পাচার হওয়া সম্পদ ফেরত আনা শীর্ষ অগ্রাধিকারে রয়েছে: প্রধান উপদেষ্টা
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- প্রকাশঃ ১০:৩৫ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দেশ থেকে পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধার করাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, গত ১৫ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে শত শত কোটি ডলার অবৈধভাবে বিদেশে পাচার হয়েছে। আমরা নিরলসভাবে এই সম্পদ ফেরত আনার চেষ্টা করছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর আইনি প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য নানাবিধ প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাদের এই প্রচেষ্টা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর দৃঢ় সদিচ্ছা ছাড়া আমরা পাচার হওয়া অবৈধ সম্পদ পুনরুদ্ধারে সফল হব না, বলেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা অভিযোগ করেন, বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে অবৈধ সম্পদ পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ। বরং অনেক ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা বিশ্বজুড়ে ট্যাক্স হেভেনে বিপুল অর্থ পাচারকে উৎসাহিত করছে। তিনি বলেন, যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান এ পাচারকৃত সম্পদ গচ্ছিত রাখবার সুযোগ দিচ্ছে, তাদের আমি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন এই অপরাধের শরিক না হয়, এ সম্পদ তার প্রকৃত মালিককে অর্থাৎ কৃষক, শ্রমিক ও সাধারণ করদাতাদের নিকট ফিরিয়ে দিন।" এসময় তিনি অবৈধ সম্পদ পাচার রোধে কঠোর আন্তর্জাতিক আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের প্রস্তাব রাখেন।
জলবায়ু সংকট প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়ন ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে সীমিত রাখার লক্ষ্য এখন আর হাতের নাগালে নেই। প্রতিবছর ১০০ বিলিয়ন ডলার জলবায়ু সহায়তার প্রতিশ্রুতি এখনো বাস্তবায়িত হয়নি। বরং যে অল্প অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়, তা কাগজে-কলমে বহুগুণ দেখানো হচ্ছে, যা তার ভাষায় সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য। তিনি সতর্ক করেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষায় এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এজন্য ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’ পূর্ণাঙ্গভাবে চালুর দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, অভিযোজন ও প্রশমন উভয় প্রচেষ্টায় সমান গুরুত্ব দিতে হবে এবং অভিযোজন হতে হবে স্থানীয়ভাবে নির্ধারিত ও পরিচালিত। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্থানীয়ভাবে সংবেদনশীল অভিযোজনের নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি জানান, আসন্ন কপ-৩০ সম্মেলনে বাংলাদেশ তৃতীয়বারের মতো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জাতীয় প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করবে, যেখানে থাকবে প্রশমন ও অভিযোজন দুই দিকেই পদক্ষেপ, পাশাপাশি গুরুত্ব পাবে ম্যানগ্রোভ বন সংরক্ষণ ও জলাভূমি পুনরুদ্ধার।
শেষে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বৈশ্বিক সম্প্রদায় বিশেষ করে উচ্চ-কার্বন নিঃসরণকারী দেশগুলো তাদের দায়িত্ব আন্তরিকভাবে পালন করবে।