বাংলাদেশ আর কখনো স্বৈরশাসনের পথে ফিরবে না: ড. ইউনূস
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১০:৩৯ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

বাংলাদেশ আর কোনোদিন স্বৈরশাসনের পথে ফিরবে না বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার মতে, দলমত নির্বিশেষে গড়ে ওঠা জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতেই গণতন্ত্র ও সংস্কার কার্যক্রম টেকসইভাবে এগিয়ে যাবে।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
ড. ইউনূস বলেন, জনগণের আত্মত্যাগে প্রতিষ্ঠিত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের যাত্রাকে আর কোনো শক্তি বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের দাবিতে রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের জন্ম। কিন্তু যে অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা আত্মত্যাগ করেছিলাম, তা গত পাঁচ দশকে বারবার বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে।
তিনি যোগ করেন, জনগণকে বহুবার সেই অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য আত্মত্যাগ করতে হয়েছে। চলতি বছর পালিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান-এর প্রথম বার্ষিকীর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, তরুণ সমাজ স্বৈরাচারকে পরাজিত করে বৈষম্যমুক্ত ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গঠনের নতুন পথ খুলে দিয়েছে। জনগণ সেই দায়িত্বই তাদের হাতে তুলে দিয়েছে।
রাষ্ট্র কাঠামো পুনর্গঠনের চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাহী আদেশে সংস্কার চালানো সম্ভব হলেও সরকার বেছে নিয়েছে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। এজন্য বিচার বিভাগ, শাসনব্যবস্থা, নির্বাচন, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতি দমন ও নারী অধিকারসহ জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাতে ১১টি স্বাধীন সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এসব কমিশনের সুপারিশ কার্যকর করতে ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দল ও জোটকে নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করা হয়। এর ফলেই গত জুলাইয়ে সব দল একসঙ্গে ‘জুলাই ঘোষণা’র মাধ্যমে সংস্কার বাস্তবায়নে সময়বদ্ধ অঙ্গীকার করে।
ড. ইউনূসের ভাষায়, এই অঙ্গীকারের ফলে আগামী নির্বাচনে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আর কখনো হুমকির মুখে পড়বে না।
তিনি আরও জানান, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। পাশাপাশি স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নাগরিকবান্ধব সংস্কার কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।