের গেইট অব কলম্বাসে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বিপুল সংখ্যক মানুষের উপস্থিতিতে সংগঠনটির অভিষেক অনুষ্ঠান হয়েছে। জানা গেছে, সংগঠনটি অলাভজনক, অরাজনৈতিক ও মানব কল্যাণমুখী একটি সংগঠন। সংগঠনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো মানবতার সেবা, সামাজিক উন্নয়ন, সুস্থ সংস্কৃতি ও নৈতিক মূল্যবোধের প্রসার ঘটানো। এটি ইসলামের মহান ঐতিহ্য হিলফুল ফুযুলের আদর্শকে ধারণ করে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। সংগঠনটির সংক্ষিপ্ত নাম হচ্ছে ইহদিনা। অনুষ্ঠানে ইহদিনার নির্বাহী সদস্য মুফতি রিয়াদুল হুদা ও মাওলানা আহমদ কাসিম ইহদিনার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বিস্তারিত তুলে ধরেন। আসন্ন রমজানের প্রস্তুতি নিয়েও অনুষ্ঠানে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেটের জামেয়া কাসিমূল দরগা নায়েবে মুহতামিম মাওলানা আসাদ উদ্দিন, মোস্তফা আলতারক আইওনা মসজিদের ইমাম ও খতিব শাহজাহান, মিশিগান আল-ফালাহ জামে মসজিদের খতিব মাওলানা আব্দুল লতিফ আজম, সমাজসেবক সৈয়দ ইকবাল হোসেন চৌধুরী বকুল, দারুল উলুম মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা তাজ উদ্দিন মুহতামিম, হাফেজ কারী ফখরুল ইসলাম, মাওলানা বরকত উল্লাহ আশরাফ, মাওলানা দেলোয়ার, মাওলানা জাবেদ আহমদ, ইমাম হযরত মাওলানা কুতুবজ্জামান তরফদার, মুফতি তাজিম খান, ইমাম ও খতিব আবুল বাসেত, মওলানা শাহেদ নিজাম, হাফেজ মিনহাজ, হেমট্টামিক সিটি কাউন্সিলম্যান কামরুল হাসান, কাউন্সিলম্যান নাঈম লিয়ন চৌধুরী, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব সেলিম আহমেদ, মোশাররফ হোসেন লিটু, মহিবুর রহমান খোকন, মাসুদ খান, মঈনুল হক, ব্যবসায়ী গিয়াস তালুকদার, দেলোয়ার হোসেন আনসার, রব্বানী তালুকদার, মন্জুরুল করীম তুহিন, মামুন খান, শাহাদত হোসেন মিন্টু, রায়হান মিয়া।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপিত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) যথাযোগ্য মর্যাদায় ‘শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৫’ উদযাপন করেছে। এ সময় বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তি, বিভিন্ন পেশাজীবী, সাংবাদিক, নতুন প্রজন্ম ও কমিউনিটি সদস্যসহ বিপুল সংখ্যক দেশী-বিদেশী অতিথি উপস্থিত ছিলেন।দিবসটি উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পড়া হয়। অনুষ্ঠানে ৫২’, ৭১ ও ২০২৪’-এর জুলাই-আগস্টের শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘ইকোনোমিস্ট‘স কান্ট্রি অব দ্যা ইয়ার ২০২৪’ ও ‘জুলাই অনির্বাণ’ নামে দুইটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়। অনুষ্ঠানে কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট ও তাৎপর্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘মূলত: ৫২’র ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়েই স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ভিত্তি প্রোথিত হয় যা পূর্ণতা পায় মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে।’ নাজমুল হুদা ৫২’র ভাষা শহিদ সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত, শফিউরসহ সব ভাষা শহিদ, ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে সব শহিদ, শহিদ বুদ্ধিজীবী ও শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ২০২৪’-এর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে শহিদদের শ্রদ্ধা জানান এবং জুলাই আগস্টের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে যারা আহত হয়েছেন, তাদের আশু সুস্থ্যতা কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘ভাষা একটি একান্ত মানবিক বিষয়; যা মানুষের অস্তিত্বের প্রায় সমার্থক। এটি সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত যে, একজন ব্যক্তির বোধগত, বুদ্ধিবৃত্তিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক দক্ষতার সঠিক পুষ্টি তার মাতৃভাষার মাধ্যমে বিকশিত হয়। তাই, নিজের মাতৃভাষা লেখা ও ব্যবহার করার অধিকার প্রত্যেক ব্যক্তির জন্য অপরিহার্য। ২১ ফেব্রুয়ারি ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের মূল চেতনা হল পৃথিবীর সব ভাষা ও সংস্কৃতির নিজস্বতা রক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। নাজমুল হুদা আরো বলেন, ‘১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারীকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা করে, যা জাতি হিসেবে আমাদেরকে গৌরবান্বিত করেছে। এ বছর ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’-এর রজতজয়ন্তী।’ যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত বাংলাদেশী প্রবাসী ভাই-বোনেরা আমাদের মাতৃভাষা বাংলার চর্চা এবং প্রসারে, বিশেষতঃ নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে, যে চমৎকার ভূমিকা পালন করছেন, তিনি তার প্রশংসা করেন। কনসাল জেনারেল বলেন, ‘২০২৪ সাল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় সংযোজন করেছে। ২০২৪ সালের ফ্যসিবাদ বিরোধী ও বৈষম্য বিরোধী গণ-অভ্যুথান বাংলাদেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা মেরামত তথা সংস্কারের এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করেছে।’ প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকার যে সংস্কার কর্মসূচী হাতে নিয়েছেন, তা বাস্তবায়নের জন্য তিনি সকলের ঐকান্তিক সহযোগীতা কামনা করেন। বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত প্রবাসী ভাই-বোনদের অধিকতর অবদান রাখার জন্য তিনি আহ্বান জানান। উন্মুক্ত আলোচনায় নিউইয়র্কস্থ বীরমুক্তিযোদ্ধাগণ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গসহ কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন। স্থানীয় বাংলাদেশ কমিউনিটি শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়; যা দর্শকদের দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদেরকে বিভিন্ন প্রকার ঐতিহ্যবাহী দেশীয় খাবার দ্বারা আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শেষ হয়। উল্লেখ্য, এর আগে কনসাল জেনারেল শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশন কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন এবং বাংলাদেশ সোসাইটি কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানে একুশের প্রথম প্রহরে অস্থায়ী ভিত্তিতে নির্মিত শহিদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

যথাযোগ্য মর্যাদায় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কসের বেশ কয়েকটি স্থানে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে একুশের প্রথম প্রহরে প্রবাসীরা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। কুইন্সের উডসাইডে তিব্বতিয়া মিলনায়তনে অর্ধ শতাধিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন। চার্চ-ম্যাকডোনাল্ডে বাংলাদেশি বাণিজ্যিক পাড়ায় স্থাপিত শহীদ মিনারে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। জ্যাকসন হাইটসের ডাইভার্সিটি প্লাজায় জেবিবিএ এবং ব্রুকলীনের চার্চ ম্যাকডোনান্ডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারেও প্রবাসীদের ঢল নেমেছিল মধ্যরাতে। একুশের গান পরিবেশন ছাড়াও দিবসটির প্রেক্ষাপট আলোচনা এবং একুশের চেতনায় সব প্রবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানানো হয়। জ্যামাইকাস্থ অ্যল কাউন্টি হেলথ কেয়ার গ্রুপের মিলনায়তনে সংস্থাটির উদ্যোগে ভাষা দিবস স্মরণের অনুষ্ঠানে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় জয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। সংস্থার প্রধান আব্দুল কাদের শিশিরের সভাপতিত্বে এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির নেতা গিয়াস আহমেদ। সবচেয়ে বড় আয়োজনগুলো ছিল বাংলাদেশ সোসাইটি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন, জেবিবিএ, একাত্তরের প্রহরি নামের সংগঠনের ব্যানারে।

