২০৩৪ সালের মধ্যে ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়বে বিএনপি: তারেক রহমান
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১১:৫৯ এম, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষণা করেছেন, দলের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষ্য ২০৩৪ সালের মধ্যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি গড়ে তোলা, যা নতুন লাখ লাখ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বার্তায় তিনি এ পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিএনপির লক্ষ্য হচ্ছে এমন একটি আধুনিক ও জনগণমুখী বাংলাদেশ গড়ে তোলা, যেখানে প্রতিটি নাগরিক, বিশেষত নারী, গর্বের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারবে এবং কোনো নারীকে তার পরিবার ও কর্মজীবনের মধ্যে একটিকে বেছে নিতে হবে না।
তারেক রহমান বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)-এর ২০২৪ সালের শ্রমশক্তি জরিপের তথ্য উল্লেখ করে বলেন, নারীদের শ্রমবাজারে অংশগ্রহণ পুরুষদের তুলনায় অনেক কম। যেখানে পুরুষদের ৮০ শতাংশ কর্মজীবী, সেখানে নারীর সংখ্যা মাত্র ৪৩ শতাংশ। তিনি এই বৈষম্যকে দেশের অগ্রগতির বড় বাধা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিএনপি দেশব্যাপী শিশু পরিচর্যা বা ‘চাইল্ড কেয়ার’-কে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কৌশলের অংশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ ভাবছে। তারেক রহমানের প্রস্তাব অনুযায়ী, দলের পরিকল্পনায় রয়েছে: সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডে-কেয়ার সেন্টার স্থাপন, ধাপে ধাপে সরকারি অফিসে ডে-কেয়ার সুবিধা নেয়া, বড় বেসরকারি কোম্পানি ও কারখানায় বাধ্যতামূলক চাইল্ড কেয়ার ব্যবস্থা, শিশু পরিচর্যা নিশ্চিত করা নিয়োগকর্তাদের জন্য কর সুবিধা ও সিএসআর ক্রেডিট প্রদান এবং নারী ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মান অনুযায়ী কেয়ারগিভারদের প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন নিশ্চিত করা।
তারেক রহমান বলেন, ‘এই একটি সংস্কার নারীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে পারে, পারিবারিক আয় বৃদ্ধি করতে পারে, ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে আর্থিক স্থিতিশীলতা দিতে পারে এবং আমাদের জিডিপিতে ১ শতাংশ পর্যন্ত যোগ করতে পারে।’ তিনি আরও উল্লেখ করেন, তৈরি পোশাক শিল্পে কর্মরত শ্রমিকদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ নারী, তাই কর্মজীবী মায়েদের অবদানকে অবমূল্যায়ন করা ঠিক হবে না।
ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশন (আইএফসি) ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)-এর গবেষণার তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, ‘যেসব কারখানায় শিশু পরিচর্যার সুবিধা রয়েছে, সেখানে কর্মী ধরে রাখার হার বেশি, অনুপস্থিতি কম এবং প্রতিষ্ঠানগুলো এক বছরের মধ্যেই খরচ পুনরুদ্ধার করতে পারে।’
তারেক রহমান আরও বলেন, ‘শিশু পরিচর্যা কোনো দয়া-দাক্ষিণ্য নয়; এটি সামাজিক-অর্থনৈতিক অবকাঠামোর একটি অপরিহার্য অংশ।’ তিনি বলেন, নারীর ক্ষমতায়নই ‘বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি’ এবং ‘আমরা এমন যে কোনো পশ্চাৎমুখী ধারণা প্রত্যাখ্যান করি যা নারীর সম্ভাবনাকে সীমাবদ্ধ করে। শিশু পরিচর্যা, সমান মজুরি ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়ন শুধু ন্যায্য নয়, এটিই বুদ্ধিবৃত্তিক অর্থনীতি।’