লেবাননে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় মার্কিন নাগরিকসহ নিহত ৫
- আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- প্রকাশঃ ০৩:৫৭ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দক্ষিণ লেবাননের বেন্ত জবেইল শহরে চালানো ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় একই পরিবারের চারজন মার্কিন নাগরিকসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। রবিবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে রয়েছে তিন শিশু ও তাদের বাবা। গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিশুদের মা-সহ আরও অন্তত দুজন।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, সোমবার ২২ সেপ্টেম্বর এই হামলার খবর প্রকাশ্যে আসে। রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এনএনএ জানায়, একটি গাড়ি ও একটি মোটরসাইকেলকে লক্ষ্য করে চালানো হয় ড্রোন হামলাটি। পার্লামেন্ট স্পিকার নাবিহ বেরি নিশ্চিত করেন, নিহত শিশুদের নাম সেলিন, হাদি ও আসিল। তারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাদের বাবা নিহত হয়েছেন এবং মা আহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হামলার দায় স্বীকার করেছে। তারা দাবি করেছে, হিজবুল্লাহর এক সদস্যকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল। তবে বেসামরিক লোকজনের মৃত্যুর কথাও স্বীকার করেছে তারা।
ইসরায়েল প্রায়ই দক্ষিণ লেবাননের হিজবুল্লাহ নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে হামলা চালিয়ে আসছে। তেলআবিবের দাবি, ইরান সমর্থিত এই গোষ্ঠী যেন নতুন করে সামরিক সক্ষমতা অর্জন করতে না পারে, সে জন্যই তারা এ ধরনের অভিযান চালায়। গত যুদ্ধে সংগঠনটির বহু শীর্ষ নেতা নিহত হয়, যাদের মধ্যে দীর্ঘদিনের প্রধান হাসান নাসরাল্লাহও রয়েছেন।
সাম্প্রতিক এই হামলার কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন লেবাননের শীর্ষ নেতারা। পার্লামেন্ট স্পিকার নাবিহ বেরি প্রশ্ন তুলেছেন, “লেবাননের শিশুরাই কি ইসরায়েলের জন্য অস্তিত্ব সংকট তৈরি করছে? নাকি বিনা জবাবদিহিতায় বেসামরিক মানুষ হত্যা করাই আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য আসল হুমকি?”
প্রধানমন্ত্রী নওয়াফ সালাম এই হামলাকে বর্ণনা করেছেন “নতুন হত্যাযজ্ঞ” হিসেবে। তিনি বলেন, “এটি নৃশংস অপরাধ, দক্ষিণে নিজ গ্রামে ফিরে আসা মানুষদের ভয় দেখানোর উদ্দেশ্যে এই হামলা চালানো হয়েছে।” তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানোর জন্য।
এদিকে লেবাননের শ্রমমন্ত্রী মোহাম্মদ হায়দার অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে দক্ষিণাঞ্চলে ফিরে আসা বেসামরিক মানুষদের লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে। তার ভাষায়, “এই পরিকল্পনা সফল হবে না, কারণ দক্ষিণের মানুষের ইচ্ছাশক্তি অপরাধীর শক্তির চেয়ে বেশি শক্তিশালী।”
উল্লেখ্য, হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবসহ লেবাননের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন রাজনৈতিক গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে চাপ সৃষ্টি করে আসছে। চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে লেবাননের সেনাবাহিনী সরকারের কাছে হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার একটি পরিকল্পনাও উপস্থাপন করেছে।
তবে হিজবুল্লাহ পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, ইসরায়েলের অব্যাহত আগ্রাসন ও দক্ষিণ লেবাননের কিছু অংশে তাদের দখল থাকা পর্যন্ত তারা অস্ত্র সমর্পণ করবে না।