ভাষা শহীদদের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতৃবৃন্দের শ্রদ্ধা নিবেদন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপি যুক্তরাষ্ট্র শাখা এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মহান ভাষা আন্দোলনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কুইন্স প্যালেসে অস্থায়ী শহীদ মিনারে নিউইয়র্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই অ্যাসোসিয়েশন ইউএসএ ইনকের উদ্যোগে সম্মিলিত মহান একুশে উদযাপন ২০২৫ কর্তৃক ভাষা শহীদদের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদনের এ আয়োজন করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুজিবুর রহমান মজুমদারের নেতৃত্বে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। মুজিবুর রহমান মজুমদার যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি ও অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে সুশৃংখলভাবে শহীদদের সম্মান প্রদর্শন করার জন্য, বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে অংশগ্রহণ করার জন্য ধন্যবাদ জানান।

ভিসা বাণিজ্য: ইতালি দূতাবাসের কর্মকর্তা আওয়ামী লীগ নেতাসহ আটক পাঁচ

ইতালিতে ভিসা বাণিজ্যের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকায় দেশটির দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাসহ পাঁচজনকে আটক করেছে রোমের ফাইন্যান্স পুলিশ। আটকদের মধ্যে দুইজন বাংলাদেশিও রয়েছেন, যাদের মধ্যে রোমপ্রবাসী নজরুল ইসলাম এই চক্রটির মূলহোতা বলে দাবি স্থানীয় প্রশাসনের। নজরুল ইসলাম দীর্ঘ দিন ইতালি আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন বলে জানা গেছে। এছাড়া তিনি নিজেকে এনআরবি ব্যাংকের পরিচালক হিসেবে পরিচয় দিতেন। আটক ইতালি দূতাবাসের তিন কর্মকর্তাকে গৃহবন্দী এবং নজরুল ও আরেকজনকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দেশটির আদালতের নির্দেশে তাদের আটক করা হয় বলে এক্স-পোস্টে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিয়ো তায়ানি৷ এছাড়া দেশটির প্রায় সব সংবাদ মাধ্যমও বিষয়টি নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। দেশটির প্রথম সারির পত্রিকা ‘এল সোলে’ বলেছে, রোমের এল সিচিলিয়ানো ফিস’ নামের একটি রেস্তোরাঁর মালিক নজরুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের ইতালি দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশে ভিসা বাণিজ্য করে আসছিলেন। চক্রটি প্রতিটি কাজের ভিসার জন্য বাংলাদেশি কর্মীদের কাছ থেকে ১৫ হাজার ইউরো, বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিত। এছাড়া ভ্রমণ ভিসার জন্য ৭ হাজার ইউরো সমপরিমাণ টাকা নিত তারা। চক্রটির সদস্য ঢাকার ইতালি দূতাবাসের ভিসা অফিসার রবের্তো আলবের্গো ওয়ার্ক পারমিট (নুল্লাওস্তা) যাচাই-বাছাই ছাড়া ভিসা ইস্যু করে দিতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। আর দূতাবাসের আরেক কর্মকর্তা নিকোলা মুসকাতেল্লো ইতালির বিভিন্ন শহরের, বিশেষ করে রোম ও নাপোলির ইমিগ্রেশন অফিস থেকে টাকার বিনিময়ে ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহে সাহায্য করতেন। দুর্নীতির অভিযোগে কিছু দিন আগে নিকোলা মুসকাতেল্লোকে তুরস্কে দূতাবাসে বদলি করা হয়েছিল। এছাড়া দূতাবাসের আরেক কর্মকর্তা জুসেপ্পে সুয়িয়াকে সন্দেহভাজন হিসেবে আটক করা হয়েছে। ইতালিতে জর্জিয়া মেলোনি ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিদেশি নাগরিকদের ভিসা দেওয়ার প্রক্রিয়া কঠিন করা হয়। গত বছর দেশটির ক্ষমতাসীন দল ‘ফ্রাতেল্লি দি ইতালিয়া’র নেতা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আন্দ্রেয়া দি জুসেপ্পেকে ভিসা প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার বিনিময়ে লোভনীয় প্রস্তাব দেয় চক্রটি। তাকে ২০ লাখ ইউরো (প্রায় ২৫ কোটি টাকা), নতুন মডেলের রোলেক্স ঘড়ি, দামী স্মার্টফোন, ট্যাব ও দুবাইয়ে পরিবারসহ বিলাসবহুল বাসায় অবস্থানসহ ভ্রমণের খরচ দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু আন্দ্রেয়া তাদের প্রস্তাব গ্রহণ না করে গত বছরের ৩০ মার্চ রোমের ফাইন্যান্স পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তর এটি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দেখা যায়, অর্থের বিনিময়ে রোম ও নাপোলির ইমিগ্রেশন অফিস থেকে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ছাড়াই ওয়ার্ক পারমিট, ভিসা দেওয়ার কাজ করছিলেন ঢাকার ইতালি দূতাবাসের ভিসা অফিসারসহ দুই কর্মকর্তা। পরে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমস্ত তথ্য-উপাত্ত আদালতে উত্থাপন করলে, আদালত দ্রুত তাদের আটকের নির্দেশ দেয়। পরে তাদেরকে মঙ্গলবার আটক করা হয়। রোমে বসবাস করা বাংলাদেশি কয়েকজন বলেছেন, নজরুল ইসলাম কয়েক বছর ধরেই এখানে ব্যবসা করছেন। গত বছর তিনি একাই প্রায় ১৫০০ বাংলাদেশিকে ভিসা দিয়ে ইতালিতে এনেছিলেন। নজরুলের বিষয়ে জানতে চাইলে ইতালি আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকর্মীকে ফোন করলেও তারা রিসিভ করেননি।

