মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম
চোরের বদলে চোর আর ডাকাতের বদলে ডাকাতকে ক্ষমতায় আনলে হবে না
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৪ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ধর্ষণ, চুরি, লুটপাট ও চাঁদাবাজির নাম রাজনীতি হতে পারে না। এগুলো জুলুম ও ডাকাততন্ত্র, যা কোনো রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা হতে পারে না। তিনি অভিযোগ করেন, গত ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় থেকেছে, তারা দেশকে শোষণ করেছে, অবিচার চালিয়েছে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুট করেছে। তার দাবি, প্রায় ২৮ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের সালথা সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন। সভাটি ছিল পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচনের দাবিকে কেন্দ্র করে।
ফয়জুল করীম বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার নেই মানে, প্রধান বিচারপতি নেই, ডিজিএফআই-এনএসআই প্রধান নেই, আইজিপি নেই, এমনকি বায়তুল মোকাররমের ইমামও নেই। এটা কি রাষ্ট্র? রাষ্ট্র হলে, তার একটি কুকুরও না খেয়ে মারা গেলে সরকারের জবাবদিহি করতে হয়। সেটাই প্রকৃত রাষ্ট্র।
আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এক হাত নিয়ে তিনি বলেন, আমরা বহু দলের শাসন দেখেছি আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এমনকি আয়ুব খান, শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমানের শাসনও দেখেছি। কিন্তু সাধারণ মানুষের ভাগ্য কোনোদিন বদলায়নি। আগে একদল চাঁদাবাজি করেছে, এখন আরেক দল করছে। ধর্ষণের ক্ষেত্রেও একই চিত্র। শুধু দলের নাম ও নেতার মুখ বদলেছে, কিন্তু নীতি বদলায়নি।
তিনি আরও বলেন, আমরা আর চোর-ডাকাতদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই। চোরের বদলে আরেক চোর, বা ডাকাতের বদলে আরেক ডাকাত আনলে চলবে না। প্রকৃত পরিবর্তন আনতে হলে ইসলামী দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে।
নির্বাচন কমিশনের সমালোচনা করে ফয়জুল করীম বলেন, কমিশন বলছে, পিআর পদ্ধতি সংবিধানে নেই। কিন্তু আপনি নিজেই তো সংবিধানে নেই! সংবিধান অনুযায়ী, সরকার পরিবর্তনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে এবং সেই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী নির্ধারিত হবেন। অথচ বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়োগ পেয়েছে তিন মাস পার হওয়ার পর যা সংবিধান লঙ্ঘনের শামিল।
বিচারব্যবস্থার দুরবস্থার কথাও তুলে ধরে তিনি বলেন, আজকের আদালতগুলোর অবস্থা ভয়াবহ। যে যখন ক্ষমতায় থাকে, বিচারকরা তার পক্ষেই রায় দেন। সরকারি দলের কেউ হলে খুন করেও মুক্ত থাকেন। আর সাধারণ মানুষ হলে নির্দোষ হয়েও জেলে পচে মরতে হয়। এটা কোনো ন্যায়বিচার হতে পারে না।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক হাফেজ মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল। আরও বক্তব্য রাখেন ফরিদপুর ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল ফরিদপুরী, শাকপালদিয়া মাদরাসার মুহতামিম মাওলানা লিয়াকত আলী এবং উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ।