এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আন্দোলন

স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ, বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি


স্লোগানে উত্তাল শাহবাগ, বাড়িভাড়া ২০ শতাংশ বৃদ্ধির দাবি

শাহবাগ চত্বরে বুধবার বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জোরালো আন্দোলনে থমকে গেছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকা। ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো চত্বর, যেখানে শিক্ষকরা স্লোগানে স্লোগানে মুখর করে তোলেন সড়ক। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

বুধবার, ১৫ অক্টোবর দুপুর ২টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল নিয়ে শিক্ষকরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন এবং সেখানে অবরোধ শুরু করেন। এতে চতুর্দিক থেকে শাহবাগমুখী যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, সৃষ্টি হয় তীব্র যানজট।

দিনের শুরুতে সকাল থেকেই শিক্ষকরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন। তার আগের দিন, মঙ্গলবার, ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা করেন।

আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানিয়ে দিয়েছেন, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষা কার্যক্রম থেকে তারা সম্পূর্ণ বিরত থাকবেন। এক শিক্ষক বলেন, “২০ শতাংশ বাড়িভাড়া, ১৫০০ টাকা মেডিকেল ভাতা এবং কর্মচারীদের জন্য ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়া পর্যন্ত কোনো শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করবেন না।”

এর আগেই, গত সোমবার সকাল থেকে সারাদেশের বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষকরা জানাচ্ছেন, পুলিশের বলপ্রয়োগের প্রতিবাদ ও বাড়িভাড়া ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে এই ধর্মঘট শুরু হয়। এর ফলে দেশের বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

বিক্ষোভরত শিক্ষকরা আরও অভিযোগ করেন, সরকার যে হারে বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে তা বাস্তবতার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। তারা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে ভাতা বৃদ্ধির পাশাপাশি একটি সর্বজনীন বদলি নীতির দাবিও জানিয়েছেন।

গত রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থানকালে শিক্ষকদের সরাতে গেলে পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে পড়ে। এরপর নেতাদের নির্দেশে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে অবস্থান নেন এবং সেখান থেকেই ধারাবাহিক আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

রোববার ও সোমবার রাতভর রাজধানীর খোলা আকাশের নিচে শহীদ মিনারে অবস্থান করেন শত শত শিক্ষক। কেউ চট বিছিয়ে, কেউ ব্যানার মাথার নিচে দিয়ে রাত্রিযাপন করেন। তারা এক বাক্যে জানিয়ে দিয়েছেন, “প্রজ্ঞাপন না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি ও আন্দোলন চলবে।”

বর্তমানে সারাদেশের এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা একইসঙ্গে কর্মবিরতি পালন করছেন। প্রতিদিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও তারা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করছেন না কিংবা কোনো পাঠদান কার্যক্রমেও অংশ নিচ্ছেন না। স্কুল প্রাঙ্গণ, শিক্ষক লাউঞ্জ বা অফিসকক্ষে বসেই চালিয়ে যাচ্ছেন অবস্থান কর্মসূচি।

এদিকে, জেলা ও উপজেলা পর্যায়েও শিক্ষকরা নিজ নিজ এলাকায় হাতে প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। একইসঙ্গে ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঢাকার আন্দোলনরত শিক্ষকদের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করে প্রচুর পোস্ট দিচ্ছেন তারা।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×