ফিলাডেলফিয়া সিটি কাউন্সিলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি

যুক্তরাষ্ট্রের পেন্সিলভেনিয়া রাজ্যের ফিলাডেলফিয়া সিটি কাউন্সিল ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এর মাধ্যমে তার যারা ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলা রক্ষার জন্য জীবন উৎসর্গকারী ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানিয়েছে। ভাষা শুধুমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি একটি জাতির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ভাষাগত বৈচিত্র্য সংরক্ষণ, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষায় সমান সুযোগ নিশ্চিতকরণ ও বহুভাষাবাদের প্রচার সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করে, যা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সহনশীল সমাজ গঠনে সহায়তা করে।ফিলাডেলফিয়া শহর বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মিলনস্থল, যেখানে ৮৫টিরও বেশি ভাষা ও উপভাষা প্রচলিত। অ্যাট-লার্জ কাউন্সিল সদস্য নীনা আহমাদ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ও ভাষার অধিকারের একজন প্রবল সমর্থক, এই দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন এবং ভাষার মাধ্যমে সম্প্রদায়কে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান। আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: ১৯৯৯ সালে জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা (ইউনেস্কো) ২১শে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এই স্বীকৃতি বাংলা ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস এবং ভাষার অধিকারের জন্য আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শন। এই বছর, ফিলাডেলফিয়া শহর সকল বাসিন্দাকে তাদের মাতৃভাষার চর্চা, প্রচার ও সংরক্ষণে উৎসাহিত করছে, যাতে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ গড়ে তোলা যায়, যেখানে প্রত্যেকে তাদের মাতৃভাষায় স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করতে পারে এবং তথ্য আদান-প্রদান করতে সক্ষম হয়। ‘ফিলাডেলফিয়ার শক্তি তার বৈচিত্র্যে নিহিত।’ বলেন নীনা আহমাদ। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে স্বীকৃতি দিয়ে, আমরা ভাষার অধিকারের জন্য আত্মত্যাগীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং এমন একটি শহর গঠনের অঙ্গীকার করি যেখানে সকল সংস্কৃতি, ভাষা ও ঐতিহ্যকে সম্মান ও উদযাপন করা হয়।’ সিটি কাউন্সিল সভায় আমাদের সকলের পরিচিত শিল্পী আবুল ফজল ও আব্দুল হাফিজ চৌধুরী, বাংলাদেশি আমেরিকান কমিউনিটি ফোরাম অব পিএ’র পরিচালনা পরিষদের সদস্য, এই গুরুত্বপূর্ণ প্রস্তাবের সমর্থনে সাক্ষ্য দেওয়ার সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তারা নীনা আহমাদসহ সিটি কাউন্সিলের সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ স্বীকৃতি পাওয়ার পরপরই নীনা আহমাদসহ অন্য কাউন্সিল সদস্যরা সিটি কর্তৃক প্রদত্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র (প্রোক্লেমেশন) হস্তান্তর করেন। এই প্রোক্লেমেশনটি বাংলাদেশের আমেরিকান কমিউনিটির নেতৃবৃন্দ, বিশেষ করে বাংলাদেশি আমেরিকান কমিউনিটি ফোরাম অব পিএ’র পরিচালনা পর্ষদের সদস্য কামরুল হাসান, মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম আরিফ, আব্দুল হাফিজ চৌধুরী ও আবুল ফজলের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

ব্রঙ্কস বাংলাদেশী কমিউনিটির ‘অয়েলকাম রামাদান’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমজানকে সু-স্বাগত জানিয়ে মাসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের লক্ষে নিউইয়র্কে ব্রঙ্কস ‘অয়েলকাম রামাদান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের আল আকসা পার্টি হলে ব্রঙ্কস বাংলাদেশী কমিউনিটি আয়োজিত সভায় রমজানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, সামাজিক নিরাপত্তা, শারীরিক, মানসিক প্রস্তুতিসহ নির্বিঘ্নে ইবাদত-বন্দেগীর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়। সংগঠনের আহ্বায়ক এ ইসলাম মামুন এবং নিউইয়র্ক পুলিশের সাবেক সিনিয়র ডিটেকটিভ মাসুদ রহমানের পরিচালনায় সভ্ঢ স্বাগত বক্তব্য দেন নিউইয়র্ক সিটির কমিউনিটি বোর্ড ৯’-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এন মজুমদার। সভায় কুরআন ও হাদিসের আলোকে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত সম্পর্কে আলোকপাত করেন বাংলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়া এবং পিআইসির ইমাম ও খতীব মাওলানা উবায়দুল হক। রমজানে শারীরিক, মানসিকসহ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন তারা। আলোচকরা বলেন, ‘রমজান মুসলমানের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক অনন্য সুযোগ। রমজানকে কীভাবে নিষ্ঠা ও ইখলাসের সঙ্গে আমল ও ইবাদতের মাঝে কাটানো যায়- সে চিন্তা করা। রমজানের প্রতিটি রাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে ব্যয় করার পরামর্শ দেন তারা। চারিত্রিক উৎকর্ষতা ও আত্মিক পরিশুদ্ধি সর্বক্ষেত্রেই যেন রমজানের প্রভাব পরিলক্ষিত হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ধর্মীয় ভাবধারায় মানুষের মাঝে ইসলামের সঠিক ধারণা ছড়িয়ে দিতে হবে।’ নতুন প্রজন্মকে মসজিদমুখি করার কথাও বলেন তারা। শুরুতে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন জালাল আহমেদ। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য সচিব এমডি আলাউদ্দিন, প্রধান সমন্বয়কারী জাকির চৌধুরী, আহাদ আলী, এক্সিট রিয়েলিটির সাইদুর রহমান লিংকন, সালেহ উদ্দিন সাল, বেলাল উদ্দীন, পুলিশ অফিসার মাহবুবুর জুয়েল, অফিসার আলী ও শেখ মঈন, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট তোফায়েল চৌধুরী, মোতাসিম বিল্লাহ তুষার, আব্দুল খালেক, ইকবাল আহমেদ, ইমরান, নূরে আলম জিকু। সভায় রমজান মাসে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনুকুল রাখতে মসজিদগুলোতে পুলিশি নিরাপত্তাসহ বাংলাদেশী মুসলমানদের ব্যাপক প্রস্তুতির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়। সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক আলোচনায় অংশ নেন এনওয়াইপিডির কর্মকর্তারা। সেইফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ে নিউইয়র্ক সিটির পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে জানান হয়, নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্ট রমজান মাসে বাংলাদেশী অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তাবিধানে বিশেষ নজর রাখবে। তারা জনসাধারণের নিরাপত্তার বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে নির্ভয়ে পুলিশের সাথে একযোগে কাজ করার জন্য কমিউনিটি নের্তৃবৃন্দের সহযোগিতা কামনা করেন। কমিউনিটির জননিরাপত্তা, মানবাধিকার সুরক্ষাও হেইট ক্রাইম রোধকল্পে পুলিশের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়।

নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেটে ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট জেনারেলে তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। অনুষ্ঠানে সোনালী ব্যাংক ও সোনালী এক্সচেঞ্জ কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী প্রধান অতিথি ছিলেন। এছাড়াও সরকারি-বেসরকারি এক্সচেঞ্জ হা্উসের প্রতিনিধিবৃন্দ, দেশী-বিদেশী ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়িক, সংস্কৃতি ও মিডিয়া অঙ্গনের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে অংশ নেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি ও সম্ভাব্য বিনিয়োগ বান্ধব সংস্কারের উপর একটি ওয়েবিনারের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। যেখানে বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভলপমেন্ট অথরিটির (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী বাণিজ্য-বিনিয়োগসহ সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থ সংরক্ষণে সকলকে নিয়ে কাজ করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিনিয়োগে নিরাপত্তা নিশ্চিত কল্পে সরকার ঘোষিত বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা উল্লেখ করে তিনি প্রবাসীদের বাংলাদেশে বেশী বেশী করে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে রেমিট্যান্সের গুরুত্ব বর্ণনা করে রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধি করার ব্যাপারে একচেঞ্জ হাউসগুলোকে পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান। বর্তমান বিশ্ববাস্তবতায় সব দেশের ন্যায় বাংলাদেশও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যে সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করছে, তা তুলে ধরেন। পরে তিনি সভায় অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অন্তর্বর্তী সরকারের বিভিন্ন সংস্কার কর্মসূচীর বিষয়ে আলোকপাত করে তিনি সহজ ও বিনিয়োগ বান্ধব প্রক্রিয়া চালু করার বিষয়ে সবাইকে আশ্বস্ত করেন। সোনালী এক্সচেঞ্জের সিইও মহসিন কবির প্রচলিত বিনিয়োগের পাশাপাশি স্টক ও বন্ডে বিনিয়োগের সুবিধার উপর প্রবাসীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে সরকারী প্রণোদনার সুবিধা গ্রহণপূর্বক তিনি সকলকে বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানোর আহ্বান জানান। কনসাল জেনারেল মো. নাজমুল হুদা বাংলাদেশকে ব্যবসায়-বিনিয়োগের এক অপার সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উল্লেখ করেন। বাংলাদেশের ক্রম-বর্ধমান অর্থনীতি, দ্রুত বিকাশমান শিল্প ও সেবাখাত, তরুণ জনগোষ্ঠী, পরিশ্রমী ও মেধাবী শ্রমের সহজলভ্যতা, দ্র্রুত-প্রসারমান প্রযুক্তি-সামর্থ্যসহ প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলো উল্লেখ করে তিনি সবাইকে বাংলাদেশের আকর্ষণীয় বিনিয়োগ সুবিধা গ্রহণ করার আহ্বান জানান। অধিক ক্রয়-ক্ষমতা সম্পন্ন একটি উদীয়মান মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশকে তিনি একটি বড় সম্ভাবনাময় বাজার হিসেবেও চিত্রিত করেন। ২০২৪ পরবর্তী বদলে যাওয়া বাংলাদেশ সংস্কার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী অর্থনীতির গণতান্ত্রিক দেশে রূপান্তরের প্রক্রিয়ায় সক্রিয় রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

