ইসরায়েলি হামলায় নিহত ২০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ১০:২৬ এম, ২২ অক্টোবর ২০২৫

ইসরায়েলি সামরিক আগ্রাসনের কারণে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজা ও পশ্চিম তীরে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী। ফিলিস্তিনের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এই হৃদয়বিদারক চিত্র।
তুরস্কভিত্তিক বার্তাসংস্থা আনাদোলু মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, ইসরায়েলি বাহিনীর টানা হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন ১৯ হাজার ৯১০ জন শিক্ষার্থী। পশ্চিম তীরে প্রাণ গেছে আরও ১৪৮ শিক্ষার্থীর। একই সময়ে গাজায় আহত হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৭ জন এবং পশ্চিম তীরে আহতের সংখ্যা ১ হাজার ৪২।
শিক্ষা অবকাঠামোর ওপরও নেমে এসেছে নজিরবিহীন ধ্বংসযজ্ঞ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, গাজায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে ১৭৯টি স্কুল এবং ৬৩টি বিশ্ববিদ্যালয় ভবন। পাশাপাশি, ইসরায়েলি হামলায় আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আরও ১১৮টি সরকারি ও ১০০টি জাতিসংঘ পরিচালিত স্কুল।
পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, গাজা উপত্যকায় ৩০টি স্কুলকে শিক্ষামন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন তালিকা থেকেই বাদ দিতে হয়েছে। কারণ এসব প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে, ফলে আর কখনো পাঠদান চালানো সম্ভব নয়।
শুধু শিক্ষার্থী নয়, শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও রেহাই পাননি। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলায় নিহত হয়েছেন অন্তত ১ হাজার ৩৭ জন শিক্ষক ও শিক্ষা কর্মকর্তা। আহত হয়েছেন আরও ৪ হাজার ৭৪০ জন। গ্রেপ্তার হয়েছেন ২২৮ জনেরও বেশি শিক্ষক ও শিক্ষা প্রশাসনের কর্মী।
পশ্চিম তীরেও ইসরায়েলি অভিযান ক্রমেই বাড়ছে। হেবরন ও তুবাস এলাকায় দুটি স্কুল সম্পূর্ণভাবে গুঁড়িয়ে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন অভিযানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আটটি বিশ্ববিদ্যালয় ভবন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আক্রমণে গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৬৮ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ। আহতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৩০০।
অধিকৃত পশ্চিম তীরেও চিত্র ভিন্ন নয়। সেখানে অন্তত ১ হাজার ৫৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় ১০ হাজার ৩০০ জন এবং ইসরায়েলি বাহিনী আটক করেছে ২০ হাজারেরও বেশি মানুষকে, যাদের মধ্যে রয়েছে ১ হাজার ৬০০ শিশু।
এই দীর্ঘ ও নির্মম আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের শিক্ষা ব্যবস্থা চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
সূত্র: আনাদোলু