আন্দোলনে জড়ালে বাধ্যতামূলক অবসর সরকারি চাকরিজীবীদের
- নিউজ ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৫:০৩ পিএম, ২৪ জুলাই ২০২৫

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন এক সতর্কবার্তা এসেছে। আন্দোলনে জড়ালেই চাকরি থেকে বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা বরখাস্তের শাস্তি দেওয়া যেতে পারে, এমন বিধান যুক্ত করে সরকার সম্প্রতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ থেকে এ অধ্যাদেশ জারি করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন বিভাগের সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী।
নতুন এই বিধান যুক্ত করা হয়েছে সরকারি চাকরি (দ্বিতীয় সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ। এর আওতায়, যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা ইচ্ছাকৃতভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন অথবা অন্য কোনো কর্মকর্তাকে তার দায়িত্ব পালনে বাধা দেন, তবে তাকে অবনমন, বাধ্যতামূলক অবসর কিংবা চাকরিচ্যুতি—এই তিনটির যেকোনো শাস্তি দেওয়া যেতে পারে।
অধ্যাদেশের ধারা ৩৭(ক)-তে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো সরকারি কর্মচারী ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ অমান্য করেন, সরকার নির্দেশিত আদেশ বা পরিপত্র কার্যকর করতে বাধা দেন, বা অন্য কাউকে এসব অমান্য করতে উৎসাহ দেন, তবে তা অসদাচরণ হিসেবে বিবেচিত হবে এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকে শাস্তির আওতায় আনা যাবে।’
আইনজীবীরা বলছেন, যদিও সরাসরি ‘আন্দোলন’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, তবে প্রেক্ষাপট ও বিধানের ভাষায় বোঝা যায়—এটি মূলত সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলন দমনেই লক্ষ্য রেখে তৈরি করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে আরও বলা হয়েছে, কোনো সরকারি কর্মকর্তা সহকর্মীদের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ থেকে বিরত থাকলে কিংবা অন্য কাউকে দায়িত্ব পালনে বাধা দিলে তা সরকারি কাজে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী অসদাচরণ বলে বিবেচিত হবে এবং এর জন্য উপধারা (২) অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া যাবে।
উল্লেখযোগ্যভাবে, শাস্তিমূলক কার্যক্রম শুরু হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্ত কর্মচারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করবেন এবং সাত কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে জানাতে হবে, তিনি ব্যক্তিগতভাবে শুনানিতে অংশ নিতে চান কি না।
অধ্যাদেশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতির আদেশের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করা যাবে না। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত কর্মচারী চূড়ান্ত আদেশের ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে রাষ্ট্রপতির নিকট রিভিউ আবেদন করতে পারবেন, এবং সেই রিভিউয়ের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেবেন।
সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি এই অধ্যাদেশ জারি করেছেন, যেহেতু সংসদ বর্তমানে ভেঙে আছে এবং জরুরি ভিত্তিতে আইন কার্যকর করার প্রয়োজন রয়েছে। অধ্যাদেশটি তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে।
সূত্র: বাসস