ইমাম কাউন্সিল অব ব্রঙ্কসের ‘মহিমান্বিত মাহে রামাদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

মাহে রমজানকে স্বাগত জানিয়ে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের এই মাস পালনের ব্যাপক প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলমানরা। রমজানকে সামনে রেখে নিউইয়র্কে ‘মহিমান্বিত মাহে রামাদান ও আমাদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনার করেছে নিউইয়র্কের আলেম-উলামাদের সংগঠন ইমাম কাউন্সিল অব ব্রঙ্কস। সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ব্রঙ্কসের নিরব পার্টি হলে এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। রমজানে শারীরিক, মানসিক প্রস্তুতিসহ হালাল খাবারের বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয় সেমিনারে। ইমাম কাউন্সিল অব ব্রঙ্কসের সাধারণ সম্পাদক বাংলাবাজার জামে মসজিদের ইমাম ও খতীব মাওলানা আবুল কাশেম মোহাম্মদ ইয়াহইয়ার পরিচালনায় সেমিনারে কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন মাওলানা আব্দুল হাদী জালালী। সেমিনারে বিষয়কভিত্তিক প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন হাফিজ মাওলানা ওয়াহি আহমেদ চৌধুরী, মাওলানা হামিদুর রহমান, মাওলানা রশিদ জামিল, মাওলানা আব্দুল লতিফ ও মাওলানা আব্দুল হাদী জালালী। বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন প্যানেল আলোচকরা। সেমিনারের আলোচকরা কুরআন হাদিসের আলোকে মাহে রমজানের গুরুত্ব, তাৎপর্য ও ফজিলত বর্ণনা করেন। রমজানে ইফতার, সেহেরী, তারাবীর ফজিলতসহ সার্বিক প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন। মূলত: রমজানকে সামনে রেখে প্রবাসী বাংলাদেশী মুসলমানদের ব্যাপক প্রস্তুতির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়া হয় হয় সেমিনারে। আলোচকরা বলেন, ‘রমজান মুসলমানের জন্য আল্লাহর নৈকট্য লাভের এক সুবর্ণ সুযোগ। এ জন্য প্রয়োজন পূর্বপ্রস্তুতি। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ। রমজানকে কীভাবে নিষ্ঠা ও ইখলাসের সঙ্গে আমল ও ইবাদতের মাঝে কাটানো যায়- সে চিন্তা করা। শারীরিক-মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা। রমজানে যেন জীবনের গতিপথ বদলে যায় নিজের আমলের মাধ্যমে এমন সংকল্প নেয়া। চারিত্রিক উৎকর্ষতা ও আত্মিক পরিশুদ্ধি সর্বক্ষেত্রেই যেন রমজানের প্রভাব পরিলক্ষিত হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। মানুষের মাঝে ইসলামের সঠিক ধারণা ছড়িয়ে দিতে হবে।’ নতুন প্রজন্মদের মসজিদমুখি শিক্ষার কথাও বলেন বক্তারা। বাংলাদেশী কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন। তারা ইমাম-ওলামাদের এমন আয়োজনের জন্য সাধুবাদ জানান। পরে দেশ, জাতি, মুসলিম উম্মাহ ও বিশ্ব মানবতার জন্য আল্লাহর রহমত কামনায় মোনাজাতের মধ্য দিয়ে সেমিনার শেষ হয়।

সৈয়দ হুমায়ুন কবীরের নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন

লাখো বাঙালির প্রাণের উৎসব অমর একুশে গ্রন্থমেলায় ক্যান্সার প্রতিরোধ গবেষক ড. সৈয়দ হুমায়ুন কবীরের নতুন বই প্রকাশিত হয়েছে। ‘নিরাপদ মাতৃত্ব ও শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশ’ শিরোনামে বইটি প্রকাশ করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রকাশনা সংস্থা অমর প্রকাশনী। বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বইমেলার প্রাঙ্গণে গ্রন্থ উন্মোচন মঞ্চে নতুন এ বইটির মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ক্যান্সার রোগ তত্ত্ববিদ ও ক্যান্সার প্রতিরোধ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডাক্তার মো. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন, প্রকাশনী প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার, বিশিষ্ট লেখক ও পাঠকগণ। বইটিতে লেখক নিরাপদ মাতৃত্বের গুরুত্ব, গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী যত্ন, শিশুর পুষ্টি, শারীরিক মানসিক বিকাশের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনাও রয়েছে বইটিতে। বইটি সম্পর্কে সৈয়দ হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘সুস্থ ও সচেতন মায়েরা একটি সুস্থ জাতির ভিত্তি গড়ে তুলতে পারেন। তাই মাতৃত্বকালীন যত্ন ও শিশুর শারীরিক-মানসিক বিকাশ সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’ ‘বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যু হার কমানোর জন্য জনসচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন। এই বইটি গর্ভবতী মা, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ও গবেষকদের জন্য সহায়ক হতে পারে।’ বইটি পাওয়া যাচ্ছে অমর একুশে গ্রন্থমেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অবস্থিত ৩৫৪-৩৫৫ নাম্বার স্টলে এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে। এর আগে ২০২৪ অমর একুশে গ্রন্থমেলায় সৈয়দ হুমায়ুন কবীরের প্রথম বই ‘ক্যান্সার থেকে বাঁচতে হলে জানতে হবে’ প্রকাশিত হয়। যা পাঠকমহলে বেশ সমাদৃত হয়। মা ও শিশুর স্বাস্থ্য বিষয়ক এই বইটিও পাঠকদের কাছে সমাদৃত হবে বলে আশা করছেন তিনি।

