সেনাবাহিনীর ৪০০ সদস্য পাহাড়ে শহীদ হয়েছে, এই দেশ কি খবর রেখেছে: রাওয়া চেয়ারম্যান


সেনাবাহিনীর ৪০০ সদস্য পাহাড়ে শহীদ হয়েছে, এই দেশ কি খবর রেখেছে: রাওয়া চেয়ারম্যান

রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (রাওয়া) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক বলেছেন, খাগড়াছড়িতে সাম্প্রতিক সহিংসতার পেছনে আন্তর্জাতিক শক্তির প্রভাব রয়েছে। প্রথম সারির এক গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি উল্লেখ করেছেন, কথিত ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগকে অতি নাটকীয় করে তুলে ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্র্যাটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ) ও তার অঙ্গসংগঠনগুলো স্থানীয় বসতি লক্ষ্য করে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ চালাচ্ছে এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি চালাচ্ছে। এই সহিংসতায় তিনজন নিহত ও অনেকে আহত হয়েছেন।

কর্নেল হক দাবি করেন, ইউপিডিএফের কার্যক্রমের পেছনে সীমান্তপারের কিছু শক্তি ইন্ধন ও সহায়তা দিচ্ছে। তিনি বলেন, “সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো পার্বত্যাঞ্চলে চাঁদাবাজি, জোরপূর্বক সম্পত্তি দখল এবং অপহরণসহ নানা অবৈধ কাজে জড়িত। এসব কর্মকাণ্ড অব্যাহত থাকায় পাহাড়ীয় জীববৈচিত্র্য ও স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রা বিপন্ন হচ্ছে।”

তিনি সতর্ক করে বলেন, পার্বত্যাঞ্চলের অস্থিতিশীলতা কৌশলে বৃদ্ধি করে দীর্ঘমেয়াদি ভূ-রাজনৈতিক ফল অর্জনের চেষ্টা হতে পারে।

রাওয়া চেয়ারম্যান সরকার ও প্রশাসনকে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “শুধুমাত্র সৈন্য মোতায়েন করলেই সমস্যা সমাধান হবে না। অঞ্চলের স্থায়ী শান্তি ও উন্নয়নের জন্য সিভিল প্রশাসন, অর্থনৈতিক উদ্যোগ এবং সামাজিক সমন্বয় অপরিহার্য।” তিনি আরও সতর্ক করেছেন, যদি স্থানীয় জনগণের মৌলিক অধিকার—শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা—নিশ্চিত করা না হয়, তবে বিচ্ছিন্নতাবাদী মনোভাব আরও শক্তিশালী হবে।

কর্নেল হক সামরিক বাহিনীর তৎপরতা ও তদারকিকে প্রশংসা করলেও আহত ও নিহত সেনা সদস্য ও তাদের পরিবারের প্রতি রাষ্ট্রীয় সহায়তার ঘাটতি তুলে ধরেন। তিনি বলেন, যারা দীর্ঘকালীন ত্যাগ ও সংগ্রামে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের পর্যাপ্ত সহায়তা ও সম্মান প্রদানের দাবি অপরিহার্য।

তিনি খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার হাসানের কার্যক্রমের প্রশংসা করে বলেন, “খাগড়াছড়ি ব্রিগেড কমান্ডার হাসান খুব সুন্দরভাবে সিচুয়েশন ট্যাকেল করেছেন। মনে হয়েছে এটা তারই সম্পত্তি, তাকে ছাড়া আর কারো দায়িত্ব নেই। আজকে সেনাবাহিনী এত কিছু করছে, কেউ অ্যাপ্রিশিয়েট করে না। ৪০০ জন শহীদ হয়েছেন—সেনাবাহিনীর সদস্য, অফিসার, জেসিও, সৈনিক। কেউ তাদের খবর রাখে? তাদের পরিবারদের কেউ দেখছে?”

কর্নেল হক আরও বলেন, “ইন্ডিয়াতে দেখেন কিভাবে তারা তাদের সেনাবাহিনীকে সম্মানিত করে। আমরা কি এর সমতুল্য করতে পেরেছি? না, শুধু সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সমালোচনা।”

এই বক্তব্যে স্পষ্ট, পার্বত্যাঞ্চলে অস্থিতিশীলতা মোকাবেলায় সমন্বিত সামরিক ও সিভিল উদ্যোগ গ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের প্রতি যথাযথ সহায়তা ও সম্মান নিশ্চিত করা জরুরি।

ঢাকাওয়াচ২৪ডটকমে লিখতে পারেন আপনিও ফিচার, তথ্যপ্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, ভ্রমণ ও কৃষি বিষয়ে। আপনার তোলা ছবিও পাঠাতে পারেন [email protected] ঠিকানায়।
×