নিউইয়র্কে প্রবাসীদের ‘বি মাই ভ্যালেন্টাইন্স নাইট’ উদযাপন

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ‘বি মাই ভ্যালেন্টাইনস নাইট’ অনুষ্ঠান হয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত এই বিশেষ আয়োজনে ছিল খাবার, পানীয় ও নাচের বর্ণিল পরিবেশ। যেখানে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্ক প্রবাসী বাংলাদেশিরা ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশেষ করে তরুণ প্রজন্মের বিপুল অংশগ্রহণ ছিল নজরকাড়া। অনুষ্ঠানে ছিল লাইভ মিউজিক, নাচ ও বিনোদনমূলক পর্ব, যা অতিথিদের দারুণভাবে আনন্দ দিয়েছে। উপস্থিত ছিলেন ব্যবসায়ী শাহ নেওয়াজ, ডেমোক্রেটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লীডার এটর্নী মঈন চৌধুরী, এডভোকেট রেদওয়ানা সেতু, ইঞ্জিনিয়ার আবদুল খালেক, ব্যবসায়ী নূরুল আজিম, এবিসিএইচ গ্রুপের এডমিন তরিকুল ইসলাম মিঠু। আব্দুল খালেক জানান, বি মাই ভ্যালেন্টাইনস নাইট শুধু ভালোবাসা দিবস উদযাপনের জন্য নয়, এটি ছিল এক মিলনমেলার মতো, যেখানে সবাই একসঙ্গে ভালো সময় কাটানোর সুযোগ পেয়েছেন। ভালোবাসা দিবসের এই আয়োজনে বিনামূল্যে প্রবেশের সুযোগ ছিল, পাশাপাশি অতিথিদের জন্য ছিল আকর্ষণীয় লাকি র‍্যাফেল ড্র ও নৈশভোজ। পুরো আয়োজনটি উপস্থাপনা করেন মাহিম আঁখি। আর আয়োজনের মূল পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করে এনওয়াই মিউজিক। অনুষ্ঠানের কনভেনর ছিলেন নুসরাত। এছাড়া, মেম্বার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মাহিম।

নিউইয়র্কে ‘আইকন অফ টাইম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ পেলেন কবি কাজী জহিরুল ইসলাম

বর্তমান সময়ের বরেণ্য কবি, লেখক, বুদ্ধিজীবী কাজী জহিরুল ইসলামকে তার জন্মদিনের প্রাক্কালে ‘আইকন অফ টাইম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ দিয়েছে গ্রেস ফাউন্ডেশন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের হলিউডে কবির বাসভবনে গেল ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় কবির হাতে এই সম্মাননা তুলে দেন গ্রেস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) দিমা নেফারতিতি। তিনি কবির হাতে ‘আইকন অফ টাইম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ সম্মাননার স্মারক তুলে দেন এবং কবিকে উত্তরীয় পরিয়ে দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঊনবাঙাল সাহিত্য সংগঠনের প্রেসিডেন্ট মুক্তি জহির, মানবাধিকার নেত্রী কাজী ফৌজিয়া, সাংবাদিক রওশন হক, কবি সুমন শামসুদ্দিন, আবৃত্তিশিল্পী আহসান হাবীব, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ ফজলুর রহমান, শিল্পী নজরুল ইসলাম ও সৈয়দ মাসুদুল ইসলাম টুটুল, কবি রেনু রোজা, আবৃত্তিশিল্পী মুন্না চৌধুরী, শেলি ইয়াসমিন। সকলে কবিকে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত করেন। এ সময় কবি কাজী জহিরুল ইসলাম তার অভিব্যক্তিতে দিমা নেফারতিতি ও গ্রেস ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, ‘গ্রেস ফাউন্ডেশন সমাজের আলোকিত মানুষদের সম্মান জানায় প্রতি বছর। এই উদ্যোগ প্রশংসনীয় এবং অনুপ্রেরণার। ‘আইকন অফ টাইম’ একটি যুগান্তকারী সম্মান। এই সম্মান ও অর্জন আমার সাহিত্যিক স্বত্তা থেকে সমাজের জন্য আলোকিত কাজ করবার দায়িত্ব আরও বাড়িয়ে দিলো।’ দিমা নেফারতিতি বলেন, ‘কাজী জহিরুল ইসলামের কবিতা ও গদ্যের অসাধারণ প্রভাব রয়েছে বাংলা সাহিত্য, সমকালীন সমাজ ও সমাজের সার্বজনীন মানবতাবাদী প্রয়াসে। গ্রেস ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বাংলাভাষার বহুমাত্রিক কবি ও লেখক কাজী জহিরুল ইসলামের হাতে ‘আইকন অফ টাইম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ তুলে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।’ মুক্তি জহির কবির জন্মদিনে গ্রেস ফাউন্ডেশনের এমন সুন্দর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা সবাই আমাদের সুহৃদ, শিল্পের সারথি। আপনাদের ভালোবাসা, শুভেচ্ছায় কবি কাজী জহিরুল ইসলামের জন্মদিন উদযাপনের এই সন্ধ্যা সমৃদ্ধ হয়েছে, আলোকিত হয়েছে। গ্রেস ফাউন্ডেশন প্রতি বছর আলোকিত মানুষদের সম্মান জানায়। একটি সুন্দর সমাজ নির্মাণে এমন অনুপ্রেরণা ভীষণ সময়োপযোগী।’ ‘আইকন অফ টাইম অ্যাওয়ার্ড ২০২৫’ প্রদান ও কাজী জহিরুল ইসলামের জন্মদিন উদযাপনে সুন্দর প্রাণবন্ত সন্ধ্যা উপভোগ করেন কবির ভক্ত, অনুরাগী, প্রিয়জনেরা। উপস্থিত অতিথিরা তাদের বক্তব্যে কবিকে শুভেচ্ছা জানান, কবির সাহিত্যের ইতিবাচকতা নিয়ে আলোচনা করেন। কাজী জহিরুল ইসলাম তার নতুন কাব্যগ্রন্থ থেকে কবিতা পাঠ করেন। কবির কবিতা আবৃত্তি করেন দিমা নেফারতিতি, সুমন শামসুদ্দিন, আহসান হাবীব। গান করেন নজরুল ইসলাম ও সৈয়দ মাসুদ-উল ইসলাম। কবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশী ঐতিহ্যের রকমারী পিঠা তৈরি করেন মুন্না চৌধুরী।

সিলেট প্রদেশ প্রতিষ্ঠার দাবি গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের

সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে আন্তর্জাতিক জুম মিটিং করেছে গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কমিটি। রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) লন্ডন সময় বিকাল ৩টায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে বিশিষ্টজনদের অংশগ্রহণে এ মিটিং অনুষ্ঠিত হয়। গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিবের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ময়নুল হক চৌধুরী হেলালের পরিচালনায় সভায় বিশ্বের প্রায় ৪০টি দেশের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। সভায় অতিথি ছিলেন সিলেট পৌরসভা ও সিলেট সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুল, আমেরিকার ডিস্কেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জিয়াউদ্দিন আহমদ, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শেখ আখতারুল ইসলাম, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, ইউকে বিসির সাবেক প্রেসিডেন্ট এমএ মুনিম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মিঠু চৌধুরী, গ্রেটার সিলেট কমিউনিটি ইউকের ফাউন্ডার্স কনভেনর মোহাম্মদ মকিস মনসুর, গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ছোটন, সহ সভাপতি অলিউদ্দিন শামীম, আব্দুল মোনেম জাহেদী ক্যারল, সৈয়দ হাসান আহমদ, শেখ ফারুক আহমদ, জামাল আহমেদ খান, কেন্দ্রীয় ট্রেজারার রফিকুল হায়দার, সহ সম্পাদক আবুল হোসেন, ইয়াকুব কামালী, ইসবাহ উদ্দিন, ফয়জুল হক, প্রবাসী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি জাহাংগীর খান, আশিকুর রহমান, অস্টেলিয়া থেকে ইঞ্জিনিয়ার রাসেল আহমদ, বাংলাদেশ ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মহিব উদ্দিন, ট্রেজারার শামীম আলম কোরেশী, এবিসি নিউজের চেয়ারম্যান আলাউর রহমান খন্দকার, ফ্যান্স কমিটির সহ সভাপতি আব্দুল বাসিত, স্পেনের সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমদ, পর্তুগাল থেকে আবুল হাসনাত, সাংবাদিক সাহাব উদ্দিন, প্রফেসর মিছবাহ উদ্দিন, দুবাই থেকে ছয়ফুল ইসলাম, নিউইয়র্কের বাফেলো থেকে আব্দুল মুক্তাদির, মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী মুরাদ, নিউইয়র্ক থেকে শ্যমল চন্দ চন্দ ও ইংল্যান্ড জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাদেক আহমদ, বাহরাইন থেকে নজরুল ইসলাম সিদ্দিকী, বদরুল হক মনসুর, এ শামীম আহমদ। সভায় সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ বাস্তবায়নের দাবিতে গ্লোবাল জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সিলেট শাখার পক্ষ থেকে আগামী বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সিলেটে গোল টেবিল বৈঠকে বাংলাদেশের টিমের সবাইকে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এ ছাড়া, আগামী দিনের নানা কর্মসূচি নেওয়াসহ গুরুত্বপূর্ণ সীদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সভায় বক্তারা বলেন, ‘সিলেট বিভাগ নিয়ে কোনো টালবাহানা মেনে নেওয়া হবে না। চট্টগ্রামের সাথে সিলেটকে যুক্ত করার চক্রান্ত প্রতিহত করতে হবে। আমরা সিলেট বিভাগ নিয়ে জালালাবাদ প্রদেশ চাই। সংস্কার কমিশনের সুপারিশ মতে বাংলাদেশকে যদি কয়েকটি প্রদেশে ভাগ করতে হয়, তাহলে বৃহত্তর সিলেটের চারটি জেলা নিয়ে একটি প্রদেশ গঠন করা হবে যুক্তিযুক্ত। চট্টগ্রামের সাথে যুক্ত করা হবে অবাস্তব ও অযৌক্তিক। বৃহত্তর সিলেটের ভৌগোলিক অবস্থা ও লে-আউট আলাদা এ কথা সরকারের বুঝা উচিৎ। সিলেট থেকে চট্টগ্রামের চেয়ে ঢাকায় বরং যাওয়া যাবে দ্রুত। তাই, চট্টগ্রামের সাথে সিলেট কানেক্ট করে প্রদেশ করলে সিলেট হবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চিত। এমন হটকারি, অবাস্তব ও অযৌক্তিক সীদ্ধান্ত কোনো অবস্থাতেই বিশ্বময় বসবাসকারী সিলেটের মানুষ মেনে নেবে না।’

দুবাইয়ে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাবের বসন্ত উৎসব

প্রবাসে ব্যস্ত জীবনে আনন্দ-বিনোদনের আয়োজন কল্পনাও করা যায় না। তারপরও নতুন প্রজন্মের কাছে দেশীয় সংস্কৃতি-ঐতিহ্য তুলে ধরার লক্ষ্যে প্রবাসীরা করে থাকেন বিভিন্ন অনুষ্ঠান। সেই ধারাবাহিকতায় প্রবাসে বেড়ে ওঠা প্রজন্মকে দেশীয় সংস্কৃতি সম্পর্কে উৎসাহিত করতে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই মুশরিফ পার্কে বাংলাদেশ লেডিস ক্লাব ইউএইর উদ্যোগে আয়োজন করা হয় বসন্ত উৎসব। আমিরাতের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে সপরিবারে নানারকম পোশাক পরিধানে অসংখ্য পরিবারের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানস্থল যেন পরিণত হয় বাংলাদেশি এক ব্যতিক্রমী মিলনমেলায়। যা নজর কাড়ে পার্কে আসা বিভিন্ন দেশের দর্শনার্থীদেরও। দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে ছিল ছোট ছেলে-মেয়েদের নানা রকম খেলাধুলা, আইস ড্যান্স, নৃত্য, কবিতা আবৃত্তি, বসন্ত সাজ প্রতিযোগিতা, মহিলাদের মুখে পানি নিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতাসহ নানারকম খেলাধুলা। দুপুরে ছিল সুশৃঙ্খলভাবে খাবার পরিবেশন। লেডিস ক্লাব ইউএইর ফাউন্ডার লিজা হোসেনের সভাপতিত্বে ও টিম লিডার রোমানা বন্নির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ক্লাবের উপদেষ্টা ইয়াসমিন মেরোনা, জেসমিন আক্তার, লাবণ্য আদিল, রোমানা আক্তার, ফারহানা নেছার খান, শরিফা সৈনিক, ফাতেমা আহাদ। আয়োজকদের মধ্যে ছিলেন ক্লাবের সভাপতি লাবণ্য আদিল, সহ সভাপতি সাদিয়া আফছার ও নিশাত জাহান চৌধুরী নিশু, কো-অর্ডিনেটর শারমিন রাঁখি, তাকিয়া সুলতানা, সাহিদা আফরিন সেজুতি, টিম লিডার ইশিকা পারভিন, টিম লিডার ঈশিকা মাজহার, কামরুন নাহার, নাসরিন আক্তার। অনুষ্ঠান শেষে বিভিন্ন খেলাধুলা প্রতিযোগিতায় জয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।

নিউইয়র্কে গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব ইউএসএর নতুন কমিটির অভিষেক

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বর্ণাঢ্য আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব ইউএসএর নতুন কমিটির অভিষেক। গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি সেন্টারে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বৃহত্তর খুলনার তিনজন গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে এককালীন এক লাখ টাকা করে বৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। খুলনাবাসীর এ মিলনমেলায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনাও। উৎসবমুখর পরিবেশে নতুন কমিটির কর্মকর্তাদের শপথ বাক্য পাঠ করান সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা খন্দকার মাসুদুর রহমান। সংগঠনের ২০২৫-২০২৬ সালের জন্য নির্বাচিত ১৯ সদস্য বিশিষ্ট কার্যকরী কমিটির অভিষিক্তরা হলেন সভাপতি ওয়াহিদ কাজী এলিন, সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ ফারুকুল ইসলাম, সহ সভাপতি শেখ হাসান আলী, ইসমত জাহান পলি ও শেখ আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক হাওলাদার শাহিনুল ইসলাম, সহ সাধারণ সম্পাদক শেখ কামাল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শেখ আনোয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সবুর, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ ঈদ ই আমিন, প্রচার ও গণসংযোগ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সম্পাদক মোহাম্মদ আনারুল হক, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক ইসমত জাহান পপি, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ শাহীনুর হোসেন, কার্যকরী সদস্য বিলকিস ফাতিমা লাভলী, জাভেদ ইকবাল, শামসুদ্দিন নান্টু, আরিফ শাহরিয়ার ও উজ্জ্বল হোসেন। ওয়াহিদ কাজী এলিনের সভাপতিত্বে ও শেখ ফারুকুল ইসলামের পরিচালানায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম। বিশেষ অতিথি ছিলেন ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান গিয়াস আহমেদ, বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়ার সহ সভাপতি মহিউদ্দীন দেওয়ান, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, কোষাধ্যক্ষ মফিজুল ইসলাম ভূঁইয়া রুমি, সারাহ হোম কেয়ারের পরিচালক মো. আব্দুল খালেক। বক্তব্য দেন সংগঠনের উপদেষ্টা সৈয়দ এনায়েত আলী, সাবেক সভাপতি মুরারী মোহন দাস, সিনিয়র সহ সভাপতি শেখ মো. নওশাদ আক্তার, সহ সভাপতি শেখ হাসান আলী, কোষাধ্যক্ষ শেখ আনোয়ার হোসেন। ওয়াহিদ কাজী এলিন ও হাওলাদার শাহিনুল ইসলাম শপথ নেয়ার পর গ্রেটার খুলনাবাসীর স্বার্থ রক্ষায় কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। অনুষ্ঠানে আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘গ্রেটার খুলনা সোসাইটিকে সাথে নিয়েই তারা সোসাইটির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন।’ অনুষ্ঠানে খন্দকার মাসুদুর রহমান এ বছর থেকে বৃহত্তর খুলনার তিনজন গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীিকে এককালীন এক লাখ টাকা করে বৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেন। সভায় বক্তারা নতুন কার্যকরী কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব ইউএসএকে আরো এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। সবশেষে ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে গান করেন শিল্পী বাপ্পি ও মিতা। অনুষ্ঠানে আতাউর রহমান সেলিম বলেন, ‘গ্রেটার খুলনা সোসাইটিকে সাথে নিয়েই তারা সোসাইটির অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখবেন।’ অনুষ্ঠানে খন্দকার মাসুদুর রহমান এ বছর থেকে বৃহত্তর খুলনার তিনজন গরীব ও মেধাবী শিক্ষার্থীিকে এককালীন এক লাখ টাকা করে বৃত্তি প্রদানের ঘোষণা দেন। সভায় বক্তারা নতুন কার্যকরী কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে গ্রেটার খুলনা সোসাইটি অব ইউএসএকে আরো এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান। সবশেষে ছিলো মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এতে গান করেন শিল্পী বাপ্পি ও মিতা।

নিউইয়র্কে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উৎযাপন বাংলাদেশী প্রবাসীদের

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একাধিক ব্যক্তি-সংগঠনের উদ্যোগে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উৎযাপন করেছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ৯ ফেব্রুয়ারি কুইন্সের উডসাইডে সংস্কৃতিকর্মী এজাজুল ইসলাম নাইমের তত্বাবধানে এবং মাহিম আক্তার আখি, প্রিন্স মাহমুদ ও নুসরাত আয়েশা যৌথ আয়োজনে ও রাবু বিল্লাহর সঞ্চালনায় প্রবাসীরা মেতেছিলেন আনন্দোৎসবে। এ আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন শাহ নেওয়াজ, নুরুল আজিম। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় জ্যামাইকার একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বিশ্ব ভালবাস দিবসের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। সংস্কৃতিকর্মী কানিজ ফাতেমা শাওন ও সঙ্গীতশিল্পী শম্পা জামানের সঞ্চালনায় প্রবাসীরা মেতেছিলেন গান-গল্প ও ঘরোয়া খেলায়। ব্যবসায়ী নুরুল আফসার সেন্টু ও রফিকুল ইসলাম পাটোয়ারী ঘরোয়া খেলায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। রোববার (১৩ ফেব্রিয়ারি) সন্ধ্যায় নিউইয়র্কের কুইন্স প্যালেসে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের অনুষ্ঠান করেছে পিজি প্রোডাকশন হাউজ ও মেগা স্টার। ‘মাটি ব্র্যান্ড’-এর সঙ্গীত পরিচালনায় অনুষ্ঠানে গান করেন চন্দন চৌধুরী, শাহ মাহবুব, রাজীব ভট্টাচার্য্য, শামীম সিদ্দিকী। বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের এ অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সাদিয়া খন্দকার ও উৎপল চৌধুরী।

বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কস নিউইয়র্কের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ সোসাইটি অব ব্রঙ্কস নিউইয়র্ক ইনকের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) ব্রঙ্কসের নিরব রেস্টুরেন্টে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি সামাদ মিয়া জাকারিয়ার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদকের মো. ইমরান আলী টিপুর পরিচালনায় সভায় সোসাইটির বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরা হয়। এ সময় সোসাইটির বিগত দুই বছরের কার্যক্রম ও আয়-ব‍্যয় হিসাব উপস্থিত সকলের মাঝে উপস্থাপন ও কপি সরবরাহ করা হয়। সভায় জানানো হয়, বর্তমান কমিটি গত দুই বছরে সোসাইটির জন্য মোট ৫০ হাজার ৫৮১ মার্কিন ডলার সংগ্রহ করেছে, যা বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কল্যাণমূলক কাজে ব্যয় করা হয়েছে। বিশেষ করে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদানে সংগঠনটি মানবিক সহায়তার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সভায় উপস্থিত উপদেষ্টা আবু কায়ছার চিশতি ও হাসান আলী বর্তমান কমিটির সাফল্যে সন্তুষ্ট হয়ে কমিটির মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। এতে প্রচার সম্পাদক মছনুর রহমান গঠনতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে দুই বারের বেশি কোনো কমিটি বহাল থাকা যাবে না বলে স্মরণ করিয়ে দেন। এ সময় সামাদ মিয়া জাকারিয়া সংগঠনের স্বচ্ছতা ধরে রাখার জন্য এবং গঠনতন্ত্রের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে একটি নির্বাচন কমিশন গঠনের প্রস্তাব পেশ করেন। তিনি উপস্থিত সবাইকে আগামী কমিটি গঠনের জন্য প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানান। নির্বাচন কমিশন গঠন ও সদস্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত সভায় সর্বসম্মতিক্রমে নির্বাচন কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং নতুন সদস্য সংগ্রহের প্রক্রিয়া শুরুর প্রস্তাব আসে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম চলবে। যারা সোসাইটির সদস্য হতে ইচ্ছুক, তারা মো. সামাদ মিয়া জাকারিয়া ও ইমরান আলীর কাছ থেকে সদস্য ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা আব্দুর রব মিয়া, উপদেষ্টা হাসান আলী ও আবু কায়সার চিসতি, সহ-সভাপতি আমিনুল হক চুন্নু, কোষাধ্যক্ষ মো. বশির মিয়া, প্রচার সম্পাদক মসনুর রহমান, ধর্ম ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আবু সাঈদ এস চৌধুরী, আপ‍্যায়ন সম্পাদক মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন।

দুবাইয়ে প্রবাসীদের সমস্যার কথা শুনলেন প্রধান উপদেষ্টা

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাথে সম্প্রদায় সংযোগ কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তিনি এই কর্মসূচিতে যোগ দেন। প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার জানান, কর্মসূচিতে প্রবাসীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন। প্রধান উপদেষ্টা তাদের কথা ধৈর্য সহকারে শোনেন এবং সমস্যা সমাধানে আশু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ গ্রহণের আশ্বাস দেন। গভর্নমেন্টস সামিট-২০২৫-এ যোগ দিতে বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুবাই পৌঁছান প্রধান উপদেষ্টা। দুবাই পৌঁছালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্রীড়ামন্ত্রী ড. আহমদ বেলহুল আল ফালাসি তাকে স্বাগত জানান। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে গভর্নমেন্টস সামিট-২০২৫’-এর প্লেনারি সেশনে যোগ দেন। ডব্লিউজিএসের সম্মেলনস্থলে অনুষ্ঠিত প্লেনারি সেশনটি পরিচালনা করেন সিএনএনের বেকি অ্যান্ডারসন। দুই দিনের সফর শেষে শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।

সাংবাদিক জুয়েল সাদতের মা মুহিবুন নাহারের ইন্তেকাল

যুক্তরাষ্ট্রেরসেন্ট্রাল ফ্লোরিডায় বসবাসরত উত্তর আমেরিকা প্রথম আলোর বিশেষ প্রতিনিধি ও ৩৯তম আটলান্টা ফোবানার মিডিয়া চেয়ারম্যান গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব জুয়েল সাদতের মাতা বেগম মুহিবুব নাহার ( ৮৬) গত শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বার্ধক্যজনিত কারণে ওরলান্ডোতে মৃত্যুবরন করেছেন। বেগম মুহিবুন নাহার ১৯৩৮ সালে সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার হাসিমপুর গ্রামে এক সম্ভান্ত্র মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তৎকালীন সমাজ জীবনে মেয়েরা স্কুলে পড়তে না গেলেও তিনি লেখাপড়া করেন। তিনি অনেকটা ব্যক্তিগত আগ্রহেই স্কুলে যেতেন। দুই ভাইয়ের সাথে তিনি লুকিয়ে স্কুলে যেতেন৷ সংবাদপত্রের সাথে তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বেগম মুহিবুন পত্রিকা নিয়মিত পড়তেন। চার মেয়ে ও দুই ছেলেদের ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর জন্য ১৯৬৭ সালে মৌলভীবাজার জেলা থেকে সিলেট শহরে স্থানান্তরিত হন। মালিনীছড়া চা বাগানে তিনি জীবনের দীর্ঘ সময় ছিলেন। তিনি সুচি শিল্পে দক্ষ ছিলেন। তিনি ৮০’-এর দশকে অনেককে সেলাই শিক্ষা দিয়েছিলেন। পড়াশুনার প্রতি অসম্ভব মনোবল থাকায় তিনি নিজের সন্তান ছাড়াও পরিবারের অনেককে উচ্চ শিক্ষার জন্য সহযোগিতা করেন। ৯৩ সাল থেকে ফ্লোরিডার কিসিমিতে আসবাস করতেন, অসম্ভব অমায়িক ও মানবিক গুণাবলীর কারণে তিনি কমিউনিটির সকলের নিকট প্রিয় ছিলেন৷ বেগম মুহিবুন নাহারের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে কমিউনিটিতে শোকের ছায়া নেমে আসে। মরহুমার নামাজে জানাজাতে কয়েক শত গুণগ্রাহী উপস্থিত হন৷ শহরের বড় বড় ৫টি মসজিদের ইমামসহ বিশিষ্ট আলেম উলামা ও ইসলামি স্কলাররা নামাজে জানাজায় উপস্থিত ছিলেন। বেগম মুহিবুন নাহার নানা জনহিতকর কাজে সম্পৃক্ত ছিলেন৷ তিনি সাদত ফাউন্ডেশনের একজন ট্রাস্টি। সাদত ফাউন্ডেশনের আওতাধীন মাদরাসাগুলেতে ১৩০ জন হাফিজী পড়ছেন এবং ৩০ জন হাফিজী সম্পন্ন করেছেন। মরহুমার মৃত্যুর সংবাদে সিলেটে ও লন্ডনে শোকের ছায়া নেমে আসে। তার মৃত্যুতে সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা মহানগর আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ সমিতি, বাংলাদেশ সোসাইটি, দৈনিক রুপালি বাংলাদেশ, ফোবানা, বাংলাদেশ গ্রীন ক্রিসেন্ট সোসাইটি, সিলেট চট্টগ্রাম ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটি, দৈনিক আমাদের প্রতিদিন, বাংলাধারা শোক প্রকাশ করেছে। মরহুমার দুই মেয়ের পরিবারের চারজন কোরআনে হাফিজ৷ মৃত্যুকালে তিনি চার কন্যা, দুই পুত্র ও অসংখ্য নাতি-নাতনিসহ আত্মীয় স্বজন রেখে যান। শুক্রবার বিকালে কিসিমির মুসলিম সিমেট্রিতে চিরনিদ্রায় শায়িত হন মুহিবুন নাহার।

ফোবানার ৩৯তম সম্মেলনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত

উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশিদের সংগঠন ‘ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অর্গানাইজেশনস ইন নর্থ আমেরিকা’ (ফোবানা) তাদের ৩৯তম সম্মেলনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছে। আগামী ২৯, ৩০ ও ৩১ অগাস্ট কানাডার মন্ট্রিয়লের ডাউনটাউনের একটি হোটেলের বলরুমে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) নিউইয়র্কে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে ফোবানার চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক সম্মেলনের বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি জানান, ফোবানার ৩৮ বছরের ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় এবারও প্রবাসে বাংলাদেশের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির সমৃদ্ধ চিত্র তুলে ধরা হবে।বর্তমানে চারটি খণ্ডে বিভক্ত ফোবানার ঐক্য পুনরুদ্ধারের কোনো সম্ভাবনা আছে কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা সব সময় ঐক্যের পক্ষে। যে কোনো ত্যাগ স্বীকার করেও আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে প্রস্তুত। সবাই একমত যে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন।’ ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘সমগ্র উত্তর আমেরিকায় আমাদের প্রজন্মের সাফল্য আমাদের গর্বিত করে। তাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা দিতে হবে এবং বাংলা সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণে উৎসাহিত করতে হবে।’ এবারের আয়োজক সংগঠন ‘কানাডা-বাংলাদেশ সলিডারিটি’-এর সভাপতি ও ফোবানা সম্মেলনের আহ্বায়ক জিয়াউল হক জিয়া এবং সদস্য-সচিব ইকবাল কবির সম্মেলনের বিভিন্ন পর্ব নিয়ে আলোচনা করেন। প্রথম দিন থাকবে জমকালো উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ও গালা সন্ধ্যা। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্ঠিত হবে- ব্যবসায় উন্নয়ন সেমিনার, নারী ক্ষমতায়ন সেমিনার, অভিবাসন ও নাগরিক সচেতনতা বিষয়ক সেমিনার, প্রবাসে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিকাশ সংক্রান্ত আলোচনা, তরুণদের জন্য বিশেষ সেমিনার ও কাব্য জলসা। এছাড়া, বাংলাদেশ ও উত্তর আমেরিকার শিল্পীদের অংশগ্রহণে নৃত্য, গান, আবৃত্তি ও গীতিআলেখ্যসহ মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের শেষ দিন ফোবানার নির্বাহী কমিটির সভা, নতুন কমিটি নির্বাচন এবং ৪০তম ফোবানার আয়োজক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পাশাপাশি দেশ ও প্রবাসের শিল্পীদের পরিবেশনায় বিশেষ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার আয়োজন থাকবে। সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তর পর্বে আরও অংশ নেন ফোবানার সাবেক চেয়ারম্যান বেদারুল ইসলাম বাবলা, জয়েন্ট এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি আমিনুল ইসলাম কলিন্স, আব্দুল কাদের চৌধুরী শাহীন, আয়োজক কমিটির কোষাধ্যক্ষ বজলুর রশীদ ব্যাপারি ও উপদেষ্টা কামাল চৌধুরী।